সান নারায়ণগঞ্জ টুযেন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জে বিএনপির রাজনীতিতে বেশ আলোচিত নেতা হয়ে ওঠেছিলেন অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার। বিএনপির সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক রেজাউল করিম রাজনীতিতে পিছিয়ে যাওয়ার পর নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির রাজনীতিকে একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণে নেন তৈমূর আলম খন্দকার। ২০০৯ সালের নভেম্বর মাসে জেলা বিএনপির সম্মেলনে তৈমূর আলম খন্দকার সভাপতি ও কাজী মনিরুজ্জামান মনির সাধারণ সম্পাদক হওয়ার মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জে বীরদর্পে জেলা বিএনপির রাজনীতির নিয়ন্ত্রক হোন তৈমূর আলম।
ওই সময় মহানগর না হওয়ায় শহর বিএনপির কমিটির নিয়ন্ত্রকও ছিলেন তৈমূর আলম। কিন্তু কালের বিবর্তনে বিএনপির রাজনীতি থেকেই বহিস্কৃত হয়েছেন এক সময়কার প্রভাবশালী এই নেতা। এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে নারায়ণগঞ্জ জেলায় একজন তৈমূর আলমের মত নেতা হয়ে ওঠার মত কোনো নেতা বিএনপির রাজনীততে রয়েছে কিনা? যেখানে মনিরুল ইসলাম রবির নেতা হয়েছেন জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক। কিংবা জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মামুন মাহামুদের কর্মী রিয়াজুল ইসলামের মত কর্মী জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক!
অনেকেই মনে করেন রবি ও রিয়াজুলের মত শত শত কর্মী রয়েছে তৈমূর আলমের। অধ্যাপক মামুন মাহামুদও তৈমূর আলমের এক সময়কার কর্মী। জেলা যুবদলের কমিটি বিলুপ্ত হওয়ার পর মামুন মাহামুদকে রাজনীতিতে টেনেছেন তৈমূর। তৈমূরের হাতেই সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সদস্য সচিবের পদে অধিষ্ট হোন মামুন মাহামুদ। ফলে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির বর্তমান কমিটি কতটা শক্তিশালী তা অনুমেয়। এর মধ্যে জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক ও সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক দুজনই নারায়ণগঞ্জের স্থায়ী বাসিন্দা নন বলেও নেতাকর্মীরা জানান।
নেতাকর্মীরা বলছেন, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের গত নির্বাচনে দলের সিদ্ধান্তের বাহিরে গিয়ে মেয়র পদে নির্বাচন করেছিলেন তৈমূর আলম খন্দকার। ওই নির্বাচনে যারা শুরু থেকে তৈমূর আলমের পাশে ছিলেন কিন্তু পরবর্তীতে রহস্যজনক কারনে তাদেরকে দেখা যায়নি। ফলে তৈমূর খন্দকার দল থেকে বহিস্কৃত হলেও অনেকেই গা বাঁচিয়েছেন। তৈমূর আলমকে বহিস্কারের পর নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির কি করুণ দশা বিরাজ করছে সেটা রাজপথের নেতাকর্মীরা অনুধাবন করতে পারছেন।
নেতাকর্মীরা মনে করছেন- তৈমূর আলম খন্দকারের বিকল্প হিসেবে একজন শক্তিশালী নেতার হাতে জেলা বিএনপির নেতৃত্ব ওঠে আসুক। যদিও তৈমূর আলমের বহিস্কারের প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসছেন তার অনুগামী নেতাকর্মীরা। কিন্তু সেটা কেন্দ্রীয় নেতারা কর্ণপাত করছেন না। ফলে তৈমূর আলমের বিকল্প হিসেবে নতুন কাকে দেখা যেতে পারে যিনি জেলা বিএনপির হাল ধরবেন? কারন রবি ও রিয়াজুলদের মত কর্মীরা যখন জেলা বিএনপির কমিটির শীর্ষ পদে তখন জেলা বিএনপির কমিটির দশা ওয়ার্ড কমিটির চেয়েও দূর্বল।
নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন, এমন পরিস্থিতিতে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান মনির কিংবা সাবেক এমপি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দীনকে দিয়ে জেলা বিএনপি সাজানো যেতে পারে। এর পরের সারিতে রয়েছেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষযক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদের মাধ্যমে। এর বাহিরে জেলা বিএনপির হাল ধরার মত শক্ত নেতা আর কাউকে দেখছেন না মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। তবে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মামুন মাহামুদ, জাহিদ হাসান রোজেল, আজহারুল ইসলাম মান্নান ও মাসুকুল ইসলাম রাজীবের মত নেতাদের একজনকে পারফেক্ট মনে করছেন নেতাকর্মীরা।