তৈমূরের পক্ষে কাজ না করলে নারায়ণগঞ্জ থেকে বের করে দেয়ার ঘোষণা

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচনে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকারের পক্ষে কাজ না করলে নেতাকর্মীদের নারায়ণগঞ্জছাড়া করার হুমকি দিয়েছেন মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি আতাউর রহমান মুকুল। আতাউর রহমান মুকুল বন্দর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। দলীয় নির্দেশনা না পেলে তৈমুর আলমের পক্ষে যারা কাজ না করার ঘোষণা দিয়েছেন তাদের ‘দালাল’ বলেও মন্তব্য করেছেন বিএনপির এই নেতা। অথচ গত জাতীয় নির্বাচনে প্রকাশ্যে বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থীর বিরোধীতা করে জাতীয় পার্টির লাঙ্গলের পক্ষে কাজ করেছিলেন। বিএনপির এজেন্টদের মারধর করে ভোট কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়ার অভিযোগও তার বিরুদ্ধে ওঠেছিল।

২০ ডিসেম্বর সোমবার সন্ধ্যায় নাসিক নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ১২নং ওয়ার্ডে মহানগর বিএনপির আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। নগরীর মিশনপাড়ায় মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এটিএম কামালের বাড়িতে এ সভার আয়োজন করা হয়।

সভায় আতাউর রহমান মুকুল ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘যারা এখনও আমাদের সঙ্গে আসে নাই, তারা আমাদের চাইতেও বড় বিএনপি। তারা বলতেছে, কেন্দ্র তো বলে নাই, আমরা কেন নির্বাচন করবো। এগুলা হচ্ছে তাগো (আওয়ামী লীগ) দালাল। বিএনপির এসব নেতাকর্মী যদি না আসে, তৈমুর ভাইয়ের নির্বাচন না করে, এগুলোকে নারায়ণগঞ্জ শহর থেকে বের করে দেবো। একদম সোজা কথা।’

এমন বক্তব্য প্রসঙ্গে ২২ ডিসেম্বর বুধবার সন্ধ্যায় আতাউর রহমান মুকুল গণমাধ্যমে বলেন, ‘দলের নেতাকর্মীদের উদ্বুদ্ধ করার জন্যই এমন বক্তব্য দিয়েছি। নেতাকর্মীরা বিষয়টিকে ইতিবাচকভাবে নিয়েছেন।’

এদিকে ‘বিএনপি নেতাকর্মীদের শহরছাড়া’ করার হুমকি দিয়ে দেওয়া আতাউর রহমান মুকুলের বক্তব্যের এই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হলে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন দলটির নেতাকর্মীরা। বিএনপির একাধিক নেতা বলেন, ‘যারা নারায়ণগঞ্জে রাজনীতি করছেন তারা সবাই জানেন তিনি কোন পরিবারের দালাল।’

গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের উদাহরণ টেনে বিএনপি নেতারা বলেন, ‘দলের সমর্থিত ধানের শীষের প্রার্থীর বিরুদ্ধে তিনি প্রকাশ্যে বিরোধিতা করে মহাজোট সমর্থিত লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী সেলিম ওসমানের পক্ষে নির্বাচনি প্রচারণা চালিয়েছেন। সেলিম ওসমানের নির্বাচনি সভায় এক মঞ্চে দাঁড়িয়ে ভোটও চেয়েছিলেন মুকুল।’

বিষয়ে জানতে চাইলে মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট সরকার হুমায়ূন বলেন, ‘প্রথমত দল কোনও প্রার্থী দেয়নি। তাছাড়া দল প্রার্থী দিলেও পছন্দ না হলে তার পক্ষে কাজ না করতেই পারে কেউ। এইটা একান্তই ব্যক্তিগত ব্যাপার। কিন্তু কাজ না করলে তাকে শহরছাড়া করার হুমকি কেউ দিতে পারে না। এভাবে বলা তার উচিত হয়নি।’ মহানগর বিএনপির আরেক সহ-সভাপতি মনির হোসেন খান মুকুলকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, মুখে লাগাম টেনে কথা বলুন।

মুকুল মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি পদে থাকলেও তৈমুর আলম খন্দকারের সঙ্গে তার পুরনো বিরোধ ছিল। এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিরোধ মেটাতে বাধ্য হয়েছেন বলেও ২০ ডিসেম্বর দেওয়া বক্তব্যে জানান তিনি। মুকুল বলেন, ‘তৈমুর ভাইয়ের ঘনিষ্ঠ লোক নুরুদ্দিন ভাইয়ের সঙ্গে আমার বিরোধ ছিল। দুর্দিনে আমরা মিলতে বাধ্য হয়েছি।