এ কেমন ছাত্রদল, অছাত্রদের দিয়ে যাতাবস্থা!

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জে শুরুতেই ছাত্রদলের কমিটি গঠন নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক। নানা ধরনের বিতর্কের মাঝেই ইতিমধ্যে মহানগর ছাত্রদলের দীর্ঘ তালিকাকারের একটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়েছে। একইভাবে জেলা ছাত্রদলেরও আংশিক কমিটি গঠন করা হয়। দুটি কমিটির দুচারজন ছাত্রদল নেতাদের গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাঠে দেখা যায়নি ধানের শীষ প্রতীকের কোন প্রার্থীর পক্ষে। অধিকাংশরা ছিলেন উপটোকেনে ম্যানেজ প্রক্রিয়ায়।

নারায়ণগঞ্জের ছাত্রদলের কমিটিতে নিয়মিত ছাত্রের তালিকায় নেই দুচার জনও। অনেক পাঁচ ক্লাস পাস কিংবা ছয় ক্লাস পাস আবার স্বশিক্ষিতদেরও রাখা হয় ছাত্রদলের কমিটিতে। যে কারনে অনেকেই বলছেন নারায়ণগঞ্জে এই দুই কমিটি ছাত্রদের সংগঠন নয় এগুলো অছাত্রদের সংগঠন। যা নিয়ে ছাত্রলীগের নেতারা বারবার বলছেন অছাত্রদের কোন বিশ^বিদ্যালয় কলেজে স্থান দেয়া হবে না। কারন তারা বহিরাগত। সেই ছাত্রদলের কমিটি এ বছর মহান ভাষা শহীদদের স্মরণে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও শহীদ দিবসটি পালন করেনি। দুএকজনকে ব্যক্তিগতভাবে শহীদ মিনার বেদীতে ফুল দিতে দেখা গেলেও নারায়ণগঞ্জে বিএনপির ছাত্র সংগঠন রয়েছে তার অস্তিত্ব সেদিন দেখা যায়নি।

জানাগেছে, ২১ ফেব্রুয়ারি ছিল আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও শহীদ দিবস। আর এ দিনে সর্বস্তরের জনগণ দলমত নির্বিশেষে শ্রদ্ধা জানান ভাষা শহীদের প্রতি। ভাষা আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিল ছাত্র সংগঠনগুলোর নেতারা। কিন্তু নারায়ণগঞ্জ ছাত্রদলের পক্ষ থেকে দেখা যায়নি কোন শ্রদ্ধা জানানোর চিত্র।

১৯৫২ সালে ২১ শে ফেব্রুয়ারি পুলিশের ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররাই প্রথম বাংলা ভাষার দাবিতে ঢাকার রাজপথে নেমে এসেছিল। ভাষা আন্দোলনে ছাত্র সমাজেরই বেশি অবদান ছিল। ছাত্রদের তাজা রক্তে লাল হয়ে গিয়েছিল ঢাকার রাজপথ। বুক পেতে দিয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দামাল ছাত্ররা। বাংলার সেই সূর্য সন্তানদেরই শ্রদ্ধা জানাতে আসেনি নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদল ও মহানগনর ছাত্রদল।

জানাগেছে, নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদল সভাপতি মশিউর রহমান রনি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আগে জেলে চলে যান। রনি কারাগারে যাওয়ার পর সিনিয়র সহ-সভাপতি মোহাম্মদ উল্লাহ ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে ও সেক্রেটারি খায়রুল ইসলাম সজীব নিজেদের বগলতলার পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের চেষ্টা করেন। ঠিক একইভাবে সজীব কারাগারে গেলে রনিও একই কায়দায় কমিটি গঠনের চেষ্টা করেছিলন। পদ পদবী ও নিয়ন্ত্রনের লোভ থাকলেও ছাত্র সংগঠন হিসেবে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনে তাদের কোন উদ্যোগ দেখা গেল না।

এদিকে একই পরিস্থিতিতে নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রদলের নেতাদের। পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করলেও কমিটির সকল নেতাদের নিয়ে এখনও সভাও করতে পারেননি নেতারা। গত জাতীয় নির্বাচনে উপটোকেন পেয়ে অনেক নেতারা কাজ করেছিলেন সরকারি দলের প্রার্থীদের পক্ষে। মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি সাহেদ আহম্মেদ, সিনিয়র সহ-সভাপতি রাফিউদ্দীন রিয়াদ ও সেক্রেটারি মমিনুর রহমান বাবুকে গত নির্বাচনের আগে থেকেই নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে দেখা যায়নি। রিয়াদ নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর রাজনীতি ছেড়ে আড়াইহাজারে গিয়ে রাজনীতি করছিলেন।