আড়াইহাজারে সবুজ বাহিনীর ৯ ডাকাত র‌্যাবের অভিযানে গ্রেপ্তার

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

র‌্যাব-১১ এর অভিযানে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার হতে ধারালো অস্ত্র ও ককটেলসহ সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্রের ৯ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে। সবুজ বাহিনীর ৯ ডাকাত সহ সবুজকে গ্রেপ্তার করা হয়। ১৩ মে শুক্রবার এ তথ্য জানান র‌্যাব-১১ এর অঘিধনায়ক লেঃ কর্ণেল তানভীর মাহমুদ পাশা।

তিনি জানান, সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার এলাকায় বেশ কয়েকটি চাঞ্চল্যকর ডাকাতির ঘটনা ঘটে। উক্ত ডাকাতি সংক্রান্ত ঘটনাগুলোর প্রেক্ষিতে এলাকার সাধারণ জনগণের মধ্যে ব্যাপক আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। ডাকাতির ঘটনাগুলো নারায়ণগঞ্জের স্থানীয় গণমাধ্যমসহ দেশের শীর্ষস্থানীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। ডাকাতির ঘটনা ঘটার দ্রæততম সময়ের মধ্যে র‌্যাব ঘটনা সংক্রান্তে প্রয়োজনীয় তথ্য, এজাহার ও এফআইআর সংগ্রহ করে সেগুলো পর্যালোচনা শুরু করে। এছাড়াও ভুক্তভোগীদের নিকট থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য এবং ডাকাতদের গ্রেফতারের জন্য আবেদন পাওয়া যায়। লক্ষ্য করে দেখা যায় যে, গত বেশ কিছুদিন ধরে ধারাবাহিকভাবে ডাকাতির ঘটনা ঘটছে এবং সবগুলি ডাকাতির ঘটনা প্রায় একই রকম। এতে ধারণা করা যায়, একটি বড় সংঘবদ্ধ ডাকাত দল অত্র এলাকাসমূহতে পরিকল্পিতভাবে ডাকাতি করে আসছে। ডাকাতদের বয়স, ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত অস্ত্রের ধরন এবং লুণ্ঠিত দ্রব্যাদি সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে র‌্যাবের একটি চৌকস গোয়েন্দা দল গোপনে ডাকাত প্রবণ এলাকায় কঠোর গোয়েন্দা নজরদারি শুরু করে এলাকার কিছু সক্রিয় ডাকাত সদস্যকে সনাক্ত করে তাদের গতিবিধি লক্ষ্য করা হয় এবং একইসাথে তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তা নেওয়া হয়।

তিনি আরো জানান, এরই ধারাবাহিকতায় গোপন সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব-১১, সিপিএসসি এর একটি আভিযানিক দল কর্তৃক ১২ মে গভীর রাতে নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার থানাধীন মারুয়াদী বাজার এলাকায় ডাকাতির প্রস্তুতি গ্রহণকালে ধারালো অস্ত্র ও ককটেলসহ সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্র সবুজ বাহিনীর ৯ জন সক্রিয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো, উক্ত ডাকাত চক্রের গ্যাং লিডার মোঃ সবুজ, মোঃ সাখাওয়াত হোসেন রনি, সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্রের সক্রিয় সদস্য মোঃ সোহেল ওরফে ইসমাইল, মোঃ আবুল কাশেম, মোঃ মিজান, মোঃ ওমর ফারুক, মোঃ সোহেল, মোহাম্মদ রবিউল শেখ ও মোঃ জাহাঙ্গীর সিকদার।

গ্রেপ্তারকৃত উক্ত ডাকাত চক্রটি গত ৬ এপ্রিল ২০২২ এবং ২৪ এপ্রিল ২০২২ তারিখ আড়াইহাজার থানা এলাকায় সংঘটিত ডাকাতির ঘটনায় জড়িত ছিল মর্মে প্রাথমিক জিজ্ঞাসবাদে জানা যায়। গ্রেপ্তারকৃত আসামীদের হেফাজত হতে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত ৭টি ককটেল, ২টি রামদা, ৪টি ছোড়া, ২টি শাবল, ১টি চাইনিজ কুড়াল, ১টি তালা কাটার, ২টি তরবারী ও ৫টি টেটা উদ্ধার করা হয়।

এছাড়াও ডাকাতি হয়ে যাওয়া ১টি মোবাইল ফোনও উদ্ধার করা হয়। ডাকাতি করা টাকাগুলো এবং লুট করা স্বর্ণালংকারগুলো উক্ত গ্যাং এর সদস্যগণ ভাগ বাটোয়ারা করে নেয়। গ্রেপ্তারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে আড়াইহাজার ও সোনারগাঁ থানায় একাধিক ডাকাতি ও মাদক মামলা রুজু রয়েছে। এর মধ্যে গ্রেপ্তারকৃত ১নং ও ৩নং আসামীদের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালত কর্তৃক একাধিক গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে।

র‌্যাব আরো জানায়, গ্রেপ্তারকৃতরা সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্রের সক্রিয় সদস্য এবং তারা দীর্ঘদিন যাবৎ আড়াইহাজার থানা এলাকায় বিভিন্ন প্রবাসীদের বাড়িতে অথবা বিভিন্ন ব্যবসায়ী বা আর্থিকভাবে স্বচ্ছল পরিবারগুলোকে টার্গেট করে পরিকল্পিতভাবে তাদের ডাকাতি কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল। গভীর রাতে আড়াইহাজারের বিভিন্ন বাসা-বাড়িতে অতর্কিতভাবে হাজির হয়ে ধারালো অস্ত্র প্রদর্শন করে জনমনে ভয়ভীতি ও আতঙ্ক সৃষ্টি করে সাধারণ লোকজনদের জিম্মি করে ডাকাতি করে সিএনজি/মোটরসাইকেলযোগে দ্রæততার সাথে ঘটনাস্থল হতে পালিয়ে যায়। দুষ্কৃতিকারী এই ডাকাত দলের সদস্যরা ডাকাতি করতে গিয়ে জনসাধারণকে মারধর, ছুরিকাঘাত ও গাড়ি ভাংচুরসহ গুরুতর জখম করে থাকে। দীর্ঘদিন দিন ধরে তারা নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার থানা এলাকায় বিভিন্ন বাসা-বাড়িতে তাদের অন্যান্য সহযোগীদের নিয়ে ডাকাতি করে আসছিল।