গুজবে কান দিবেন না, নির্বাচনে আছি এবং থাকবো ভোটের শেষ পর্যন্ত: কাজী লিটু

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার মোগরাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী কাজী নাজমুল ইসলাম লিটু স্থানীয় ভোটারদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, কারো কোনো গুজবে কান দিবেন না। নির্বাচনে আছি এবং থাকবো ভোটের শেষ পর্যন্ত। আমরা নির্বাচনমুখী পরিবার। অতীতে কাজী পরিবার ভোটে নির্বাচন করে নির্বাচিত হয়ে মোগরাপাড়া ইউনিয়নবাসীর সেবা করে গেছেন। কখনও নির্বাচন থেকে সরে যায়নি। আমি নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত থাকবো ইনশাহআল্লাহ। জনগণের রায় নিয়ে ঘরে ফিরবো।

জানাগেছে, এর আগে ১২ মে বৃহস্পতিবার সোনারগাঁও উপজেলা নির্বাচন কমিশন অফিস থেকে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন জেলা জাতীয় যুব সংহতির যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী নাজমুল ইসলাম লিটু। এর পরদিন মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করেছেন বর্তমান চেয়ারম্যান আরিফ মাসুদ বাবু। তিনি নৌকা প্রতীক না পেয়ে ১৬ মে সোমবার বিকেলে স্বতন্ত্র চেযারম্যান প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। গত ১৩ মে শুক্রবার বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকে মনোনিত হোন হাজী শাহ মোহাম্মদ সোহাগ রনি। ১৬ মে সোমবার তিনি নির্বাচন কমিশন থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন।

এদিকে স্থানীয় প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের প্রতি সুষ্ঠু নির্বাচনের আহ্বান জানিয়ে কাজী নাজমুল ইসলাম লিুট বলেছেন, নির্বাচন আসলেই মিথ্যা মামলা হুমকি ধমকি দিয়ে হয়রানি করা হয়। উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের প্রতি অনুরোধ রাখবো নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যেনো কোনো প্রকার আমার লোকজন ও আত্মীয়স্বজনকে হয়রানি না করা হয়। আমি নির্বাচনের ঘোষণা দেয়ার পর ইতিমধ্যে ঈদের পর কাইকারটেক এলাকায় কিছু যুবকদের মারামারির ঘটনায় আমার ভাতিজা সহ আত্মীয়স্বজন এলাকার নিরহ লোকজনের নামে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে।

মনোনয়নপত্র সংগ্রহ শেষে চেয়ারম্যান প্রার্থী কাজী নাজমুল ইসলাম লিটু তার কার্যালয়ে গণমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, দীর্ঘদিন মোগরাপাড়া ইউনিয়নের বিভিন্ন সামাজিক উন্নয়ন সহ সকল অবকাঠামোগত উন্নয়নে আমি মোগরাপাড়া ইউনিয়নবাসীর সেবক হিসেবে কাজ করেছি। আমার সামর্থ অনুযায়ী চেষ্টা করেছি পাশে থাকতে। ১৫ জুন এই ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ হবে। ইউনিয়নবাসীর সেবক হিসেবে কাজ করার মনোভাসনা দিয়ে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছি।

তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে এবং মোগরাপাড়া ইউনিয়নবাসীর পেছনে কাজী বংশের ভুমিকা তুলে ধরে বলেন, মোগরাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদে যারা দায়িত্বে ছিলেন, তাদের সফলতা ব্যর্থতা বিবেচনা করলে জনগণ আমার পাশে থাকবে বলে বিশ্বাস করি। যারা নির্বাচন করবেন তারাই সবাইকে যোগ্য মনে করি, কিন্তু আমার বংশের পরিচয়, আমার পূর্বপুরুষ, আমার দাদা কাজী ইমান আলী মেম্বার জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়েছিলেন। আমার দাদার মেজো ভাই কাজী তমিজ উদ্দীন আহমেদ কালাচাঁন চেয়ারম্যান জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকে নির্বাচিত হয়েছিলেন। আমার জেঠা কাজী রফিকুল ইসলাম মিয়া চেয়ারম্যান উনিও জনগণের ভোটেই নির্বাচিত হোন এবং জনগণের সেবায় নিয়োজিত ছিলেন। কাজী মঞ্জুর কাদের মেম্বার, কাজী সদর ‍আলী মেম্বার উনিও জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে জনগণের সেবা করেছেন।

তিনি আরো বলেন, বর্তমান ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় যেখানে অবস্থিত এটা আমার মেজো দাদা কাজী তমিজ উদ্দীন প্রতিষ্ঠা করেছেন। আজকে মোগরাপাড়া চৌরাস্তা থেকে কাইকারটেক যে রোডটি ঐতিহাসিক রোড। এক সময় কাচা মাটি ও নিচু ছিলো, এটা কাজী রফিকুল ইসলাম চেয়ারম্যান এখানে ইট বসিয়েছিলেন এবং আমার পরিবারের প্রচেষ্টায় তৎকালীন সময়ে নবাবদের কাছ থেকে জায়গা আবেদন করে কাইকারটেক নবাব হাবিবুল্লাহ উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছেন। মোগরাপাড়া ইউনিয়নের প্রায় ৭০ ভাগ উন্নয়ন আমার পূর্বপুরুষ ও পরিবারের অবদান।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা যেহেতু শত বছর ধরে এই ইউনিয়নবাসীর সেবায় কাজ করেছি, করে যাচ্ছি, সেই লক্ষ্যে বংশের পরমপরায় আমি স্বতন্ত্র হিসেবে মানুষের সেবা করতে প্রার্থী হয়েছি।

জাতীয়পার্টির রাজনীতি করেও কেন দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করছেন না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, জাতীয়পার্টি এই নির্বাচনে দলীয়ভাবে অংশগ্রহণ করবে এমন কোনো সিদ্ধান্ত পাইনি এবং ফলে কেউ স্বতন্ত্র নির্বাচন করলেও বাধা নেই। যে কারনে জনগণের দাবির প্রেক্ষিতে নির্বাচনে দাঁড়িয়েছি। তবে আমার দল নির্বাচন করলে আমি আশাবাদী ছিলাম লাঙ্গল প্রতীকে নির্বাচন করতাম, কারন যেহেতু আমার দাদা কাজী কালাচাঁন লাঙ্গল মার্কায় নির্বাচন করেছিলেন। সবকিছুর মালিক মহান আল্লাহ, আল্লাহর উপর ভরসা নিয়ে জনগণের উপর আস্থা রেখে নির্বাচনে দাঁড়িয়েছি। নির্বাচনে ভোটের ফলাফল পর্যন্ত নির্বাচনী মাঠে থাকবো।

ইউনিয়নবাসীর উদ্দেশ্যে আরো বলেন, আপনারা ভোট কেন্দ্রে যাবেন, ভোট দিবন এবং বিবেক বিবেচনা করে ভোট দিবেন। মোগরাপাড়া ইউনিয়নবাসী ভয়ভীতির ‍উধ্বে ওঠে ভোট কেন্দ্রে যাবে এবং আমাকেই ভোট দিবেন বলে বিশ্বাস করি।

ইউনিয়নের সমস্যা ও উন্নয়ন সম্পর্কে তিনি বলেন, উন্নয়নের জোয়ার যেভাবে সারাদেশে বইছে, স্বাস্থ্য সেবা সহ নানা সমস্যা রয়েছে, আশানুরুপ সেভাবে উন্নয়ন হয়নি।

সুষ্ঠু অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সামসুল ইসলাম ভুঁইয়া সহ গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বশীল সকল জনপ্রতিনিধিদের দৃষ্টি কামনা করেন।