জেলা বিএনপির কমিটিসহ যেসব অঙ্গ সংগঠনগুলোতে ভেজাল!

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে নারায়ণগঞ্জের রাজনৈতিক মাঠ চাঙ্গা করে তুলেছে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপি। জেলা ও মহানগর বিএনপি শক্ত অবস্থানে পৌছালেও জেলা ও মহানগর বিএনপির বেশকটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ সহযোগী সংগটনগুলোর মাঝে রয়েছে ভেজাল। কমিটির নেতৃত্ব ও কর্তৃত্ব নিয়ে শীর্ষ পদে থাকা নেতাদের মাঝে চরম বিভক্তি। তবে অঙ্গ সহযোগী সংগঠনগুলোর শীর্ষ নেতাদের মাঝে বিরোধ বিভক্তি থাকলেও জেলা ও মহানগর বিএনপির মুলদলের কর্মসূচিগুলোতে তারা ঠিকিই নিজ নিজ সংগঠনের ব্যানারে অংশগ্রহণ করছেন। প্রায় প্রতিটা অঙ্গ সংগঠনেরা নেতারা একাধিক ব্যানারে মুলদলের কর্মসূচিতে যোগদান করছেন। এক্ষেত্রে সংগঠনের শৃঙ্খলা ভঙ্গ হলেও মুলদলের কর্মসূচি বাস্তবায়নে নেতারা কার্পণ্য করছেন না। তবে অঙ্গ সহযোগী সংগঠনগুলোর নতুন কমিটি গঠন জরুরী হয়ে পড়েছে বলে শীর্ষ নেতারা মনে করছেন।

কারন হিসেবে নেতাকর্মীরা বলছেন, আহ্বায়ক গোলাম ফারুক খোকন ও সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনির নেতৃত্বে আপাতত জেলা যুবদল রাজপথে বেশ চাঙ্গা অবস্থান দেখিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু সভাপতি আনোয়ার সাদাত সায়েম ও সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব রহমানের নেতৃত্বে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যাতাবস্থা। দীর্ঘদিন যাবত তারা দুজন পৃথকভাবে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের ব্যানার ব্যবহার করছেন। ১০ অক্টোবর জেলা বিএনপির কর্মসূচিতে মাহাবুবকে দেখা গেলেও সায়েমকে দেখাই যায়নি। একই দশা মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটিতেও। সভাপতি আবুল কাউসার আশা যখণ মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক হোন তখন থেকে স্বেচ্ছাসেবক দলের হাল ছেড়ে দেন। এরি মাঝে সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত ইসলাম রানাকে বাদ দিয়ে কেন্দ্রীয় নেতারা ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক পদে জিয়াউর রহমান জিয়াকে বসিয়েছেন।

মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মমতাজ উদ্দীন মন্তু ও সদস্য সচিব মনিরুল ইসলাম সজলের নেতৃত্বে প্রায় প্রতিটি কর্মসূচিতে শোডাউন করে রাজপথে বেশ ভুমিকা রেখে যাচ্ছে মহানগর যুবদল। তবে মহানগর যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সাগর প্রধান ও অপর যুগ্ম আহ্বায়ক সাহেদ আহমেদকে মাঝেসাঝে পৃথকভাবে দলীয় কর্মসূচিতে পালনেও দেখা যায়। মহানগর ছাত্রদলের সভাপতির পদে বহাল থাকায় সাহেদ আবার কখনো কখনো মহানগর ছাত্রদলের ব্যানারেও কর্মসূচি পালন করছেন। মহানগর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মমিনুর রহমান বাবুর ভুমিকা দায়সারা। কারন অনেকেই ধারণা করছেন মহানগর ছাত্রদলের কমিটি যেকোনো সময় ভেঙ্গে দেয়া হবে। এতে নেতৃত্বে আসতে যাচ্ছেন রাকিবুর রহমান সাগর। যে কারনে কেন্দ্রীয় ও নারায়ণগঞ্জের কর্মসূচিগুলোতে মহানগর ছাত্রদলের ব্যানারে সাগরকেই বেশি সরব দেখা যাচ্ছে।

নারায়ণগঞ্জ জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি মন্টু মেম্বার ও সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান। দীর্ঘদিন তাদেরকে একসাথে সংগঠনটির ব্যানারে কর্মসূচি পালনে দেখা যাচ্ছেনা। নিজ এলাকা ফতুল্লার নেতাকর্মীদের নিয়ে মন্টু মেম্বার দলীয় কর্মসূচিতে যোগদান করছেন এবং মজিবুর রহমান তার নিজ এলাকা সোনারগাঁয়ের নেতাকর্মীদের নিয়ে দলীয় কর্মসূচিতে যোগদান করছেন। অথচ তারা জেলা শ্রমিকদলের সভাপতি ও সেক্রেটারি। সান নারায়ণগঞ্জকে অনেকে জানান এদিকে ১৩ সেপ্টেম্বর মহানগর বিএনপির কমিটি গঠনের পর মহানগর শ্রমিকদলের আহ্বায়ক এসএম আসলাম ও সদস্য সচিব ফারুক হোসেন পৃথক হয়ে গেছেন। মহানগর বিএনপির কমিটির নেতৃত্বে কর্মসূচি পালন করছেন আসলাম। কিন্তু মহানগর বিএনপির কমিটিতে সদস্য পদ পেয়ে উল্টো বিদ্রোহ করে শ্রমিকদলকে বেকায়দায় ফেলেছেন ফারুক।

নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের পরপরেই আলোচনায় নতুন কমিটি হতে যাচ্ছে। পূর্ণাঙ্গ কমিটি হওয়ার পর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আরিফুল ইসলাম মানিকের হদিস নেই রাজনীতিতে। মাঝেসাঝে সাধারণ সম্পাদক খায়রুল ইসলাম সজীবকে জেলা ছাত্রদলের ব্যানারে মিছিল করতে দেখা যায়। কখনো কখনো মনে হচ্ছে সজীব নিজেও জেলা ছাত্রদলকে সুলতান আহমেদ ও মাসুদুর রহমানের হাতে তুলে দিতে পারলে বেঁচে যান। সাগর সিদ্দিকী, সুলতান মাহামুদ, মাসুদুর রহমান, নাহিদ হাসান ভুঁইয়া সহ আরো বেশকজন নেতা জেলা ছাত্রদলের ব্যানারে কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছেন।

এমন পরিস্থিতিতে সবচেয়ে মহামারি ভেজাল হিসেবে দেখা দিয়েছে জেলা বিএনপিতে। গত ১৬ জানুয়ারি সিটি কর্পোেরেশন নির্বাচনে অংশগ্রহনের দায়ে তৎকালীন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক তৈমূর আলমকে দল থেকে স্থায়ীভাবে বহিস্কার করা হয়। এরি ফলে আৎকা জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক হোন মনিরুল ইসলাম রবি। সিটি নির্বাচনে তৈমূরের পক্ষে তিনি কাজ করলেও রহস্যজনকভাবে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হোন রবি। এবার জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক হয়ে তারাবো পৌর বিএনপির আহ্বায়ক নাসির উদ্দীন। রবি কারাগারে থাকাকালেই নাসির উদ্দী ও সদস্য সচিব মামুন মাহামুদ জেলার ৫টি থানা সহ বেশকটি পৌর বিএনপির কমিটির অনুমোদন দেন। নাসির উদ্দীন জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক হয়ে তার পৌর বিএনপির পদ নিজেই ঠিক রাখেন। জেল থেকে বের হয়ে রবির হাতে এবার জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক পদটি। তিন দফা জেলা বিএনপির কমিটিতে একই পদে বহাল রয়েছেন মামুন মাহামুদ। আহ্বায়কেরা ব্যর্থ হলেও মামুনের উপর ব্যর্থতার দায় পড়ছেনা রহস্যজনক কারনে। নারায়ণগঞ্জের নেতারা এখন অপেক্ষায় জেলা বিএনপির শক্তিশালা কমিটির।