শেখ রাসেল স্টেডিয়ামের সম্প্রসারণ: ফিল্ড পরিচর্যায় এমপি খোকা

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধে শিক্ষার্থীদের অনেকেই জড়িয়ে যাচ্ছিল নানা অপরাধমুলক কর্মকান্ডে। আসক্তি হচ্ছিল মোবাইল ফোনে। যুব সমাজ দিন দিন ঝুঁকছে মাদকের দিকে। এমন পরিস্থিতিতে খেলার মাঠ থেকে ছাত্র ও সমাজ যখন দুরে তখন ছাত্র ও যুব সমাজকে খেলার মাঠে ফেরানোর কৌশল হাতে নিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ-৩(সোনারগাঁও) আসনের সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা, উপজেলা নির্বাহী অফিসার আতিকুল ইসলাম, উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম ইকবাল।

এদিকে গত ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে অনুষ্ঠিতব্য শেখ রাসেল স্টেডিয়ামে চলছে বঙ্গবন্ধু মুজিববর্ষ গোল্ডকাপ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট। টুর্নামেন্টের প্রথম পর্বের খেলা শেষে কোয়ার্টার ফাইনাল রাউন্ডের খেলা চলছে। ১৩ মার্চ শনিবার প্রথম কোয়ার্টার ফাইনাল খেলায় জামপুর কিংসকে হারিয়ে সেমিফাইনালে ওঠেছে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের টিম কিংস এলিভেন সোনারগাঁও।

এর আগের দিন শুক্রবার নতুন আঙ্গিকে মাঠটি সম্প্রাসরণের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। মাঠ সম্প্রসারণের কাজ পরিদর্শনে গিয়ে নিজেই পরিচর্যায় নেমে যান এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা।

উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম ইকবাল জানান, ‘সোনারগাঁয়ে মুজিববর্ষ গোল্ডকাপ ক্রিকেট টুর্নামেন্টের কোয়ার্টার ফাইনাল খেলা শুরু হয়েছে ১৩ই মার্চ। এর মধ্যেই দ্রুত গতিতে মাঠ সম্প্রসারণ ও নতুন পিচ তৈরীর কাজ সম্পন্ন হয়েছে সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার আতিকুল ইসলামের নির্দেশে। যা বাস্তবায়নে উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সকলে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। কিছুক্ষণ পর পর মাঠে চলে আসেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার আতিকুল ইসলাম। তিনি সকল প্রকার দিকনির্দেশনা দেন। এরই মধ্যে ছুটে আসেন সোনারগাঁয়ের উন্নয়নের রুপকার সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা। সকলকে উৎসাহ দিতে তিনি নিজেই উপজেলা নির্বাহী অফিসার আতিকুল ইসলামের সাথে নিয়ে রোলার দিয়ে মাঠ সমতলের কাজে যোগ দেন। ধন্যবাদ সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা কে। এভাবেই আপনি সাধারণ মানুষের মাঝে মিশে থাকবেন এই কামনা করি।’

এদিকে স্থানীয়রা বলছেন, নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে যখন ছাত্র-যুব সমাজ মাদক ও কিশোর গ্যাংয়ে জড়িয়ে যাচ্ছিলো তখন ছাত্র-যুব সমাজকে খেলার মাঠে ফেরাচ্ছেন নারায়ণগঞ্জ-৩(সোনারগাঁ) আসনের সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা, উপজেলা নির্বাহী অফিসার আতিকুল ইসলাম ও উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম ইকবাল।

একই সঙ্গে ছাত্র ও যুব সমাজ যখন মোবাইল আসক্ত হচ্ছিল এখন তারাও ব্যাট বল হাতে খেলার মাঠে দৌড়াচ্ছে। করোনা পরিস্থিতিতে যখন লেখাপড়া স্থবির তখন ছাত্র সমাজ যাতে নানা অপকর্মে জড়াতে না পারে সেজন্য টনিক হিসেবে কাজ করছে সোনারগাঁয়ের ক্রিকেট উৎসব। কয়েক দিন যাবত চলছে সোনারগাঁয়ে ক্রিকেট উৎসব।

এসব ছাড়াও মহান স্বাধীনতার স্থপতি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে এবং স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে যেনো নতুন প্রজন্মের মাঝে বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতার ইতিহাস তুলে ধরা যায় সেজন্য এই ক্রিকেট উৎসব। এসব ক্রিকেট উৎসবে সম্পৃক্ত রয়েছেন বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধিরাও।

গত ২২ ফেব্রয়ারি সোমবার নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে মুজিববর্ষ গোল্ডকাপ ক্রিকেট টুর্ণামেন্টের উদ্বোধন করা হয়। সোনারগাঁও উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক আয়োজিত এবং সোনারগাঁও উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সহযোগিতায় সোনারগাঁও শেখ রাসেল স্টেডিয়ামে এই ক্রিকেট টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ‘করোনাকালের মানবতার ফেরিওয়ালা’ আমজনতার নেতা এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেছিলেন সোনারগাঁও উপজেলা নির্বাহী অফিসার আতিকুল ইসলাম।

সোনারগাঁও শেখ রাসেল স্টেডিয়ামটি সম্প্রসারণে মাটি ভরাটের জন্য আরো ৫ লাখ টাকা বরাদ্ধ দিয়েছেন বলে সান নারায়ণগঞ্জকে জানিয়েছেন এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা। বরাদ্ধ ঘোষণার তিন দিনের মাথায় মাঠ সম্প্র্রসারণের কাজ শুরু হয়। একই সঙ্গে পাশের একটি ফ্যাক্টরীর অবৈধ দখলে থাকা জায়গা উদ্ধার করে একটি বৃহতর স্টেডিয়াম ও জাতীয় ক্রিকেট একাডেমী তৈরির চেষ্টা করছেন বলেও তিনি জানান। তিনি স্বপ্ন দেখছেন সোনারগাঁও থেকে জাতীয় মানের ক্রিকেটার তৈরি হবে এমনটাই চান।

টুর্নামেন্টের প্রায় প্র্রতিটি খেলার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে ছিলেন নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা। তিনি নিজ হাতে ম্যাচ সেরার পুরস্কার ও অন্যান্য পুরস্কার খেলোয়ারদের মাঝে তুলে দেন।

পুরস্কার বিতরণী এক অনুষ্ঠানে এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা বলেছিলেন, ক্রিকেটের সাথে আমার আত্মার সম্পর্ক। দীর্ঘদিন ক্রিকেটের সাথে কাজ করেছি। আমি ৮৩ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ জেলা ক্রীড়া সংস্থার ক্রিকেট সেক্রেটারি ছিলাম। আমরা সোনারগাঁয়ে বড় মাপের আধুনিক প্রক্রিয়ায় একটি ক্রিকেট একাডেমী তৈরির চেষ্টা করছি, যাতে আমাদের সন্তানেরা এখান থেকে খেলা শিখে জাতীয় মানের ক্রিকেটার হতে পারে। তারা লীগ খেলবে, জাতীয় দলে খেলা, ওয়ার্ল্ডকাপে খেলবে, আমরা টিভিতে যেনো তাদের দেখতে পারি। সেই দিনটাই আমি দেখে যেতে চাই এটাই আমার কামনা।

২৭ ফেব্রুয়ারি শনিবার এই ক্রিকেট উৎসবে নতুন মাত্রা যোগ হয় যখন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক মোহাম্মদ আশরাফুল, জাতীয় দলের ক্রিকেটার আরাফাত সানি, সামসুর রহমান শুভ, রনি তালুকদারদের মত ক্রিকেটাররা এই টুর্নামেন্টের খেলায় অংশগ্রহণ করছেন। এরপর জাতীয় দলের হার্টহিটার ব্যাটসম্যান সাব্বির রহমান রুমনও খেলেছেন।

জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের অংশগ্রহণের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আতিকুল ইসলাম বলেছিলেন, ম্যাচগুলো হচ্ছে আনন্দদায়ক এবং প্রতিদ্বন্ধিতাপূর্ণ। কারন জাতীয় দলের খেলোয়াররা এসেছেন। মাঠে উপচে পড়া ভীড় দেখতে পাচ্ছি। সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। জাতির পিতার জন্মশত বার্ষিকীকে স্মরণীয় করে রাখার জন্যই আমাদের এই আয়োজন। জাতির পিতার স্মৃতি জন্মশত বার্ষিকী ছড়িয়ে দিতেই এই আয়োজন। আমরা বিশ্বাস করি টুর্নামেন্ট সফল হয়েছে এবং আরো সফল হবে।