অ্যাডভোকেট মেহবুব হাসান ফারুকী মুন্নার মহান বিজয় দিবসে শুভেচ্ছা বাণী

সিদ্ধিরগঞ্জ সংবাদদাতা, সান নারায়ণগঞ্জ:

বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী ও মহান বিজয় দিবস-২০২২ উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন অ্যাডভোকেট মেহবুব হাসান ফারুকী মুন্না। 

বাণীতে মেহবুব হাসান ফারুকী মুন্না (এপিপি) বলেন, ‘১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস, বাঙালি জাতির ইতিহাসে এক অনন্য গৌরবময় দিন। বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপনের এই শুভক্ষণে আমি মুক্তিযুদ্ধ পরিবারের সন্তান হিসেবে নারায়ণগঞ্জসহ বাংলাদেশের সর্বস্তরের মানুষ কে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।

বাণীতে অ্যাডভোকেট মেহবুব হাসান ফারুকী মুন্না আরো বলেন, ডিসেম্বরের এই বিজয়ের মাসে আমরা আমাদের গৌরবের স্বাধীনতার সূবর্ণজয়ন্তী ও বিজয়ের সূবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করি। বিজয়ের সূবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের এই বিশেষ সময়ে আমি গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি, স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের সকল শহীদদের। আরো গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি জাতীয় চার নেতা শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ, শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম, শহীদ ক্যাপ্টেন এম. মনসুর আলী ও শহীদ এ.এইচ.এম কামারুজ্জামান ও মহান মুক্তিযুদ্ধের সকল শহীদদের। 

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। শৈশব থেকেই তিনি অত্যন্ত মানবদরদী ও অধিকার আদায়ে আপোসহীন ছিলেন। স্কুলজীবন থেকেই তাঁর মধ্যে নেতৃত্বের গুণাবলি পরিলক্ষিত হয়। 

১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ১৯৫৮ সালের সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ৬ দফা, ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান, ১৯৭০ সালের নির্বাচনসহ বাঙালির মুক্তি ও অধিকার আদায়ের প্রতিটি গণতান্ত্রিক ও স্বাধিকার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন তিনি। তিনি চাইলে পারতেন রাজনৈতিক বহু ফায়দা হাসিল করে নিজের স্বার্থসিদ্ধি আদায় করতে। 

বাঙালির অধিকারের প্রশ্নে তিনি কখনো শাসকগোষ্ঠীর সাথে আপোস করেননি। ন্যায়ের পথে থেকে বাঙালি জাতির ন্যায্য অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে আমরণ সংগ্রাম করে গেছেন। এ জন্য তাঁকে বহুবার কারাবরণ করতে হয়েছে।

২৬ মার্চ ১৯৭১ স্বাধীনতার ঘোষণা করেন বঙ্গবন্ধু।৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে জনসমুদ্রের সামনে যে ভাষণ প্রদান করেন তা মূলত বাঙালির মুক্তির সনদ। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দীর্ঘ নয়মাস সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ১৬ ডিসেম্বর অর্জিত হয় চুড়ান্ত বিজয়। দেশ স্বাধীনের পর বঙ্গবন্ধু তাঁর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে কাজ শুরু করেন।

কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট দেশের স্বাধীনতা বিরোধী ষড়যন্ত্রকারীদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদে ঘাতকচক্রের বিপথগামী সেনা সদস্যদের হাতে ধানমন্ডির নিজ বাসভবনে বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শহীদ হন। একই সাথে শহীদ হন বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব, পুত্র শেখ কামাল, শেখ জামাল, শিশুপুত্র শেখ রাসেলসহ আরো অনেকে। এ নৃশংস হত্যাকানড পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। 

এরপর ৩রা নভেম্বর বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহযোগী শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ, শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম, শহীদ ক্যাপ্টেন এম. মনসুর আলী ও শহীদ এ.এইচ.এম কামারুজ্জামানকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নির্মমভাবে হত্যা করে ঘাতকেরা। হত্যাকান্ডের মাধ্যমে ঘাতকরা বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। স্বাধীনতা বিরোধী জাতীয় শত্রু ও ঘাতকরা রক্তে অর্জিত বাঙালির রাষ্ট্রীয় কাঠামোকে ধ্বংসের হীন উদ্দেশ্যেই দেশপ্রেমিকদের হত্যা করেছিল। 

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সেই সোনার বাংলা গড়তে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। আমি অ্যাডভোকেট মুন্না দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি প্রধানমন্ত্রী যে গতিতে উন্নয়ন অব্যাহত রেখেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী, দৃঢ়চেতা ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে ইতোমধ্যে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হয়েছে। 

ঐতিহাসিক বিজয় দিবসে আমি বঙ্গবন্ধু স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানাই। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা বাস্তবায়নে আমাদের নতুন প্রজন্মকে দেশপ্রেম, সততা ও নিষ্ঠাবোধ জাগ্রত করার মাধ্যমে তাদের প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। তাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস এবং বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চারনেতা সর্ম্পকে জানাতে হবে।

বিজয় দিবসে আমি অ্যাডভোকেট মেহবুব হাসান ফারুকী মুন্না, গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ সকল শহিদদের এবং সেই সাথে তাঁদের রুহের মাগফিরাত কামনা করছি। সবাইকে বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা।