এক সাহসী যুবক যেভাবে হয়ে ওঠলেন আলীরটেকবাসীর বীর সন্তান

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার আলীরটেক ইউনিয়ন পরিষদের গত নির্বাচনে একক প্রার্থী হিসেবে বিনা ভোটে চেয়ারম্যান হয়েছিলেন বর্তমান চেয়ারম্যান মতিউর রহমান মতি। এবারও বিনা ভোটে চেয়ারম্যান হওয়ার আশায় এলাকার লোকজন ও আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে কোনো ধরণের যোগাযোগ রাখেননি তিনি। যার ফলশ্রুতিতে এলাকাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে থাকার ঘোষণা দেন মোঃ সায়েম আহমেদ। যে কারনে এবার নৌকা প্রতীক পেলেও মতির সঙ্গে কোনো লোকজন মাঠে নামেনি। ফলে তিনি অসুস্থ্যতার অজুহাত দেখিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান। জেলার কিছু ব্যক্তিদের ম্যানেজ করে পরবর্তীতে মতির বদলী হিসেবে সাবেক চেয়ারম্যান জাকির হোসেন নৌকা প্রতীক নিয়ে আসেন।

নৌকা প্রতীক এনেও জাকির হোসেন আওয়ামীলীগ ও এর অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সর্বাত্মকভাবে কাছে পাননি। এমন পরিস্থতিতে কেন্দ্রীয় হেফাজতে ইসলামের সাবেক প্রচার সম্পাদক, নারায়ণগঞ্জ মহানগর হেফাজতে ইসলামের সভাপতি মাওলানা ফেরদাউসুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক মাওলান হারুন অর রশীদকে নিয়ে তার মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। নির্বাচনে মতির মতই জাকির হোসেনও চেয়েছিলেন আলীরটেকবাসীর ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে বিনা ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হতে। যার ফলশ্রুতিতে আনারস প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী সায়েম আহমেদের জনপ্রিয়তায় ভীত হয়ে মিথ্যা সাজানো মামলা দিয়ে হয়রানি করা হয় এবং সায়েম আহমেদকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখা হয়।

পরবর্তীতে উচ্চ আদালত থেকে সায়েম আহমেদ জামিন নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় নেমেই তাক লাগিয়ে দেন। কয়েক হাজার নারী পুরুষ নিয়ে নির্বাচনী মাঠে শোডাউন করে আলোড়ন সৃষ্টি করেন তিনি। মাত্র ৪ দিনের প্রচারণায় নির্বাচনী মাঠে আনারস প্রতীকের গণজোয়ার সৃষ্টি হয়। সায়েম আহমেদ আলীরটেকবাসীর ভোটের অধিকার রক্ষায় তিনি এখনও শত বাধা বিপত্তি পেরিয়ে নির্বাচনী মাঠে সচল রয়েছেন। তাকে মামলা হামলা দিয়ে হয়রানি করায় সাধারণ ভোটারদের মাঝে সহানুভুতি সৃষ্টি হয়েছে। ফলে আলীরটেক ইউনিয়নে আনারস প্রতীকের গণজোয়ার চলছে। যেখানে দুলছে নৌকা।

স্থানীয়রা বলছেন- বছর খানিক আগে নারায়ণগঞ্জের একজন প্রভাবশালী এমপি একেএম সেলিম ওসমান আলীরটেকে একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে ঘোষণা দিয়ে বলেন ‘মতিউর রহমান মতিকে আবারো চেয়ারম্যান দরকার। তাকে আমি চাই। তাকে আমি নির্বাচনে সমর্থন করলাম।’ ওই ঘোষণার পর মতি ও তার লোকজন এলাকায় প্রচার করতে থাকেন মতি আবারো বিনা ভোটে চেয়ারম্যান হতে যাচ্ছেন।

এমন প্রচারণার পরে আলীরটেকের হাজার হাজার মানুষকে নিয়ে নির্বাচন ও সুষ্ঠু ভোটের দাবিতে আন্দোলনে নামেন সাহসী এই যুবক সায়েম আহমেদ। টানা বছর খানিক সময় ধরে সায়েম আহমেদ আলীরটেক ইউনিয়নবাসীর ভোটের অধিকার রক্ষায় আন্দোলন করেন যা জেলাজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। সেই আন্দোলন থেকে তিনি আজোবধি নির্বাচনী মাঠেও হাজারো বাধা বিপত্তি অতিক্রম করে নির্বাচনী মাঠে ভোট প্রার্থনা করছেন। সায়েম আহমেদের লোকজনের বিরুদ্ধে আবারো হামলা ও মামলা দেয়ার হুমকি ধমকি দিচ্ছেন। এসব কারনে আলীরটেকবাসী তাকে আলীরটেকের বীর সন্তান হিসেবে আখ্যায়িত করছেন।

৮ নভেম্বর সোমবার সকাল থেকে দিনভর আলীরটেক ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় নির্বাচনী গণসংযোগ করেন সায়েম আহমেদ। মামলায় হয়রানির কারনে প্রতিটা ঘরে ঘরে না যেতে পারলেও তিনি প্রতিটি এলাকায় গিয়েছেন পুরোদমে। সোমবার নির্বাচনী গণসংযোগে গেলে মুরুব্বীরা বলেন, সায়েম তুমি আমাগো আলীরটেক ইউনিয়নবাসীর বীর সন্তান। তুমি আমাগো ভোটের অধিকার রক্ষায় আন্দোলন করেছো, ভোটের অধিকার ফিরিয়ে এনেছো, এই ভোট তুমি প্রাপ্য, আজকে তোমার সাহসিকতার কারনেই আমরা ভোট দিতে পারমু। তাই আমরা তোমারেই আনারস মার্কায় ভোট দিমু।’