শক্তি সঞ্চারে পিছিয়ে আওয়ামীলীগ: মাঠ গুছাতে ব্যস্ত জাতীয় পাটি ও বিএনপি!

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ জেলার সবচেয়ে বেশি আলোচিত রাজনৈতিক এলাকা এখন সোনারগাঁও উপজেলা। পুরো উপজেলা নিয়ে গঠিত নারায়ণগঞ্জ-৩ সংসদীয় আসন। এখানে রয়েছে দশটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা। রাজনৈতিকভাবে আলোচিত এই আসনে ২০১৪ সাল থেকে আওয়ামীলীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের শরীক দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা। দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে আগামী ২০২৪ সালের শুরুর দিকেই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এই নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশের প্রধান তিনটি রাজনৈতিক দল আওয়ামীলীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টি ব্যস্থ রয়েছে দল গুছানোর কাজে। তিনটি দলই সমানতালে মুলদল ও এর অঙ্গ সহযোগী সংগঠনগুলোও সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে।

চলতি মাসের ৩ সেপ্টেম্বর সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। দীর্ঘ ২৩ বছর পর সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতি পদে সামসুল ইসলাম ভুঁইয়া, সাধারণ সম্পাদক পদে আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত ও সহ-সভাপতি পদে নির্বাচিত হোন ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুম। এর মধ্যে সামসুল ইসলাম ভুঁইয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, কায়সার হাসনাত আওয়ামীলীগের সাবেক সংসদ সদস্য এবং ইঞ্জিনিয়ার মাসুম পিরোজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। এর আগের আহ্বায়ক কমিটিতেও সামসুল ইসলাম আহ্বায়ক, কায়সার সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ও যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন মাসুম।

আওয়ামীলীগের মুল দল গঠনে একমাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি তৈরির চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করলেও সেটা আর হয়ে ওঠছেনা। তবে আওয়ামীলীগ ও যুবলীগের কমিটি ছাড়া আওয়ামীলীগের অঙ্গ সহযোগী সংগঠনগুলোর নাজুক অবস্থা। উপজেলা যুবলীগের কমিটি থাকলেও কয়েক বছর আগে স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমিটি হয় এবং সম্প্রতি সেটা বিলুপ্ত করা হয়। যে কোনো সময় জেলা কমিটি হলেই সোনারগাঁওয়েও হবে স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমিটি। উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে অনেক আগেই। জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি এহসানুল হাসান নিপুর আত্মীয় হাসান রাশেদ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতির পদে বহাল থাকায় কমিটি গঠন প্রক্রিয়া আটকে রয়েছে। তবে কমিটি গঠন নিয়ে ছাত্রলীগ নেতাদের দৌড়ঝাপ চলছে জোরেসোরে। উপজেলা শ্রমিক লীগের কমিটি গঠন নিয়ে রয়েছে নানা জটিলতা। শ্রমিকলীগের পাল্টাপাল্টি কমিটি গঠন প্রক্রিয়ার মাঝেই বিরোধ নিয়ে একতরফা কমিটি নিয়ে চলছে ক্ষোভ। কৃষকলীগ, মৎস্যজীবীলীগ এমনকি মহিলা লীগের অস্তিত্বও দেখা যাচ্ছে না। যদিও উপজেলায় যুব মহিলা লীগের কমিটি গঠনে বেশ তাদের চাঙ্গা দেখা যাচ্ছে নানা কর্মসূচিতে।

আওয়ামীলীগের যখন এমন নাজুক অবস্থা তখন নিজেদের সংগঠনগুলো গুছাতে ব্যস্ত রয়েছে জাতীয় পার্টি ও বিএনপি। উপজেলা জাতীয় পার্টির মুল কমিটি ছাড়াও উপজেলায় জাতীয় যুব সংহতি, স্বেচ্ছাসেবক পার্টি, ছাত্র সমাজ, মহিলা পার্টির কমিটি রয়েছে। সম্প্রতি যুব সংহতি ও মহিলা পার্টির নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে। পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে স্বেচ্ছোসেব্ক পার্টি ও ছাত্র সমাজের কমিটিতেও। কমিটি গঠনের মাধ্যম জাতীয় পার্টি ও এর অঙ্গ সহযোগী সংগঠনগুলো প্রতিটি ইউনিয়ন ওয়ার্ডে ছুটে যাচ্ছে জাতীয় পার্টি। এখানে স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঢাকা বিভাগীয় অতিরিক্ত মহাসচিব লিয়াক হোসেন খোকার দিকনির্দেশনায় উপজেলা জাতীয় পার্টির নেতৃত্বে দিচ্ছেন সভাপতি পদে আব্দুর রউফ চেয়ারম্যান ও সাধারণ সম্পাদক পদে আবু নাঈম ইকবাল।

অন্যদিকে থেমে নেই ১৫ বছর ধরে সরকারের বাহিরে থাকা দল বিএনপিও। সম্প্রতি উপজেলা বিএনপির সম্মেলনে সভাপতি নির্বাচিত হোন আজহারুল ইসলাম মান্নান ও সাধারণ সম্পাদক হোন মোশারফ হোসেন। বিএনপির মুলদল ছাড়াও এখানে উপজেলা যুবদল, ছাত্রদল, শ্রমিকদল, স্বেচ্ছোসেবক দল, মহিলা দল, কৃষকদল এমনকি জাসাসের কমিটিও রয়েছে বিএনপির। বিএনপি এখানে দল গুছানোর পাশাপাশি রাজপথে আন্দোলন সংগ্রামেও সক্রিয় ভুমিকা পালন করে আসছে। ফলে শক্তি সঞ্চারে বেশ সরব এখানকার বিএনপি। অগণিত মামলায় আসামি হয়ে নিয়মিত কোর্টে হাজিরা দেয়ার পাশাপাশি রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম ও কমিটি গঠনে বেশ এগিয়ে থাকছে বিএনপি।