সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজারের রাজনীতিতে কারোরই খবরদারী চলে নাা। এখানে একক কর্তৃত্ব কেবল স্থানীয় তিন বারের এমপি নজরুল ইসলাম বাবুর। কিন্তু এবার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তার পছন্দের প্রার্থী শাহজালাল মিয়া নৌকা প্রতীক পাননি। নৌকা প্রতীকটি ছিনিয়ে এনেছেন মুজাহিদুর রহমান হেলো সরকার।
এখানে বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলেন শাহজালাল মিয়া যিনি তার মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। নির্বাচনে ভোট গ্রহণের আগেই বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় দুই ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। এত নিয়ন্ত্রনের পরেও তার ভাগিনা ইকবাল হোসেন মোল্লাকে নিয়ন্ত্রন করতে পারছেন না এমপি বাবু। উল্টো ভাগিনা ইকবাল দিয়েছেন হুংকার।
জানাগেছে, নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৩১ মার্চ। এখানে নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন পেয়েছেন উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মুজাহিদুর রহমান হেলো সরকার। নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন চেয়েছিলেন বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি শাহজালাল মিয়া ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট আবদুর রশিদ ভূঁইয়াও। কিন্তু হেলো সরকারের পক্ষে গোপনে কেন্দ্রে চিঠি পাঠান জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আবদুল হাই ও সেক্রেটারি আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদ বাদল।
মনোনয়ন পাওয়ার পর গত ৩ মার্চ আড়াইহাজার উপজেলা নির্বাচন কমিশন অফিসে শোডাউন করে দলীয় প্রার্থীর সঙ্গে বিদ্রোহী করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দেন শাহজালাল মিয়া। ওইদিন নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের কার্র্যালয়ে রিটার্নিং অফিসারের কাছে মনোনয়ন পত্র জমা দেন হেলো সরকার। তারপর থেকে তিনি আড়াইহাজারেই যেতে পারেননি। কোন ধরনের নির্বাচনী প্রচারণায়ও তিনি নামতে পারেননি। সবশেষ গত ১৩ ফেব্রুয়ারি শাহজালাল মিয়া তার দলের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হেলো সরকারকে সমর্থন দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাড়ান। কিন্তু নির্বাচন থেকে সরে যায়নি উপজেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি ও এমপি নজরুল ইসলাম বাবুুর ভাগিনা ইকবাল হোসেন মোল্লা। তিনি গত ১৪ মার্চ বৃহস্পতিবার আনারস প্রতীক পেয়েছেন। তিনি হুংকারও দিয়েছেন আড়াইহাজারে নির্বাচনী আচরণের বাহিরে কাউকে কিছু করতে দেয়া হবে না।
জানাগেছে, গত ৩০ ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনের বছর খানিক আগে থেকেই হেলো সরকার এমপি বাবুর বিরোধীতা করে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইকবাল পারভেজের পক্ষে কাজ করেন। ইকবাল পারভেজ ওই নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের মনোনয়ন প্রত্যাশি ছিলেন। ইকবালের পক্ষে প্রচারণা চালাতে গিয়ে বিভিন্ন সময় এমপি বাবুর নানা কর্মকান্ডের সমালোচনা করে বক্তব্য রেখেছিলেন হেলো সরকার। কিন্তু শেষ পর্যন্ত নৌকা প্রতীক পেয়ে তৃতীয় বারের মত এমপি নির্বাচিত হন নজরুল ইসলাম বাবু। যদিও নির্বাচনের আগ নাগাদ এমপি বাবুর সঙ্গে মাঠে নামেন হেলো সরকার। গত ১৩ মার্চ শাহজালাল মিয়া তার মনোনয়ন প্রত্যাহারের দিন হেলো সরকার বলেছেন, ‘আড়াইহাজারে আমার নেতা নজরুল ইসলাম বাবু।’
এদিকে স্থানীয়রা বলছেন, আড়াইহাজারে হেলো সরকারের যে জনপ্রিয়তা তাতে ইকবাল হোসেন মোল্লার সঙ্গে ভোটের লড়াইয়ে জয়ী হওয়াটা কঠিনই হবে। কারন আড়াইহাজারে হেলো সরকারের জনপ্রিয়তা নড়বড়ে। মুলত আড়াইহাজারের নির্বাচনটি অনেকটা সিলেকশনের দিকেই ছিল। কিন্তু স্থানীয় এমপির নিয়ন্ত্রণের বাহিরে চলে গেছেন ইকবাল হোসেন মোল্লা। যে কারনে তাকে নির্বাচন থেকে বসানো যায়নি। যদিও ভাইস চেয়ারম্যান পদে রফিকুল ইসলাম ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে একক প্রার্থী হিসেবে দুজনই বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। কিন্তু ইকবাল হোসেন মোল্লা আনারস প্রতীক নিয়ে মাঠে থাকায় হেলো সরকারের নৌকার বিজয় নিয়ে রয়েছে শঙ্কা। তবে শেষ পর্যন্ত ইকবাল হোসেন মোল্লা নির্বাচনে টিকতে পারবেন কিনা তা নিয়েও রয়েছে বেশ সংশয়।