বাজার সদাইয়ের পুঁটলি ও মোরগ হাতে রাস্তায় দাঁড়িয়ে এমপি খোকা!

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

বাংলাদেশের বর্তমান সময়ে একজন জাতীয় সংসদ সদস্যকে চিনি সেমাই তেল চাল ডালের পুঁটলি ও মোরগ হাতে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকার বিষয়টি বিরল বলা চলে। দেশের অনেক এমপিদের পিএস এপিএসের দ্বারস্থ হতে হতেই জনগণের যখন জান-যাওয়ার দশা তখন একেবারে নিরেট খেটে খাওয়া মানুষগুলোর দ্বারে দৌড়াচ্ছেন এমপি। দেশের কোনো সংসদ সদস্যকে যখন বাজার সদাইয়ের পুঁটলি ও মোরগ হাতে নিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকার দৃশ্য দেখা যায় তখন সেটা সারাদেশের মধ্যে বাস্তবিকভাবেই বিরল সেটা প্রমাণিত হয়।

যদিও এমন বাজার সদাই ও মোরগ নিজের পরিবারের জন্য নয়। নিজ সংসদীয় আসনের খেটে খাওয়া মানুষগুলোর সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে দিনমজুরদের হাতে এসব চিনি সেমাই তেল চাল ডাল ও মোরগ তুলে দিয়েছেন একজন এমপি। তিনি হলেন নারায়ণগঞ্জ-৩ (সোনারগাঁও) আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা। ২০১৪ সালে এই আসনে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঢাকা বিভাগীয় অতিরিক্ত মহাসচিব লিয়াকত হোসেন খোকা এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর তার কর্মকান্ডে সোনারগাঁয়ের মানুষ তাকে আমজনতার এমপি হিসেবে আখ্যায়িত করছেন।

মঙ্গলবার পবিত্র ঈদ উল ফিতর। এই উপলক্ষে সোনারগাঁয়ের অটোরিক্সা চালক, রিক্সাচালক, সিএনজি, ভ্যান চালক সহ পরিবহন শ্রমিকদের মাঝে কয়েকদিন যাবত ঈদ সামগ্রী বিতরণ করে আসছেন সোনারগাঁয়ের আমজনতার এমপি খোকা। নিজ হাতে এসব খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করে আসছেন তিনি। তবে তিনি এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর প্রতি বছর রোজার ঈদে এসব সামগ্রী বিতরণ করে আসছেন। একই সঙ্গে সোনারগাঁয়ের বিভিন্ন এলাকার গরীব অসহায় মানুষের মাঝে নগদ অর্থ ও খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করে আসছেন তিনি। তিনি এমন একজন মানুষ যার কাছ থেকে কোনো গরীব অসহায় মানুষ খালি হাতে ফিরে যায় না।

অন্যদিকে স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এখানে কেউ এমপি হলে অঢেল সম্পদের খবর বের হয় অথচ ২০১৮ সালে দ্বিতীয় নির্বাচনে নিজের মার্কেটের দোকান বিক্রি করে নির্বাচনী খরচ যোগান দিয়েছিলেন এমপি খোকা। যা সোনারগাঁয়ের মানুষজনও জানেন। অথচ তিনি এর আগে ৫টি বছর এমপি হিসেবে ছিলেন এই আসনেই। একজন এমপির আর্থিক এমন দৈনদশা থাকলেও সোনারগাঁয়ের আমজনতার মাঝে তিনি একজন বিরাট মনের মানুষ, একজন সাধারণ মানুষ। সেই দিক দিয়ে জনতার মাঝে তিনি স্বচ্ছলতা অর্জন করেছেন।

সোনারগাঁওবাসীর দাবি- লিয়াকত হোসেন খোকা এমপি হওয়ার পর সোনারগাঁয়ের মানুষ অন্তত অশান্তিতে ছিলেন না। কোন মাধ্যম ছাড়াই যে কোনো আমজনতা এমপি খোকার সঙ্গে সরাসরি দেখা করতে পারেন। জনগণ তার কাছে যাওয়ার আগে তিনিই জনগণের কাছে দৌড়াচ্ছেন। হাট ঘাট বাজার রাস্তা গ্রামগঞ্জে তিনি ঘুরছেন। কখনও চায়ের দোকানে বসে আমজনতার সঙ্গে চা পান করছেন। আড্ডা দিচ্ছেন সকল শ্রেণি পেশার মানুষের সঙ্গে। কেউই তার কাছে ছোট কিংবা বড় নয়। সকলকে দেখছেন তিনি সমানচোখে। দিনের ২৪ ঘন্টার মধ্যে ১৮ ঘন্টা তিনি সোনারগাঁয়ের মানুষের পাশে কাটাচ্ছেন। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত তিনি সকল শ্রেণি পেশার মানুষের সঙ্গে কথা বলছেন। কেউ সমস্যা নিয়ে আসছেন আর তার সমাধান করছেন। মুলত এসব বিষয়গুলো এমপি খোকার জনপ্রিয়তা সাধারণ মানুষের মাঝে বাড়িয়েছে। রাজনৈতিকভাবে রাজনৈতিক বিরোধীতার জন্য অন্য রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা তার বিরোধীতা করলেও সাধারণ মানুষের কাছে তিনি একজন আমজনতার এমপি হিসেবে সোনারগাঁয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছেন।

গত ২০২০ সালের মার্চ মাস থেকে বিশ্বব্যাপী মহামারি করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে ত্রাণকর্তা হিসেবে আভির্ভূত হয়েছিলেন এমপি খোকা। সকাল দুপুর বিকেল সন্ধ্যায় রাতে মানুষের ঘরে ঘরে ত্রাণ পৌছে দিয়েছেন এমপি খোকা নিজ হাতে। যে সব পরিবারগুলো কারো কাছে হাত পাততে পারেনি তাদের ঘরে রাতের আধারে খাদ্য সামগ্রী পৌছে দিয়েছেন এমপি খোকা, কখনও নিজ হাতে কখনওবা তার লোকজনের মাধ্যমে। সার্বক্ষনিক খাদ্য সামগ্রী বিতরণের জন্য তিনি হটলাইন সেন্টার খুলেছিলেন। যেখানে ফোন করলেই খাদ্য সামগ্রী পৌছে দিয়ে আসতো। রোগীর চিকিৎসার সুবিধার্থে তিনি সার্বক্ষনিক এ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করেছিলেন। করোনাকালে তার এমন ভুমিকার ব্যাপক প্রসংশা করছেন সোনারগাঁবাসী।

এদিকে ১ মে গত রবিবার ও ২ মে সোমবার টানা দুইদিন ব্যাপী পরিবহন শ্রমিক সহ বিভিন্ন এলাকার অসহায় নারী পুরুষদের মাঝে ঈদ সামগ্রী বিতরণ করেছেন এমপি খোকা। ২ মে সোমবার বিকেলে মোগড়াপাড়া টু নবীগঞ্জ সড়কে চলাচলরত অটো রিকশা, মিশুক, সিএনজি চালকসহ অসহায় নারী পুরুষের মাঝে মুরগী, তৈল, দুধ, পোলাও চাল, পিয়াজ, ডাল, চিনি ও দুই প্রকার সেমাই বিতরণ করেন। আগের দিন তিনি মোগরাপাড়া চৌরাস্তা থেকে বারদী সড়কে ও পানাম সড়কে শহীদ মজনু গলির রাস্তায় দাঁড়িয়ে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেছেন।

এ বিষয়ে এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা বলেন, সাধারণ মানুষের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করার জন্য আমার পক্ষ থেকে ক্ষুদ্র উপহার। তাদের হাতে যখন ঈদ সামগ্রী তুলে দেই, তারা পেয়ে হাসি দিয়েছে। এতে আমি খুশী ও আনন্দিত। আমি চাই এভাবে আজীবন তাদের পাশে দাঁড়াতে। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন যেনো এ তৌফিক আমাকে সবসময় দান করেন। এভাবে তিনি আড়াইহাজার চালক ও সাধারণ মানুষের মাঝে ঈদ সামগ্রী বিতরণ করেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন-কেন্দ্রীয় জাতীয় পার্টির প্রচার সম্পাদক মাসুদুর রহমান মাসুম, জাতীয় পার্টির নারায়ণগঞ্জ জেলা জাতীয় সেচ্ছাসেবক পার্টির সাধারণ সম্পাদক জাবেদ রায়হান জয়, জাতীয় স্বেচ্ছাসেবক পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সমাজ কল্যাণ সম্পাদক আনিসুর রহমান বাবু, মোত্তার হোসেন, ফজলুল হক, হাসান সহ জাতীয় পার্টির অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।