টার্গেট জাতীয় নির্বাচন: সোনারগাঁয়ে অঙ্গ সহযোগী সংগঠনগুলোও গোছাচ্ছে জাতীয় পার্টি

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

আগামী ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে কিংবা ২০২৪ সালের শুরুর দিকে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এই নির্বাচনকে সামনে রেখে সোনারগাঁয়ে উপজেলা জাতীয় পার্টি ও এর অঙ্গ সহযোগী সংগঠনগুলোর কমিটি গঠনের মাধ্যমে শক্ত অবস্থান তৈরি করে যাচ্ছে। সম্প্রতি উপজেলা জাতীয় যুব সংহতি ও জাতীয় মহিলা পার্টির কমিটি গঠন করা হয়েছে। যুব সংহতির কমিটি গঠনের পর উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়ন থেকে শুরু করে ওয়ার্ড পর্যায়ে গিয়ে কর্মীসভার মাধ্যমে জাতীয় পার্টিকে শক্তিশালী করার কাজ করছেন নেতারা।

স্থানীয়রা জানান, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য, ঢাকা বিভাগীয় অতিরিক্ত যুগ্ম মহাসচিব ও নারায়ণগঞ্জ-৩(সোনারগাঁও) আসনের দুইবারের সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকার সার্বিক দিকনির্দেশনায় নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলায় জাতীয় পার্টি জনগণের দোরগোড়ায় পৌছে গেছে। একই সঙ্গে সোনারগাঁয়ে জাতীয় পার্টির সাংগঠনিকভাবেও শক্ত অবস্থান তৈরি হয়েছে। যার ফলশ্রুতিতে নারায়ণগঞ্জ জেলা জাতীয় পার্টির নেতৃত্বে ভাগ বসিয়েছে সোনারগাঁও উপজেলা জাতীয় পার্টির নেতারা। যেখানে জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন আবু নাঈম ইকবাল। তিনি সোনারগাঁও উপজেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক।

এদিকে স্থানীয় জাতীয় পার্টি নেতাকর্মীদের দাবি, পূর্বের যে কোনো সময়ের চেয়ে বর্তমানে সোনারগাঁয়ে শক্তিশালী রাজনৈতিক দলের পরিণত হয়েছে জাতীয় পার্টি, কারন যেখানে বিএনপি ও আওয়ামীলীগের নিজেদের মধ্যে কোন্দল গ্রুপিং বিভেদ রয়েছে, সেখানে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা রয়েছে একটি প্লাটফর্মে ঐক্যবদ্ধ। একইসঙ্গে বিএনপির অঙ্গ সহযোগী সংগঠন এবং আওয়ামীলীগের অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের মাঝেও যখন বিরোধ বিভক্তি গ্রুপিং রয়েছে, সেখানে জাতীয় পার্টির অঙ্গ সহযোগী সংগঠনগুলো রয়েছে একক নিয়ন্ত্রণ ও নেতৃত্বের মাঝে।

যুবলীগ ও যুবদলকে টক্কর দিতে শক্তিশালী সংগঠনে পরিণত করতে ইতিমধ্যে উপজেলা যুব সংহতির কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। কমিটিতে নেতৃত্বে আসা নেতাদের দাবি সোনারগাঁও উপজেলা যুব সংহতির নেতাকর্মীরা কখনো টেন্ডারবাজি চাঁদাবাজির হাটঘাট মাঠদখল পরিবহন সেক্টর দখল, এইসব ধরনের কোনো অপকর্মে জড়িত হয় না। উপজেলা যুব সংহতির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মাদক বিক্রয়ের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ তো দূরের কথা, কারো বিরুদ্ধে মাদক সেবনের অভিযোগ থাকলেও তাদের ঠাঁই হবে না যুব সংহতির কমিটিতে।

এমন একটি চ্যালেঞ্জ নিয়ে মাঠে নেমেছেন সোনারগাঁও উপজেলা যুব সংহতির আহ্বায়ক কাজী নাজমুল ইসলাম লিটু ও সদস্য সচিব সিকান্দার আলী মাস্টার। নতুন কমিটির নেতৃবৃন্দের মাঝে রয়েছেন বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ও বর্তমান বেশকজন মেম্বার। একই সঙ্গে পরিচ্ছন্ন এবং যারা ২০১৪ সাল থেকে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকার নেতৃত্বে সোনারগাঁয়ের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে সহযোগিতা করে নিজেদেরকে বিলিয়ে দিয়ে যাচ্ছেন তাদেরকেই কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

গত ২০ আগস্ট বর্ধিত সভার মাধ্যমে কাজী নাজমুল ইসলাম লিটুকে আহ্বায়ক ও সিকান্দার আলী মাস্টারকে সদস্য সচিব করে ৬২ সদস্য বিশিষ্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলা জাতীয় যুব সংহতির আহবায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। এখানে দীর্ঘদিন যাবত ফজলুল হক মাস্টারের নেতৃত্বে কাজ করে আসছে উপজেলা জাতীয় ছাত্র সমাজ।  এছাড়াও নারায়ণগঞ্জ জেলা জাতীয় স্বেচ্ছাসেবক পার্টির সাধারণ সম্পাদক জাবেদ রায়হান জয়ের নেতৃত্বে জেলা জাতীয় স্বেচ্ছাসেবক পার্টিসহ সোনারগাঁও উপজেলা জাতীয় স্বেচ্ছাসেবক পার্টিকেও শক্তিশালী করার কাজ করে যাচ্ছেন।

অন্যদিকে গত ৮ সেপ্টেম্বর সোনারগাঁ উপজেলা জাতীয় মহিলা পার্টির আহবায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এতে সোনারগাঁও পৌরসভার সাবেক প্যানেল মেয়র জাহেদা আকতার মনিকে আহ্বায়ক ও বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন সোনারগা শাখার চেয়ারম্যান জাহানারা আক্তারকে সদস্য সচিব করে ৭৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটিতে যুগ্ম আহবায়ক হলেন পারভীন কাউন্সিলর, রুনা বেগম মেম্বার, অধ্যক্ষ সানোয়ারা বেগম মেম্বার, নারগিছ আক্তার মেম্বার, সুরাইয়া বেগম মেম্বার, শামীমা আক্তার বেবী, তাহমিনা আক্তার লিপি, মনিরা বেগম, নিলুফা ইয়াসমিন ময়না, হাসিনা বেগম, জোহরা বেগম, শাহিদা আক্তার টুম্পা মেম্বার, শাহিনা মেম্বার, ফরিদা ইয়াসমিন মেম্বার, মোর্শেদা মেম্বার, সালমা মেম্বার, পিয়ারা মেম্বার, জমিলা মেম্বার, পিয়ারা মেম্বার, উম্মেহানি মেম্বার, শিল্পী বেগম মেম্বার, নাসরিন আক্তার পান্না, মিনারা বেগম মেম্বার, জাহেদা, নাসিমা, মরিয়ম মেম্বার, শারমিন মেম্বার, মনিকা মেম্বার ও যুগ্ম সদস্য সচিব হলেন মোহাম্মদ নাছিমা আক্তার পলি মেম্বার।

এর আগে গত ৩১ জুলাই নারায়ণগঞ্জ জেলা জাতীয় পার্টির পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দেয়া হয়। কমিটিতে বন্দর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সানাউল্লাহ সানুকে সভাপতি ও আবু নাঈম ইকবালকে সাধারণ সম্পাদক করে ২৫১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির অনুমোদন দেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের ও মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু। নেতারা সান নারায়ণগঞ্জকে জানান যে, এই কমিটিতে শুধু আবু নাঈম ইকবালই নয় পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ বেশকটি পদ সহ সদস্য পদেও সোনারগাঁও উপজেলা জাতীয় পার্টি থেকে বিপুল সংখ্যক নেতাদের নির্বাচিত করা হয়েছে। সোনারগাঁয়ের নেতারা এবার জেলা পর্যায়ে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

সোনারগাঁও উপজেলা জাতীয় পার্টির রাজনীতি করে জেলা জাতীয় পার্টির পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে সহ-সভাপতি পদে নির্বাচিত হয়েছেন আব্দুর রউফ চেয়ারম্যান, এমএ জামান, সাবেক চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম ভুঁইয়া, সাবেক চেয়ারম্যান দেওয়ান উদ্দীন চুন্নু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়েছেন আনিসুর রহমান বাবু, জাবেদ রায়হান জয়, আবু তালেব চৌধুরী জিসান, সহকারী সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়েছেন আবুল হাসেম, আশরাফুল মাকসুদ ভুঁইয়া ও শফিকুল ইসলাম শফি।

এছাড়াও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়েছেন আবুল হোসেন ও সাবেক মেম্বার আব্দুল বাছেদ, যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক পদে সাবেক প্যানেল চেয়ারম্যান আলমগীর কবির, প্রচার সম্পাদক পদে ফজলুল হক মাস্টার, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক পদে হাজী শ্যামল সিকদার, সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্পাদক পদে হাজী মোক্তার হোসেন, যুগ্ম সাহিত্য সংস্কৃতি ও ক্রীড়া সম্পাদক পদে আলী জাহান মেম্বার, শিল্প ও বানিজ্য বিষয়ক সম্পাদক পদে হাজী মনির হোসেন তোতা, যুগ্ম মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা জাহানারা আক্তার, যুগ্ম শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক মোস্তফা কামাল, তথ্য, যোগাযোগ ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক কাজী নাজমুল ইসলাম লিটুকে নির্বাচিত করা হয়।

এ ছাড়াও সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা সহ লায়ন তোফাজ্জল হোসেন, সাবেক প্যানেল চেয়ারম্যান নূর হোসেন, আলী আকবর, এরশাদ, লুৎফর রহমান তোতা, মোসলেহ উদ্দীন, জায়েদা আক্তার মনি, ফিরোজ আহমেদ, মুজিবুর রহমান ভুঁইয়া মেম্বার, সাবেক মেম্বার আইয়ুব আলী, সাবেক প্যানেল চেয়ারম্যান দাইয়ান সরকার, শহিদ মিয়া, সাবেক মেম্বার হারুন অর রশিদ, সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান কবির, সেলিম রেজা, মনির হোসেন মেম্বার, মাসুম ভুঁইয়া, মেরাজুল ইসলাম ভুঁইয়া রিপন, সাবেক প্যানেল চেয়ারম্যান মোস্তফা মিয়া, সেলিম মিয়া মেম্বার, মাসুদুর রহমান মাসুম, আসাদুজ্জামান আসাদ, মামুন মিয়া মেম্বার, আব্দুল মান্নান মেম্বার, নজরুল ইসলাম মেম্বার, সাবেক মেম্বার রফিকুল ইসলাম, শাহিন মোল্লা, সাকিব হাসান জয় মেম্বার, সাবেক মেম্বার বকুল মিয়া, সাবেক মেম্বার রুহুল আমিন, ডা. ফয়সাল, সাবেক মেম্বার সুরাইয়া বেগম, রুনা আক্তার মেম্বার, নাসিমা আক্তার মেম্বার, নারগিস মেম্বার, ইলিয়াস, আমান উল্লাহ আমান মেম্বার, হাসান খান মেম্বার, সাবেক মেম্বার তোতা, মুজিবুর রহমান খোকা, ওমর ফারুক টিটুকে সদস্য পদে নির্বাচিত করা হয়।