সেভেন মার্ডারে চন্দন সরকার হত্যার বিচার দাবিতে আমরাই আন্দোলন করেছিলাম: সাখাওয়াত

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

২০১৪ সালে নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য অ্যাডভোকেট চন্দন সরকার সহ সাত খুনের ঘটনা তুলে ধরে মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি ও আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান বলেছেন, সেভেন মার্ডারে চন্দন সরকার হত্যার বিচার দাবিতে আমরাই আন্দোলন করেছিলাম। তখন আমরা আইনজীবী সমিতির নেতৃত্বে ছিলাম। কিন্তু জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক আহ্বায়ক সাবেক এমপি এসএম আকরামের ভাই একজন আইনজীবীকে হত্যা করা হলেও তারা যখন সমিতির নেতৃত্বে ছিলেন তারা কোন আন্দোলন করেননি। তাই বিএনপির আইনজীবীরাই নির্যাতিত নিপীড়িত আইনজীবীদের পাশে থাকে সেটা অতীতেও প্রমাণ দিয়েছে। তাই হুমায়ুন-কামাল প্যানেলে আপনারা ভোট দিন।

২৬ জানুয়ারি মঙ্গলবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ কোর্টের উল্টো দিকের একটি রেস্তোরায় আগামী ২৮ জানুয়ারি জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে বিএনপির জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম সমর্থিত সম্মিলিত আইনজীবী ঐকফ্রন্ট প্যানেলের প্রার্থীদের পরিচিতি সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান। ওই পরিচিতি সভায় সাখাওয়াত হোসেন এসব কথা বলেন।

এ সময় প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার, বিশেষ বক্তা ছিলেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় নেতা ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দীন খোকন এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অধ্যাপক মামুন মাহামুদ।

এতে আরও বক্তব্য রাখেন মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি আব্দুস সবুর খান সেন্টু, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান, সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট আব্দুল বারী ভুঁইয়া, সাবেক সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট জাকির হোসেন, আইনজীবী ফোরামের সাবেক সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ খান ভাসানী ভুইয়া, সাবেক সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট খোরশেদ আলম মোল্লা সহ বেশকজন সিনিয়র আইনজীবী নেতা।

এর আগে মঙ্গলবার আদালতপাড়ায় বিএনপির আইনজীবীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে শোডাউন করেছেন। নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির বিগত নির্বাচনগুলোতে বিএনপির মাঝে তুমুল ফাটল ছিল চোখে পড়ার মতই। কিন্তু এবারের নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ আদালতপাড়ার রাজনীতিতে প্রকাশ্যে বিএনপির ঐক্য বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।

বিএনপির আইনজীবীদের নেতৃত্বে থাকা অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানের দাবি- বিএনপির এই ঐক্যবদ্ধ নির্বাচনী প্রচারণায় আওয়ামীলীগের বুকে কাপুনি ধরিয়ে দিয়েছে। যে কারনে তারা ছাত্রলীগ যুবলীগ স্বেচ্ছাসেবক লীগ নিয়ে আদালতপাড়ায় শোডাউন করে বিএনপির আইনজীবীদের ভয় দেখাতে চায়। আমরা বহিরাগতদের রক্তচক্ষুকে ভয় পাইনা। আমরা নির্বাচনের শেষ পর্যন্ত থাকবো ইনশাহআল্লাহ। বিএনপির ঐক্যে বিএনপির হুমায়ুন-কামাল প্যানেলের পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে।

আদালতপাড়ায় আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের অবস্থান নেয়ার বিষয়ে কঠোর সমালোচনা করে সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, আমরা চাই একটি সুষ্ঠ নিরপেক্ষ নির্বাচন। এটা আইনজীবীদের নির্বাচন, এই নির্বাচন সুষ্ঠ করার জন্য আমরা নির্বাচন কমিশনকে বলেছি কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য। কিন্তু নির্বাচন কমিশন তা করছে না। নির্বাচন কমিশন যে আচরণবিধি দিয়েছে তা আওয়ামীলীগ প্যানেল মানছেনা। তারা আচরণবিধি ভঙ্গ করছে কিন্তু নির্বাচন কমিশন কোন পদক্ষেপ নিচ্ছেনা।

তিনি বলেন, এখানে আইনজীবীদের নির্বাচন, এখানে বহিরাগতদের কোন স্থান নাই। আমাদের বিপরীত প্যানেল বহিরাগতদের আদালদপাড়ায় এনে নির্বাচনকে কুলসিত করছে। সরকারি দলের প্যানেল চায় না সাধারণ আইনজীবীরা নিরপেক্ষভাবে ভোট দিক। এখানে ভোটের পরিবেশ যেনো নষ্ট না করতে পারে সেজন্য সকল আইনজীবীকে সচেতন থাকতে হবে। আমরা ভোটের শেষ পর্যন্ত নির্বাচনী মাঠে থাকবো।

জানাগেছে, আওয়ামীলীগের বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ সমর্থিত সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী অ্যাডভোকেট মোহমীন মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান প্যানেলের পক্ষে নারায়ণগঞ্জ আদালতপাড়ায় আওয়ামীলীগ ও এর যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তিনদিন যাবত শোডাউন করেছেন। এই শোডাউনের বিষয়ে কঠোর সমালোচনা করছেন বিএনপির আইনজীবী নেতারা। সরকারি দলের নেতাকর্মীদের আদালতপাড়ায় বহিরাগত হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন তারা।

এসময় প্রার্থীদের সঙ্গে আইনজীবী নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান, সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট আব্দুল বারী ভুঁইয়া, সমিতির সাবেক সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট জাকির হোসেন, সাবেক পিপি অ্যাডভোকেট নবী হোসেন, অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ খান ভাসানী ভুঁইয়া, অ্যাডভোকেট আজিজুর রহমান মোল্লা, অ্যাডভোকেট রফিক আহাম্মেদ, অ্যাডভোকেট সামসুজ্জামান খোকা, অ্যাডভোকেট সৈয়দ মশিউর রহমান শাহিন, অ্যাডভোকেট রকিবুল হাসান শিমুল, অ্যাডভোকেট কাজী আবদুর গাফফার, অ্যাডভোকেট মাহমুদুল হক আলমগীর, অ্যাডভোকেট আবদুস সামাদ মোল্লা, অ্যাডভোকেট নুরুল আমিন মাসুম, অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম মাসুম, অ্যাডভোকেট আশরাফুল আলম সিরাজী রাসেল, অ্যাডভোকেট আল আমিন সিদ্দিকী, জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সিনিয়র সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট আজিজুল হক হান্টু, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ জাকির, যুগ্ম সম্পাদক অ্যাডভোকেট এইচএম আনোয়ার প্রধান, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট ওমর ফারুক নয়ন, আইনজীবী ফোরাম নেতা অ্যাডভোকেট শেখ আনজুম আহমেদ রিফাত, অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান ফাহিম, অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু সহ বিএনপিপন্থী কয়েকশ আইনজীবী।

বিএনপি সমর্থিত জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য ফ্রন্ট এর প্রার্থীরা হলেন সভাপতি পদে সরকার হুমায়ুন কবীর, সিনিয়র সহ সভাপতি মানিক মিয়া, সহ সভাপতি আনোয়ারুল আলম রিপন, সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেন মোল্লা, যুগ্ম সম্পাদক সালাহউদ্দিন ভূইয়া সবুজ, কোষাধ্যক্ষ জাহিদুল ইসলাম মুক্তা, আপ্যায়ন সম্পাদক জাহিদুর রহমান, লাইব্রেরী সম্পাদক মোহসীন মিয়া, ক্রীড়া সম্পাদক গোলাম সারোয়ার, সাহিত্য সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক সারোয়ার জাহান, সমাজ সেবা সম্পাদক আসমা হেলেন বিথি, আইন ও মানবাধীকার বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম।

কার্যকরী সদস্য পদে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন মোস্তাফিজুর রহমান শুক্কুর মাহমুদ, হাবিবুর রহমান, আসিয়া সুলতানা জেমী, হাফিজুর রহমান মাসুদ ও জামান হোসেন।