বৈদ্যেরবাজারে নৌকার পক্ষে ভোট কেন্দ্র দখলের মহাপরিকল্পনা, ১৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলা্র বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ আগামী ২৬ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আল আমিন সরকারকে জোর করে বিজয়ী করতে ভোট কেন্দ্র দখলের পরিকল্পনা করেছে আওয়ামীলীগের শীর্ষ নেতারা। ইতিমধ্যে আওয়ামীলীগ নেতাদের গোপন বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়- ভোটের দিন ভোট কেন্দ্র দখল করে নিয়ন্ত্রনের দায়িত্বে থাকবে আওয়ামীলীগের ১৫ জন নেতাকর্মী। যারা ভোট কেন্দ্র দখলের মুল মনিটরিং ও কেন্দ্র দখল করে বিপরীত পোলিং এজেন্টদের ভয় দেখিয়ে কেন্দ্রের বুথের ভেতরে বসিয়ে রেখে নৌকার পক্ষে সীল মারার ব্যবস্থা করবেন এবং তাদের সঙ্গে আরো ২৫জন করে কর্মী দেয়া হবে, যারা সীল মারবেন। এসব দায়িত্ব দেয়া হয়েছে হত্যা মামলার আসামি, সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ীদের। রয়েছে আওয়ামীলীগের শীর্ষ দু’একজন নেতার নামও। ভোট কেন্দ্র দখলের আশংকার অভিযোগ তুলে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার জন্য লিখিত ও মৌখিকভাবে রিটার্নিং অফিসার বরাবর জানিয়েছেন অন্যান্য প্রার্থীরা।

স্থানীয়দের একাধিক সূত্রে, গত ১৬ ডিসেম্বর রাতে বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়নে গোপন বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। গোপনে বৈঠকে ১৫ জনের তালিকা তৈরি করা হয়, যারা মুলত ভোট কেন্দ্র দখল ও নিয়ন্ত্রনের মুল দায়িত্বে থাকবেন। এর আগে বৈঠকে নেতাকর্মীরা মত দেন- এখানে সুষ্ঠু নির্বাচন হলে নৌকার বিজয়ের কোনো সম্ভাবনাই নেই। ফলে বিজয়ের বিকল্প পথ হিসেবে ভোট কেন্দ্র দখল করে সীল মারার ব্যবস্থা করতে হবে। যার ফলশ্রুতিতে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। নির্বাচনে সোনারগাঁও পৌরসভা, বারদী, সাদিপুর, মোগরাপাড়া ইউনিয়ন থেকে কয়েক হাজার নেতাকর্মী সরবরাহের ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। যদিও মিডিয়াতে আগে থেকেই আশংকা প্রকাশ করে দুই স্বতন্ত্র প্রার্থীও এমন অভিযোগ করে আসছেন।

জানাগেছে, নৌকার পক্ষে ভোট কেন্দ্র দখল ও সীল মারার নিয়ন্ত্রণে দায়িত্বে থাকা নেতাদের তালিকায় রয়েছেন- বৈদ্যেরবাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নিয়ন্ত্রনের দায়িত্বে থাকবেন জেলা আওয়ামীলীগ নেতা মাহফুজুর রহমান কালাম ও যুবলীগ নেতাকর্মীদের নিয়ে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি (বহিরাগত) রফিকুল ইসলাম নান্নু।

খংসারদি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দায়িত্বে বীর মুক্তিযোদ্ধা গফুর হত্যায় অভিযুক্ত বাচ্চু সরকার, মনিরুজ্জামান সরকারের ছেলে সালাউদ্দীন সরকার, গফুর ও রফিকুল হত্যার অভিযুক্ত হাসেম সরকারের ছেলে ফায়েজ সরকার।

হামছাদি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যা্লয়ের দায়িত্বে ডেকোরেটর ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম হত্যায় অভিযুক্ত বাদল সরকারের ছেলে অরনিজ সরকার ওরফে আনিছ সরকার, খালেক মাস্টারের ছেলে রহমান, বাদল সরকারের ছেলে প্রিন্স সরকার।

আনন্দবাজার মাদ্রাসা কেন্দ্র দখলের দায়িত্বে যুবলীগ নেতা জাকির হত্যা মামলার আসামি মৃত শহিদুল্লাহ মেম্বারের ছেলে নবী হোসেন ও নজরুল ইসলাম, আইয়ুব আলী মেম্বারের ছেলে মোঃ সিরাজুল ইসলাম।

ধনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়ন্ত্রনে থাকবে হামছাদি এলাকার মোশারফ সরকারের ছেলে রাসেল সরকার, রাকিব সরকার, মুজিবর রহমান মেম্বার। দামোদরদি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দখলের দায়িত্বে শাহাদাত হোসেন মেম্বারের ছেলে শাহজালাল মিয়া, ইসমাঈল হোসেনের ছেলে আনোয়ার হোসেন।

নির্বাচনে আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আল আমিন সরকারের বিপরীতে স্বতন্ত প্রার্থী রয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান ডা. আব্দুর রউফ, সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুব হোসেন সরকার।