যেসব কারনে আইভীকেই নারায়ণগঞ্জবাসীর প্রয়োজন!

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জের নগর কেন্দ্রীক রাজনীতি এবং উন্নয়নের রাজনীতিতে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের টানা দুই বারের নির্বাচিত মেয়র ডাক্তার সেলিনা হায়াৎ আইভী, যিনি একইসঙ্গে এর আগে নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ছিলেন। প্রায় ১৬ বছর যাবত জনপ্রতিনিধি হয়ে মানুষের জন্য তিনি উন্নয়নমূলক কাজ করছেন। নারায়ণগঞ্জের সাধারণ মানুষের কাছে তিনি একজন আমজনতার নেত্রী হিসাবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছেন। যার নির্বাচনে কোনো বাহিনীর প্রয়োজন হয় না, যার নির্বাচনে কোনো সন্ত্রাসী প্রয়োজন হয় না, কোনো মাদক ব্যবসায়ী ভূমিদস্যু চাঁদাবাজ সন্ত্রাসী বাহিনীর প্রয়োজন হয় না, তিনিই মেয়র আইভী।

স্থানীয়দের মতামত, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষ অবস্থান ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর অবস্থানে সুষ্ঠু সুন্দর অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন হলেই সাধারণ মানুষের, আমজনতার ভোটের মাধ্যমে মেয়র আইভীর জয় নিশ্চিত। স্থানীয়রা মনে করছেন- তার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের একটি অংশ ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। যে বিষয়টি মেয়র আইভীও বেশ কয়েকটি প্রোগ্রামে বলেছেন-নৌকার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। তবে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকমের কথা হল- এই বিষয়ের সাথে দ্বিমত পোষণ করে তারা বলছেন, আওয়ামী লীগের কোনো অংশ কিংবা আওয়ামী লীগের কোনো নেতাকর্মী নৌকার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত নয়। তবে এইটুকু সত্য যে, ডাক্তার সেলিনা হায়াত আইভীর সঙ্গে যাদের রাজনৈতিকভাবে দূরত্ব রয়েছে বা রাজনৈতিকভাবে যাদের সঙ্গে দূরত্ব ছিল, তাদের মধ্যে কিছুটা মান-অভিমানের বিষয়ে কাজ করছে। এক্ষেত্রে মেয়র আইভী তাদের দারস্থ হলেই তারা নৌকার পক্ষে পুরোদমে পুরোদস্তর নির্বাচনী মাঠে নামবেন বলে মনে করছেন তারা।

 

তাদের মতে, আওয়ামী লীগের ওই সব মান-অভিমানে থাকা নেতাকর্মীদের মাঝে কোনো ষড়যন্ত্র নেই, তারা মান অভিমান নিয়ে একটু নীরব রয়েছেন। যদিও এই নীরবতাকে কাজে লাগানোর স্বপ্ন দেখছেন কেন্দ্রীয় বিএনপি’র চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ও নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি’র আহবায়ক অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার, যিনি এই নির্বাচনে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী হয়েছেন। তার অস্পষ্ট অসংলগ্ন বক্তব্যে এবং তার আশেপাশের নেতাকর্মীদের আচরণ ও বক্তব্যে তারা এটাই প্রমান করতে চাচ্ছেন যে, আওয়ামী লীগের একটি অংশ তাদের সঙ্গে রয়েছে। মূলত এমন কোনো সঠিক স্পষ্ট তথ্য এখনো পর্যন্ত কোন মিডিয়াতে দিতে পারেনি কেউ। সবাই ভাসাভাসাভাবে ধারণা থেকে কারো কারো আকার-ইঙ্গিতে অভিযোগের ভিত্তিতে আওয়ামী লীগের একটি অংশকে ষড়যন্ত্রের কাতারে নিয়ে দাঁড় করাচ্ছে। কিন্তু সেটাকেই তৈমুর আলম ও তার লোকজন নারায়ণগঞ্জের মানুষকে বোকা বানিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করছেন তারা আওয়ামী লীগের একটি অংশের সামর্থনেই মেয়র প্রার্থী হয়েছেন।

আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীরা বলছেন, বাস্তব চিত্র সেটা নয়, আওয়ামী লীগের ওই অংশটি নীরব থাকা মানেই তারা বিএনপি’র সিদ্ধান্তের বাহিরের প্রার্থী হেফাজত-জামায়াতের প্রার্থী তৈমুর আলম খন্দকার এর পক্ষে রয়েছেন সেটা ভাববার কোন কারণ নেই।

আবার আওয়ামী লীগের আরেকটি অংশে নেতাকর্মীরা মনে করছেন- যেহেতু নারায়ণগঞ্জে নৌকা প্রতীক আওয়ামী লীগের প্রতীক, শেখ হাসিনার প্রতীক, এইখানে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা কখনো নৌকার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে পারবে না বা পারে না বা করবে না। হয়তোবা মান অভিমান বা রাজনৈতিক কারণে তারা নীরব অবস্থান নিতে পারে কিন্তু নৌকার বিরুদ্ধে গিয়ে তাদের অনুগামী কর্মী-সমর্থক কিংবা নেতাকর্মীদের নৌকার বিরুদ্ধে কাজ করার জন্য মাঠে নামাবে, সেটা অবাস্তব কল্পনা। নিরবতা মানে তারা নৌকার বিরুদ্ধে সেটা নয়। যারা নৌকার পক্ষে এখনো মাঠে নামেনি তারা ঠিকই নৌকা মার্কায় ভোট দিবে।

নেতাকর্মীদের আরো মতামত, কেন্দ্র দখলে বা জোর-জুলুম এসব বিষয় মেয়র আইভীর জন্য প্রয়োজন নেই। মেয়র আইভীর জন্য নারায়ণগঞ্জের আমজনতার সাধারণ মানুষ, সচেতন নাগরিক, তাদের ভোট এমনিতেই রিজার্ভ রয়েছে। সুতরাং আইভীকে জোরজবরদস্তি দখল, ভোট কেন্দ্র দখল জালিয়াতি করে পাশ করাতে হবে না। তার রিজার্ভ ভোটের মাধ্যমেই আইভী নির্বাচিত হবেন। আর যদি কেউ ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকেও তারা কখনোই নৌকার বিরুদ্ধে গিয়ে কারো পক্ষে কেন্দ্র দখল করে, জালিয়াতি করে, ভোট ডাকাতি করে, সিল মারবে এটা ভাবার কোন কারন নাই।

সচেতন মানুষ মনে করছেন- নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের জন্য মেয়র আইভীকে সকলের জন্য প্রয়োজন। নারায়ণগঞ্জে ক্ষমতা দুইটি ভাগে বিভক্ত আর দুইটি ভাগে বিভক্ত থাকার কারণেই সাধারণ মানুষ নিরাপদে থাকতে পারে। কারণ ক্ষমতা যখন একটি পক্ষের নিয়ন্ত্রণে থাকে, তখন সেই পক্ষটি যাচ্ছেতাই করতে পারে। তাদের জবাবদিহিতার জায়গাটুকু একটু কম থাকে। কিন্তু যখন আইভী মেয়র পদে থাকেন তখন আইভীর বিরোধীপক্ষ কোন অন্যায় অনাচার অত্যাচার জুলুম চাঁদাবাজি বা কারো উপর নির্যাতন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালানোর চেষ্টা করতে গেলে একটি কথাই মাথায় রাখে যে, মেয়র আইভী আছে, তিনি এর প্রতিবাদ করবেন। ফলে অপকর্ম রোধ হয়।

আবার উল্টোদিকে মেয়র আইভীর কোন লোকজন যদি এসব কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত হওয়ার চেষ্টা করেন বা করতে যান তখন তারাও এই বিষয়টি ভাবেন যে, আইভীর প্রতিপক্ষ আছেন, তারাও ঠিক একইভাবে মেয়র আইভীর কোনো লোকজন অন্যায় অত্যাচার নির্যাতন জুলুম এইসব অপকর্মের সঙ্গে জড়িত হলে প্রতিবাদ হবে। ফলে এখানেও অপকর্ম রোধ হয়। যার ফলে নারায়ণগঞ্জের ক্ষমতা দুটি ভাগে বিভক্ত থাকায় দুই পক্ষই কোনো অপকর্ম করতে গেলে একটি কথাই মাথায় রাখেন যে, তাদের প্রতিপক্ষ স্ট্রং, অপকর্ম করলে তারা সেখান থেকে বিপদে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যার ফলে নারায়ণগঞ্জ এর ক্ষমতা দুইটি ভাগে বিভক্ত রাখাটাই সাধারণ মানুষের জন্য নিরাপদ এবং সেটাই সচেতন নাগরিক মনে করেন। তাছাড়াও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতারাও মনে করেন নারায়ণগঞ্জে ক্ষমতা দুইটি ভাগে বিভক্ত থাকাটাই নারায়ণগঞ্জের মানুষের জন্য নিরাপদ এবং সরকারের জন্যও নিরাপদ।