গিয়াসকে পল্টি, কমিটি বহাল রাখতে শাহআলমের কোটি টাকার প্রস্তাব!

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠনের কয়েক মাস পেরিয়ে গেলেও থানা/উপজেলা কমিটি গঠনের কোন উদ্যোগ নিতে পারেনি বর্তমান আহ্বায়ক কমিটি। অথচ কমিটির প্রথম বর্ধিত সভায় দাবি ওঠেছিল জেলার থানা/উপজেলা কমিটিগুলো ভেঙ্গে দেয়া হোক। কিন্তু সেটা করা হয়নি। এর পেছনের কারন ফতুল্লা থানা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটিকে ইচ্ছে করে ঝুঁলিয়ে রাখা হয়। কারন এটা প্রভাবশালী শিল্পপতি মুহাম্মদ শাহআলমের নিয়ন্ত্রিত কমিটি।

তবে যে আশায় আহ্বায়ক কমিটি হওয়ার পূর্বে আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকারকে সহযোগীতা করেছিলেন সাবেক এমপি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দীন। সেই আশা আর পুরণ হচ্ছেনা। কারন বর্তমান আহ্বায়ক কমিটি বহাল রাখতে জেলা বিএনপির বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির বরাবর কোটি টাকার প্রস্তাব এসেছে বলে বিশ্বস্থ সূত্রে জানাগেল।

যদিও গত ৩০ ডিসেম্বর অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকারকে আহ্বায়ক ও মামুন মাহামুদকে সদস্য সচিব করে ৪১ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটির অনুমোদন দেন কেন্দ্রীয় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তবে কমিটি গঠনের সময় শর্ত ছিল জেলা বিএনপির আহ্বায়ক পূর্ণাঙ্গ কমিটির সভাপতি হতে পারবেন না এবং তিন মাসের মধ্যে সকল থানা/উপজেলা কমিটি গঠন করে বিদায় নিবেন। কিন্তু তিন মাসের মাথায় জেলা বিএনপির বর্তমান কমিটির কোন প্রক্রিয়া দেখা যায়নি।

আহ্বায়ক কমিটি গঠনের কয়েক দিনের মাথায় ফতুল্লা থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি খন্দকার মনিরুল ইসলামের নেতৃত্বে সাবেক এমপি গিয়াস পন্থী বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে বৈঠক অনুষ্টিত হয় সিদ্দিরগঞ্জ হিরাঝিল এলাকার বাসায়। যাদেরকে নিয়ে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠনের পূর্বে সভা করেছিলেন তৈমূর আলম খন্দকারও।

কিন্তু বর্তমানে তাদেরকে পাশ কাটিয়ে শিল্পপতি মুহাম্মদ শাহআলমের ঘনিষ্টজন ফতুল্লা থানা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ বিশ্বাসকে দেখা যাচ্ছে তৈমূর অালমের পাশে। এর কারন হিসেবে জানতে গিয়ে বের হয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। ফতুল্লা থানা বিএনপির বর্তমান আহ্বায়ক কমিটি বহাল রাখতে শাহআলমের পক্ষ থেকে কোটি টাকার প্রস্তাব এসেছে জেলা বিএনপির শীর্ষ দুই নেতার কাছে। তাদের নমনীয় অবস্থানের কারনে বুঝা যাচ্ছে ফতুল্লা থানা বিএনপির কমিটি তারা ভাঙ্গতে যাচ্ছেন না।

ঘটনা সূত্রে জানাগেছে, ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসন থেকে মনোনয়ন চেয়েও পাননি শাহআলম। নির্বাচনের পর তিনি কান্নাকাটি করে ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতি ও জেলা বিএনপির সহ-সভাপতির পদ থেকে অব্যাহতি নেন। তবে কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য পদে বহাল রয়েছেন মুহাম্মদ শাহঅালম।

তবে ওই সময় অনেকটা রাতের অাধারে তৎকালীন জেলা বিএনপির সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান মনির ও সাধারণ সম্পাদক মামুন মাহামুদ ফতুুল্লা থানা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠন করে দেন। যেখানে আবুল কালাম আজাদ বিশ্বাসকে আহ্বায়ক ও নজরুল ইসলাম পান্না মোল্লাকে সদস্য সচিব করা হয়।

অথচ সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির আহ্বায়ক সফর আলী ভুঁইয়া নাই রাজনীতিতে। ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক আলী হোসেন প্রধান মারা গেছেন কয়েক বছর আগে। সদস্য সচিব মামুন মাহামুদ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব। সেখানে কমিটি না হলেও শাহআলমের অব্যাহতির আবেদনের সাথে সাথেই ফতুল্লায় কমিটি দেয়া হয়। তাও শাহআলমের অনুগামীদের হাতেই। যে কারনে ওই সময় লেনদেনের অভিযোগ ওঠেছিল। আবারও সেই কমিটি বহাল রাখতে জেলা বিএনপিকে প্রায় ম্যানেজ করে নিয়েছেন শাহআলম।

যেখানে ফতুল্লা থানা বিএনপির নেতৃত্বে আসার আলোচনায় রয়েছেন থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি খন্দকার মনিরুল ইসলাম, সাবেক সেক্রেটারি সম নুরুল ইসলাম, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক জাহিদ হাসান রোজেল, জেলা বিএনপির সদস্য রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরী, রুহুর আমিন সিকদার ছাড়াও থানা বিএনপির বেশকজন নেতা। কিন্তু এসব নেতাদের সামনে মুলা ঝুলিয়ে বহাল রাখার চেষ্টায় আজাদ বিশ্বাস ও পান্না মোল্লার কমিটি।