আইভীর পক্ষে কাজ করতে শামীম ওসমানের নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি পুলিশের হানা!

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে ঘিরে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ডাক্তার সেলিনা হায়াত আইভীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় থাকার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ( ডিবি পুলিশ ও থানা পুলিশ) নারায়ণগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী রাজনীতিক পরিবার ওসমান পরিবারের ঘনিষ্ঠ নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি অভিযান চালিয়েছে। যাদের বাড়িতে অভিযান চালিয়েছে তারা অভিযোগ করেছেন ডিবি পুলিশ ও থানা পুলিশ বাড়িতে আতঙ্ক সৃষ্টি করে নৌকার পক্ষে কাজ করার জন্য চাপ প্রয়োগ করেছেন। তবে এ বিষয়ে এসপি, ওসি কিছুই জানেন না বলে জানান।

জানা গেছে, সদ্য বিলুপ্ত নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান রিয়াদ, সাধারণ সম্পাদক হাসনাত রহমান বিন্দু, ছাত্রলীগ নেতা কাউছার আহমেদের বাড়িতে বিপুলসংখ্যক পুলিশ ৮ জানুয়ারি শনিবার গভীর রাতে তাদের বাড়িতে হানা দেয়। এ সময় তাদেরকে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের পক্ষে নির্বাচনে কাজ করার জন্য চাপ প্রয়োগ করা হয়। একইসঙ্গে নৌকার পক্ষে কাজ না করলে এর পরিণতি ভয়াবহ হবে সেই বিষয়টিও ইঙ্গিত দিয়ে যান পুলিশ।

শনিবার রাত ১০টায় মাসদাইর বেকারীর মোড় এলাকায় সদ্য পদচ্যুত মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান রিয়াদের নিজ বাড়িতে ১০ থেকে ১৫টি গাড়িতে প্রশাসনের লোক অবস্থান নেয়।

এ সময় তারা রিয়াদকে খোঁজ করতে গেলে সামনে পড়েন রিয়াদের ভাইয়ের ছেলে সিয়াম। রিয়াদের বিষয়ে খোঁজ করলে সিয়াম বলেন রিয়াদ বাড়িতে নেই। পরে ডিবির পোশাক পরিহিত পাঁচ থেকে ৬জন তাকে এলোপাতাড়িভাবে চড়-থাপ্পড় মারতে থাকেন।

ছাত্রলীগ নেতা হাবিবুর রহমান রিয়াদ তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, আজকে দুপুরে ডাক্তার সেলিনা হায়াত আইভীর পক্ষে সভায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির নেতারা এসেছেন। তাদেরকে নিয়ে ডা. সেলিনা হায়াত আইভীর পক্ষে প্রচারণার জন্য মতবিনিময় সভা করেছি। সভা চলাকালীন সময়ে জানতে পারলাম, ছাত্রলীগের কমিটি কেন্দ্র থেকে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। তারপরেও আমরা সভা পরিচালনা করেছি। কিন্তু এখন রাত ১০টার দিকে হঠাৎ করে আমার বাসায় ডিবি, পুলিশসহ অন্যান্য বাহিনীর ১৫ গাড়ি প্রশাসনের লোকজন এসেছে এবং তারা এসে বলেছে ডাক্তার সেলিনা হায়াত আইভীর পক্ষে প্রচারণা করার জন্য। তারা প্রচারণা করার জন্য চাপ দিচ্ছে।

তিনি বলেন, আমি ছাত্রলীগ করি, মহানগরের প্রেসিডেন্ট ছিলাম। যেহেতু ছাত্রলীগ করি সেহেতু স্বাভাবিকভাবেই আমি নৌকার প্রার্থীর পক্ষে কাজ করব। জননেত্রী শেখ হাসিনা যে মার্কা দিয়েছেন তার পক্ষে কাজ করব। আজকে সকালেও সভা করেছি, আগামীকাল ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের আসার কথা। একটি বড় আয়োজন এর চিন্তা ছিল। ১০ হাজার নেতাকর্মী নিয়ে মেয়র আইভীর পক্ষে ভোট চাইতে প্রচারণা চালাবে। কিন্তু আজ অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে হঠাৎ কমিটি বিলুপ্ত করায়, বিষয়টি স্থবির হয়ে আছে। কিন্তু হঠাৎ করে প্রশাসনের এমন হানা দেওয়াতে আমার পরিবার সহ এলাকাবাসী আতঙ্কিত ও ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছে।

তিনি বলেন, আমি এবং আমার নেতাকর্মীরা এমনিতেই মেয়র ডা. সেলিনা হায়াত আইভীর পক্ষে কাজ করছি। আমরা যদি অপরাধ করে থাকি নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সমন্বয়ক জাহাঙ্গীর কবির নানক, মির্জা আজম, খোকন সাহা, আনোয়ার হোসেন সিনিয়র নেতাদের কাছে জবাবদিহিতা করব। আমরা ইতোমধ্যে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ২৭টি ওয়ার্ডের নেতাকর্মীদের নাম পার্টি অফিসে জমা দিয়েছি। কিন্তু এর মধ্যে প্রশাসন দ্বারা হয়রানি করলে নৌকার ভোট বাড়বে না কমবে আমার জানা নেই।

রিয়াদ বলেন, আমি বহুদিন ধরে ছাত্রলীগ করি, তাই জেলায় ছাত্রলীগের শীর্ষ স্থানীয় নেতৃত্ব প্রদানকারী হিসেবে সবাই আমাকে চিনে এবং জানে। আমি ঠিক আসলে বুঝতে পারছি না তারা কেন এ কাজটি করলো। সরকারদলীয় সংগঠনের নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি যেয়ে তারা যদি এমন করে, তবে মানুষ আতঙ্কিত হবে ও কষ্ট পাবে। নির্বাচনে যারা সরকারদলীয় বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীদের যদি এই অবস্থা হয় তবে সাধারণের কি হবে?