তৈমূরের ভুল সিদ্ধান্তে ক্ষতিগ্রস্থ বিএনপি, হতাশায় তার কর্মীবাহিনী!

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা। সেই তৈমূর আলম খন্দকার তার রাজনৈতিক ভুল সিদ্ধান্তে হয়েছেন দল থেকে স্থায়ীভাবে বহিস্কার। একই সঙ্গে নারায়ণগঞ্জে বিএনপির রাজনীতি হয়েছে চরম ক্ষতিগ্রস্থ। সেই সঙ্গে তৈমূর আলম খন্দকারের বিশাল কর্মীবাহিনীও রয়েছেন হতাশায়। তার ভুল সিদ্ধান্তে তার আপন ছোট ভাই মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ ও ভাগিনা রশিদুর রহমান রশুর রাজনীতিতে পড়েছে বিরাম চিহ্ন। দল থেকে বহিস্কার হয়ে নেতাকর্মীদের বানের জলে ভাসিয়ে ঢাকাস্থ হয়েছেন তৈমূর আলম।

নেতাকর্মীদের মতে, নারায়ণগঞ্জে বিএনপির রাজনীতিতে বেশ আলোচিত নেতা হয়ে ওঠেছিলেন অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার। বিএনপির সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক রেজাউল করিম রাজনীতিতে পিছিয়ে যাওয়ার পর নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির রাজনীতিকে একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণে নেন তৈমূর আলম খন্দকার। ২০০৯ সালের নভেম্বর মাসে জেলা বিএনপির সম্মেলনে তৈমূর আলম খন্দকার সভাপতি ও কাজী মনিরুজ্জামান মনির সাধারণ সম্পাদক হওয়ার মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জে বীরদর্পে জেলা বিএনপির রাজনীতির নিয়ন্ত্রক হোন তৈমূর আলম।

ওই সময় মহানগর না হওয়ায় শহর বিএনপির কমিটির নিয়ন্ত্রকও ছিলেন তৈমূর আলম। কিন্তু কালের বিবর্তনে বিএনপির রাজনীতি থেকেই বহিস্কৃত হয়েছেন এক সময়কার প্রভাবশালী এই নেতা। এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে নারায়ণগঞ্জ জেলায় একজন তৈমূর আলমের মত নেতা হয়ে ওঠার মত কোনো নেতা বিএনপির রাজনীততে রয়েছে কিনা? যেখানে মনিরুল ইসলাম রবির মত নেতা হয়েছেন জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক।

অনেকেই মনে করেন রবির মত শত শত কর্মী রয়েছে তৈমূর আলমের। অধ্যাপক মামুন মাহামুদও তৈমূর আলমের এক সময়কার কর্মী। জেলা যুবদলের কমিটি বিলুপ্ত হওয়ার পর মামুন মাহামুদকে রাজনীতিতে টেনেছেন তৈমূর। তৈমূরের হাতেই সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সদস্য সচিবের পদে অধিষ্ট হোন মামুন মাহামুদ। ফলে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির বর্তমান কমিটি কতটা শক্তিশালী তা অনুমেয়। সান নারায়ণগঞ্জকে নেতাকর্মীরা বলেন, বিএনপির কমিটির বর্তমান নেতাদের মত হাজার হাজার রাজপথের নেতাকর্মী রয়েছেন, যারা তৈমূর, খোরশেদ ও রশুর নেতৃত্বে রাজনীতি করেছেন দীর্ঘকাল যাবত। আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসার পর নারায়ণগঞ্জে বিএনপির রাজপথের রাজনীতির হাল ধরেছিলেন তারাই। কিন্তু নেতার ভুল সিদ্ধান্তে সেইসব রাজপথের নেতাকর্মীরা এখণ চরম হতাশায়।

নেতাকর্মীরা আরো বলছেন, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের গত নির্বাচনে দলের সিদ্ধান্তের বাহিরে গিয়ে মেয়র পদে নির্বাচন করেছিলেন তৈমূর আলম খন্দকার। ওই নির্বাচনে যারা শুরু থেকে তৈমূর আলমের পাশে ছিলেন কিন্তু পরবর্তীতে রহস্যজনক কারনে তাদেরকে দেখা যায়নি। ফলে তৈমূর খন্দকার দল থেকে বহিস্কৃত হলেও অনেকেই গা বাঁচিয়েছেন। তৈমূর আলমকে বহিস্কারের পর নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির কি করুণ দশা বিরাজ করছে সেটা রাজপথের নেতাকর্মীরা অনুধাবন করতে পারছেন।

নেতাকর্মীরা মনে করছেন- তৈমূর আলম খন্দকারের বিকল্প হিসেবে একজন শক্তিশালী নেতার হাতে জেলা বিএনপির নেতৃত্ব ওঠে আসুক। যদিও তৈমূর আলমের বহিস্কারের প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসছেন তার অনুগামী নেতাকর্মীরা। কিন্তু সেটা কেন্দ্রীয় নেতারা কর্ণপাত করছেন না। ফলে তৈমূর আলমের বিকল্প হিসেবে নতুন কাকে দেখা যেতে পারে যিনি জেলা বিএনপির হাল ধরবেন? নাকি তৈমূরের হাতেই ফিরবে বিএনপির নেতৃত্ব? যদিও সেটা হিসেবে কঠিন সমীকরণ। তবে তৈমূরের বিকল্প হিসেবে খোরশেদকে নিয়ে স্বপ্ন দেখছেন তাদের অনুগামী নেতাকর্মীরা।