নারায়ণগঞ্জে অব্যাহত সাংবাদিকদের বিক্ষোভ মিছিল আন্দোলন

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

এবার অনুসন্ধানী সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে হেনস্তাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও অযৌক্তিক হয়রানীকমূলক মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদবন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচী পালন করেছে নারায়ণগঞ্জ সিটি প্রেসক্লাব।

২৩ মে রবিবার বেলা সাড়ে ১১টায় সংগঠনটির সভাপতি সাইফুল্লাহ মাহমুদ টিটুর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক- সৈয়দ সিফাত আল রহমান লিংকনের পরিচালনায় মহানগরীর চাষাড়া বিজয় স্তম্ভে এ আয়োজন করা হয়।

এ সময় রোজিনা ইসলামের জামিন মঞ্জুর হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিচার বিভাগকে ধন্যবাদ জানিয়ে অবিলম্বে সরকারের ভাবমুর্তি রক্ষায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে ন্যাক্কারজনক ঘটনায় জড়িত প্রত্যেককে দ্রুত গ্রেপ্তার করে মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানায় সকল সাংবাদিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

সিটি প্রেসক্লাবের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক বদরুজ্জামান রতন ও আইন বিষয়ক সম্পাদক বদিউজ্জামান খানের যৌথ সঞ্চালনায় এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ ফটো র্জানালিস্ট নারায়ণগঞ্জ শাখার সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম সবুজ, ফতুল্লা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম, সাংগঠনিক সম্পাদক নিয়াজ মোহাম্মদ মাসুদ, ফতুল্লা মডেল প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদ আহম্মেদ বাঁধন, জেলা রিপোর্টাস ইউনিটির সভাপতি শহিদুল্লাহ রাসেল, সিনিয়র সাংবাদিক মো. কামাল হোসেন, সংবাদ মাধ্যম নিউজ এটুজেড এর সম্পাদক রফিকুল্লাহ রিপন।

এ সময় বক্তব্যকালে নারায়ণগঞ্জ সিটি প্রেসক্লাব এর সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সিফাত আল রহমান লিংকন বলেন, একজন প্রতিষ্ঠিত অনুসন্ধানী সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে মুক্তি দেওয়ায় বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সু-বিচার, ন্যায় প্রতিষ্ঠার পক্ষে থাকায় বিচার বিভাগকে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। তবে জামিনটা হলো শর্ত সাপেক্ষে, যা আমরা চেয়েছিলাম নি:শর্ত মুক্তি। এখন আমাদের একটাই দাবী অবিলম্বে সরকারের ভাবমুর্তি রক্ষা করতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে ন্যাক্কারজনক ঘটনায় জড়িত প্রত্যেককে দ্রæত গ্রেফতার করে মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। কারন যে মামলা দেয়া হয়েছে তা ভিত্তিহীন। কেনো তাকে তাহলে সেই নথি উদ্ধার দেখানো হলো না। আমরা রোজিনা ইসলামের এই অন্তর্ভতিকালীন জামিনে খুশি নই, তাই তার মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। আর যারা রোজিনা ইসলামকে হেনস্তা করেছে তাদের প্রক্যেকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।

ফতুল্লা প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম বলেন, একজন সাংবাদিকের মৌলিক অধিকার তথ্য সংগ্রহ করা। আর সেই অধিকার আদায় করতে গিয়ে রোজিনা ইসলামের সাথে যে ঘটনা ঘটেছে তা খুবই ন্যাক্কারজনক। সাংবাদিকরা দেশ ও জাতির স্বার্থে অপরাধীদের তথ্য সংগ্রহ করে প্রতিবেদনের মাধম্যে তুলে ধরে। সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম অন্যায়ের বিরুদ্ধে এক আলোর প্রতিক, আমরা চাই সকল সাংবাদিকদের আন্দোলনের সাথে সহমত পোষন করে রোজিনা ইসলামেকে নি:শর্ত মুক্তিই নয়, দোষীদের গ্রেফতার করা হোক। তাহলে যুগে যুগে রোজিনারা আমাদের মাঝে বেঁচে থাকবে আলোর মশাল হয়ে!

ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন নারায়ণগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম সবুজ বলেন, রোজিনা ইসলামের জামিন মঞ্জুর করায় আমরা খুশি নই। আর তা নিয়ে বসে থাকবে না। এ আন্দোলন চলবে। তাছাড়া রোজনিা ইসলামকে হেনস্থাকারীদের অবিলম্বে দ্রæত গ্রেফতার ও বিচারের দাবি জানাচ্ছি। সেই সাথে স্বাস্থ্য মন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি জানাচ্ছি। রোজিনা ইসলাম যে কত বড় সাংবাদিক তার প্রমাণ সারাদেশে রোজিনা ইসলামের মুক্তির দাবিতে সাংবাদিকদের মানববন্ধন ও বিক্ষোভ। তাই আসুন আমরা সাংবাদিকরা ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

নারায়ণগঞ্জ জেলা রিপোর্টারস ইউনিটির সভাপতি রাসেল বলেন, রোজিনা ইসলামকে যে শর্ত সাপেক্ষে জামিন দিয়েছে তার আমি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। আসল ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতেই পরিকল্পিতভাবে রোজিনা ইসলামকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হয়েছে। অবিলম্বে সেই দুর্নীতি বাজ জয়বুনেছার বিরুদ্ধে সুষ্ঠ তদন্তের দাবি জানাচ্ছি। সে দুর্নীতি করে কোটি কোটি টাকা কামিয়েছেন। অবিলম্বে তার এসকল দুর্নীতির তদন্তের দাবি জানাচ্ছি। আর বলতে চাই মামলা দিয়ে সাংবাদিকদের কন্ঠ রোধ করা যাবে না।

সমাপনি বক্তব্যে নারায়ণগঞ্জ সিটি প্রেসক্লাবের সভাপতি সাইফুল্লাহ মাহমুদ টিটু বলেছেন, সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে পাঁচ ঘন্টার বেশি সময় আটকে রেখে পুলিশের কাছে হস্তান্তরের পর তথ্য চুরির অভিযোগে মামলা করা হয়েছে। যা ছিল সম্পূর্ন উদ্দেশ্য প্রনোদিত। রোজিনা ইসলামের জামিন হয়েছে সত্য কিন্তু আমার কেউ খুশি হতে পারিনি কারন আমরা শুধু জামিন চাইনি, মামলা প্রত্যাহার চেয়েছি। নিজেদের বেপরোয়া লুটপাট ও চুরি আড়াল করতেই তথ্য চুরির মিথ্যা নাটক সাজিয়ে সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে হয়রানীমূলক মামলা দেওয়া হয়েছে। অবিলম্বে রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার সহ দোষীদের দ্রæত গ্রেফতার করে ঘটনার সাথে জড়িত সকল কর্মকর্তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। তা না হলে আমি বলবো আমাদের সাংবাদিকদের আন্দোলন চলছে এবং চলবেই।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ সিটি প্রেসক্লাব এর সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুজ্জামান কাউসার, অর্থ সম্পাদক জাহিরুল ইসলাম মোল্লা সাগর, ক্রিড়া সম্পাদক রবিউল ইসলাম, দপ্তর সম্পাদক রাশিদ চৌধুরী, তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আলতাফ হোসেন রাজিব, কার্যকরি সদস্য আসলাম হোসেন, জাতীয় দৈনিক খোলা কাগজের বন্দর প্রতিনিধি আক্তার হোসেন তালুকদার, সাংবাদিক মো.সুজন হোসেন, সৈয়দ রিফাত আল রহমান, আব্দুল লতিফ রানা, মেহেদী হাসান, আবু তাহের, ফটো সাংবাদিক নুর হোসেন, শফিকুল ইসলাম সাগর, ফটো সাংবাদিক মো.জুয়েল আলী, সাব্বির আহম্মেদ ফয়সাল, নারায়ণগঞ্জ সংবাদ এর মো.আকবর এবং এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন,-বাংলাদেশ আলোর বন্দর প্রতিনিধি মনির, সময়ের কাগজের বন্দর প্রতিনিধি সানাউল্লাহ, আমার সংবাদের সদর প্রতিনিধি জসিম উদ্দিন, নিউজ২৪ নারায়ণগঞ্জের সম্পাদক মিঠুন সরদার, গাফ্ফার লিটন, যুগের চিন্তা স্টাফ রিপোর্টার মামুন, জহির, আনন্দ টিভির ক্যামেরা পার্সন সাব্বির, মাই টিভির ক্যামেরা পার্সন আশিক, আলোর ধারা ২৪ এর ক্যামেরা পার্সন রাব্বি, বিশিষ্ট সমাজ সেবক আনোয়ার, বাংলাদেশ কথার সহ সম্পাদক মিরাজ আরফিন, নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ এর ফটো সাংবাদিক সাজ্জাদ ইমন, ভোরে সমাচারের ফটো সাংবাদিক শহিদ, সবার কন্ঠ পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার মনিকা আত্তার, রুদ্রবার্তা স্টাফ রিপোর্টার সোনিয়া, বাংলা ৭১ পত্রিকার সদর প্রতিনিধি শান্ত প্রমুখ।