না’গঞ্জে রেলওয়ের শত কোটি টাকার সম্পত্তি হরিলুট, নাগরিক কমিটির মানববন্ধন

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর নারায়ণগঞ্জ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শত কোটি টাকার কয়েক বিঘা জমি তথাকথিত কল্যাণ ট্রাস্টের নামে ৪ জনের একটি সিন্ডিকেট দখল করে বহুতল ভবন নির্মাণ করে যাচ্ছে। কয়েক মাস যাবত এই সম্পত্তির সঠিক ব্যবহারের দাবিতে নারায়ণগঞ্জের সচেতন নাগরিক সমাজ আন্দোলন করে আসলেও কর্তৃপক্ষ চুপসে রয়েছেন। এদিকে পুরোদমে ভবন নির্মাণ কাজ করে যাচ্ছে চক্রটি। তারই ধারাবাহিকতায় এবারো নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটি ২৭ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার ওই সম্পত্তির সামনে মানববন্ধন করেছে।

নারায়ণগঞ্জে রেলওয়ের ভূমি আত্মসাতের প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকালে মহানগরীর ১নং রেলগেটের সামনে মানববন্ধন করেছে নাগরিক কমিটি। সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলামের সঞ্চালনায় সভাপতি অ্যাডভোকেট এবি সিদ্দিকের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন- সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রফিউর রাব্বী, সহ-সভাপতি সানোয়ার তালুকদার, জেলা বাসদের আহবায়ক নিখিল দাস, নাগরিক কমিটির সদস্য হাফিজুল ইসলাম, আওয়ামীলীগ নেত্রী মরিয়ম কল্পনা, মুজিবুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা নূর হোসেন মোল্লা, শ্রমিক নেতা তাজুল ইসলাম, উক্ত এলাকার মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক শান্তিরঞ্জন দে প্রমূখ।

অনুষ্ঠানে রফিউর রাব্বী তার বক্তব্যে বলেন, রেলওয়ের কিছু অসাধু কর্মকর্তা দীর্ঘদিন ধরে নারায়ণগঞ্জের কতিপয় ভূমিদস্যদের সাথে আতাত করে রেলওয়ের ভূমি আত্মসাতের প্রক্রিয়া চালিয়ে আসছে। ১নং রেলগেটের সাথে ৪৭ হাজার দুইশ বর্গফুট ভূমিটি দশবছর আগে রেলওয়ে কল্যাণ ট্রাস্ট সংগঠনের নামে বরাদ্দ নিয়ে মার্কেট তৈরী করে আত্মসাতের উদ্যোগ নিয়েছিল। তখন এর বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জে নাগরিক আন্দোলন শুরু হলে, সে আন্দোলন দমাতে টিআরসেল, গুলি সহ বিভিন্ন ঘটনা এখানে ঘটেছে। আন্দোলন দমাতে ব্যর্থ হয়ে এক সময় রেল কর্তৃপক্ষ মার্কেট নির্মাণের প্রকল্প বন্ধের ঘোষণা দিয়েছিল। কিন্তু আজকে আবার রেল কর্তৃপক্ষ তথাকথিত সেই কল্যাণ ট্রাস্টের নামে মার্কেট তৈরী করে সে জায়গা আত্মসাতের উদ্যোগ নিয়েছে।

তিনি আরো বলেন, রাজউক দেশের বিভিন্ন জায়গায় জরিপ করে টেকসই উন্নয়নের জন্য নদীবন্দর সংলগ্ন ২১টি জেলায় নৌ-বন্দর, রেল-স্টেশন ও বাস-টার্মিনাল একই জায়গায় তৈরীর জন্য ডিটেল এরিয়া প্ল্যান (ড্যাপ) প্রনয়ণ করেছে। সে পরিকল্পনায় নারায়ণগঞ্জের এই নৌ-বন্দর, রেল-স্টেশনটি ও বাস-টার্মিনালটি রয়েছে। ড্যাপের এ পরিকল্পনা সরকারের স্টেটিজিক ট্যান্সপোর্ট প্ল্যান (এসটিপি) দ্বারাও অনুমোদিত। অথচ সরকারেরই একটি সংস্থা রেলওয়ে- তাদের কিছু অসাধু কর্মকর্তা স্থানীয় ভূমিদস্যুদের সাথে নিয়ে এই জমিতে মার্কেট তৈরী করে আত্মসাতের পায়তারা করছে। তিনি দ্রুত এ তৎপরতা বন্ধ করে এর সাথে জড়িত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা গ্রহণের দাবি জানান। তিনি বলেন, দ্রæত এ তৎপরতা বন্ধ না হলে উদ্ভুত পরিস্থিতির জন্য সরকারকেই দায়ি থাকতে হবে।

নাগরিক কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট এবি সিদ্দিক বলেন, নিয়ম অনুযায়ী অধিগ্রহণকৃত ভূমি সে প্রয়োজনে তা ব্যবহার না হলে তা যার কাছ থেকে অধিগ্রহণ করা হয়েছে তাকে অথবা স্থানীয় পৌরসভা বা সিটি কর্পোরেশনের কাছে স্থানীয় প্রয়োজনে ব্যবহারের জন্য ফেরত দিবে; কিন্তু কোন ভাবেই তা বিক্রয় করা যাবে না। আমরা বরাবর বলে এসেছি নারায়ণগঞ্জে অবস্থিত রেলওয়ে সহ সকল সরকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর ভূমি নারায়ণগঞ্জের মানুষেরই ভূমি। এ সব নারায়ণগঞ্জের মানুষের কাছ থেকে বিভিন্ন সময় অধিগ্রহণ করা হয়েছে। জায়গার অভাবে যখন এখানে উন্নত বিশ্ববিদ্যালয, মেডিকেল কলেজ সহ অনেক কিছুই করা যাচ্ছে না, তখন গোপনে এভাবে ভূমি বিক্রয়, আত্মসাৎ বা লুটপাট চলতে পারে না, চলতে দেয়া যাবে না।