তৈমূর বহিষ্কার, কাজী মনির নিষ্ক্রিয়: রূপগঞ্জে নেতৃত্বশূণ্য বিএনপি!

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির নেতৃত্ব দিয়েছেন রূপগঞ্জের শীর্ষ নেতারা। বিএনপি থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার হয়েছেন তৈমূর আলম। কাজী মনির রাজনীতি থেকে নিস্ক্রিয়। দিপু ভুঁইয়া রাজনীতিতে থাকলেও রাজনৈতিক কর্মকান্ডে কালেভদ্রে দেখা যায়। ফলে নেতৃত্বশূণ্যতা দেখা দিয়েছে রূপগঞ্জ উপজেলা বিএনপি। বর্তমান কমিটির নেতাদের রাজনৈতিক সক্রিয়তাও তেমন একটা নেই।

অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার ও কাজী মনিরুজ্জামান মনির ২০০৯ সালে জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়ে টানা ৭ বছর দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু রূপগঞ্জ উপজেলার নেতৃত্ব নিয়ে টানাটানি করতে গিয়ে তারা দুজন জেলা বিএনপির নেতৃত্বে ফাটল ধরিয়েছিলেন। মুলত দুজনেই আশাই ছিলো রূপগঞ্জ আসন থেকে জাতীয় নির্বাচন করার। এমন পরিস্থিতিতে এই আসনে উদয় হোন তৎকালীন কেন্দ্রীয় যুবদল নেতা মোস্তাফিজুর রহমান দিপু ভুঁইয়া। ফলে এ আসন নিয়ে ত্রিপক্ষীয় লড়াই হলেও রাজপথের রাজনীতিতে কেবল মাঠে ছিলেন তৈমূর আলম খন্দকার।

জানাগেছে, ২০০৬ সালে নির্বাচনের আয়োজন করলে সেখানে ধানের শীষ প্রতীকে মনোনয়ন পান তৈমূর আলম খন্দকার। কিন্তু পরবর্তীতে নির্বাচন না হলে ২০০৮ সালের নির্বাচনের সময় মনোনয়ন পান কাজী মনির। ওই সময় তৈমূর ছিলেন কারাগারে। ২০১৪ সালের নির্বাচনের লক্ষ্যে তৈমূর ও কাজী মনির বিরোধে জড়িয়ে পড়েন। নানা নাটকীয়তার মাঝে মনোনায়ন লড়াইয়ে থাকেন দিপু ভুইয়াও। পরবর্তীতে সেই নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণই করেনি। যদিও কাজী মনির ও দিপু ভুইয়া শুধুমাত্র মনোনয়ন নিয়ে রাজনীতি করলেও মাঠের রাজনীতি করেছিলেন তৈমূর আলম।

২০১৬ সালে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের পর তৈমূর আলম খন্দকারকে জেলা বিএনপি থেকে সরিয়ে কাজী মনিরকে সভাপতি ও মামুন মাহামুদকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় বিএনপি। তাদের ব্যর্থতার কারনে ২০২১ সালে আবারো তৈমূর আলম খন্দকারকে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও মামুন মাহামুদকে সদস্য সচিব করে জেলা বিএনপির কমিটি গঠন করা হয়। চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে দলের সিদ্ধান্তের বাহিরে গিয়ে নির্বাচন করায় বিএনপি থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কৃত হোন তৈমূর আলম খন্দকার। বর্তমানে জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম রবি ও সদস্য সচিব মামুন মাহামুদ।

তৈমূরের বহিস্কারের পর রুপগঞ্জ বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি দেয় জেলা বিএনপি। মাহাফুজুর রহমান হুমায়ুনকে আহ্বায়ক ও বাছির উদ্দীন বাচ্চুকে সদস্য সচিব করা হয়। কিন্তু তৈমূর কিংবা কাজী মনিরের মত রাজনৈতিক ফিগার হয়ে ওঠতে পারেনি হুমায়ুন ও বাচ্চু। দিপু ভুঁইয়া বিএনপির রাজনীতিতে থাকলেও তিনি রাজপথের কিংবা সক্রিয় রাজনীতিতে বেশ সরব নন। তিনি কেবল নির্বাচন কেন্দ্রীক নির্বাচন রাজনীতি করেন।

তরুণ প্রজন্মের মধ্যে মোশারফ হোসেন, আশরাফুর আলম রিপন, আনোয়ার সাদাত সায়েম, মোহাম্মদ দুলাল, মাহাবুব রহমানের মত নেতারা থানা বিএনপির নেতৃত্ব প্রত্যাশি ছিলেন। কিন্তু তাদেরকে নেতৃত্বে রাখা হয়নি। এর পেছনের কারন হিসেবে অনেকেই জানান- কাজী মনিরের সুবিধার্থেই তার ঘনিষ্ঠ হুমায়ুন ও বাচ্চুকে দিযে কমিটি গঠন করা হয়েছে। নির্বাচন আসলে তারা কাজী মনিরের পক্ষেই থাকবেন। ফলে রুপগঞ্জ থানা বিএনপির কমিটির পেছনে কাজী মনিরের শক্তি। কিন্তু কাগজে কলমে যাদের হাতে নেতৃত্ব তারা তৈমূর কিংবা কাজী মনির হয়ে ওঠতে পারছেন না।