‘অগণতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হুমায়ুন-জাকির প্যানেলকে ভোট দিন’

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সম্মেলনে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এইচএম আনোয়ার প্রধান বলেন, ফোরামের সম্মেলনে হুমায়ুন-জাকির প্যানেলে আমি যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে দাঁড়িয়েছি। আপনারা সকলেই আমাদের সকলের সম্পর্কে অবগত আছেন। সুতরাং আমাদের নিজেকে নতুন করে পরিচয় দেয়ার কিছু নেই। আমরা কে কেমন, কার চরিত্র কেমন তা সবটুকুই আপনারা জানেন, সেখানে কারো বিরুদ্ধে বিষোদগার করার কিংবা আলোচনা করার কোন সুযোগ নেই। নেতৃত্বের প্রতিযোগীতায় আমরা যদি আপনাদের মনের কোঠায় আমরা থেকে থাকি তাহলে আমাদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন। শেখ হাসিনার অগণতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে আমরা যেনো রুখে দাঁড়াতে পারি সেই লক্ষ্যে হুমায়ুন-জাকির প্যানেলের সকলকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন বলে আমরা বিশ্বাস করি।

বিএনপির আইনজীবীদের সংগঠন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার কমিটি গঠনকল্পে ৯ ডিসেম্বর বুধবার ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এই সম্মেলনকে কেন্দ্র করে সভাপতি পদে অ্যাডভোকেট সরকার হুমায়ুন কবির ও সাধারণ সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ জাকির প্যানেলের পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

৮ ডিসেম্বর মঙ্গলবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ নতুন কোর্টের উল্টো দিকের একটি চাইনিজ রেস্তোরায় প্রায় আড়াই শতাধিক আইনজীবীর উপস্থিতিতে এই পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুল বাতেন মিয়া।

সভায় অ্যাডভোকেট সালাউদ্দীন ভুঁইয়া সবুজের দৃষ্টিনন্দিত সঞ্চালনায় নারায়ণগঞ্জ জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোরশেদ আলম মোল্লার সভাপতিত্বে পরিচিতি সভার শুরুতে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন জেলা জাতীয়তাবাদী আইন ছাত্র ফোরামের সভাপতি অ্যাডভোকেট কেএম সুমন।

এ ছাড়াও হুমায়ুন-জাকির প্যানেলের ৫ আইনজীবীর পক্ষে ভোট প্রার্থনা করে বক্তব্য রাখেন- অ্যাডভোকেট সৈয়দ মশিউর রহমান শাহিন, অ্যাডভোকেট শাহআলম মিয়া, অ্যাডভোকেট কাউসার আলম চৌধুরী টুটুল, অ্যাডভোকেট আলম খান, অ্যাডভোকেট শামীমা আক্তার, অ্যাডভোকেট ফাতেমা মাসুদ, অ্যাডভোকেট রিয়াজুল ইসলাম আজাদ, অ্যাডভোকেট কাজী আব্দুর গাফফার, অ্যাডভোকেট গোলজার হোসেন, অ্যাডভোকেট মাহমুদুল হক আলমগীর, অ্যাডভোকেট মানিক মিয়া, অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম মাসুম, জেলা শহীদ জিয়া আইনজীবী পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট জাহিদুল ইসলাম মুক্তা, অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ সহ অন্যান্য সিনিয়র ও জুনিয়র আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।

পরিচিতি সভায় উপস্থিত সকল আইনজীবীদের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে সভাপতি প্রার্থী অ্যাডভোকেট সরকার হুমায়ুন কবির তার বক্তব্যে বলেন, আমরা একটি গণতন্ত্র চর্চা করছি তাই আমার সঙ্গে যারা প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন তাদেরকেও ধন্যবাদ জানাই। আমরাই নির্বাচন চেয়েছি, তারা কিন্তু নির্বাচন চায়নি। তারা নির্বাচন বন্ধ করার জন্য, সিলেকশন করার জন্য তারা অনেক চেষ্টা করেছিল। কিন্তু শহীদ জিয়াউর রহমানের সুযোগ্য সন্তান তারেক রহমানের নির্দেশনায় আজকের এই নির্বাচন। একমাত্র তারেক রহমানের নির্দেশেই নির্বাচন হচ্ছে, অনেকেই ষড়যন্ত্র করেছিল কিন্তু তারা পারেনি।

তিনি আরও বলেন, আমি জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামে নতুন কেউ নই। এখানে আমরাই আইনজীবী ফোরাম প্রতিষ্ঠা করেছি। আজকে আইনজীবী ফোরাম এই পর্যায়ে এসেছে। আমার পরিচয় আপনারা জানেন। আমি শহীদ জিয়াউর রহমানের কাছে ৪’শ ছাত্রদলের কর্মী নিয়ে ছাত্রদলে যোগদান করেছিলাম, আমি যখন নির্যাতিত হই তখন আমার নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আমার বাসায় আমাকে দেখতে এসেছিলেন। আমি যখন ল পরীক্ষা দিব, তখন আমাকে মিথ্যা ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় আমাকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়। আমি দেশে একমাত্র নির্যাতিত আইনজীবী যে কারাগারে থেকে পরীক্ষা দিয়ে ল পাশ করেছি।

সরকার হুমায়ুন কবির বলেন, আজকে আমাদের বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার করা হচ্ছে, কিন্তু যারা আওয়ামীলীগের সঙ্গে দালালি করে তাদের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ আসে না।

তিনি বলেন, এই ফোরামের নির্বাচনে যদি আমাকে আমার প্যানেলকে ভালবাসেন তাহলে দয়া করে আমাদেরকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করুন। আমরা দূর্দিনে দলের পতাকা ধরি, তারা দূর্দিনে পিছিয়ে যান, আজকে আমাদের সঙ্গে যেভাবে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন তাদেরকে বলবো আগামী জানুয়ারি মাসে আইনজীবী সমিতির নির্বাচন, সেই নির্বাচনে আপনারা প্রতিদ্বন্ধিতা কইরেন, আমরা আপনাদের দাড় করাতে চাই। কিন্তু আপনারা নির্বাচনে তো দাড়ান না। আমরা দুঃসময়ে বার নির্বাচন করি, কিন্তু তারা পালিয়ে থাকে।

সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ জাকির সকলের কাছে ভোট প্রার্থনা করে বলেন, গত ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে রাতের জাতীয় নির্বাচন হলো। সেই নির্বাচনের পর আইনজীবী সমিতির নির্বাচন, সেই নির্বাচনে কেউ প্রার্থী হতে চাইলো না, কেউ দাঁড়ানোর সাহস পাচ্ছিল না, সাহসী লোকের অভাব ছিল, তখন সেই সময় আওয়ামী সরকারের রক্তচুক্ষুর সামনে আমি ও সরকার হুমায়ুন কবির নির্বাচনে দাঁড়িয়েছি। আপনারা আমাদের পাশে ছিলেন, অনেক ভয় ভীতি হুমকি ধমকির মাঝে আমরা নির্বাচন করেছি, কিন্তু আওয়ামীলীগ আমাদের জয় ছিনিয়ে নিয়েছিল। আমরা সেই সময় নির্বাচন করেছিলাম। তাই বলতে চাই ফোরামের সম্মেলনে আপনারা সেই বিষয়গুলো বিবেচনায় আনবেন।

নির্বাচনে অপপ্রচারের অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, বিভিন্ন পত্রিকায় আমাদের বিরুদ্ধে রিপোর্ট আসে, যে সকল রিপোর্ট আসে আমরা কিন্তু সেই সব বিষয়ে কোন তথ্য সাংবাদিকদের দেইনা। আমরাও অনেক তথ্য দিতে পারতাম। আমরা ফোরামে নির্বাচিত হলেও কারো বিরুদ্ধে নূন্যতম কোন বক্তব্য দিব না, আমরা ধরে নিব সকলেই আমাদের ভোট দিয়েছেন। আমরা কারো বিরুদ্ধে এখনও বলছিনা, সম্মেলনের পরেও বলবো না। আমরা বারের গত দুই নির্বাচনে দাঁড়িয়েছিলাম, আমরা পরাজিত হলেও কখনও বলিনি উনি আমাকে ভোট দেয়নি, আমরা ধরে নিয়েছি আপনারা সকলে ভোট দিতে পারলে আমরা নির্বাচিত হতাম। ফোরামে নির্বাচিত হলে আমরা সকলকে নিয়ে কাজ করবো। সকলের কাছে আমাদের নিবেদন আমাদের কোন ভুলভ্রান্তি থাকলে ক্ষমা করে দিয়ে আমাদের ভোট দিবেন।

সিনিয়র সহ-সভাপতি প্রার্থী অ্যাডভোকেট খন্দকার আজিজুল হক হান্টু বলেন, দীর্ঘ ৩৬ বছর পর নির্বাচনে এসেছি, আমি ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ে ছাত্রদলের রাজনীতি করেছি, প্রতিষ্ঠা কমিটিতে আমি সদস্য ছিলাম এবং সূর্যসেন হলের আমি জিএস ছিলাম। বাংলাদেশ ছাত্রদলের প্রথম নির্বাচনে আমি অংশগ্রহণ করেছিলাম। আপনারা আমাকে সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে ফোরামের সম্মেলনে মনোনয়ন দিয়েছেন। ইনশাহআল্লাহ আপনাদের কাছে ওয়াদা করি যদি আমাকে নির্বাচিত করেন আমি সবার আগে গণতন্ত্রের যুদ্ধে অংশগ্রহণ করবো। আপনারাও আমাদের পাবেন। আমি সামনে মুখ দিয়ে সামনে চলাচল করতে অভ্যস্ত, দৌড়াইয়ে পিছিয়ে যাওয়ার মানুষ আমি নই। আমাকে যদি আপনারা উপযুক্ত মনে করেন আমাকে দয়া করে ভোট দিবেন। আপনাদের কাছে যদি আমার কোন অন্যায় হয়ে থাকে তাহলে আমাকে ক্ষমা করে দিবেন।

সাংগঠনিক সম্পাদক প্রার্থী অ্যাডভোকেট একেএম ওমর ফারুক নয়ন বলেন, যদি আমি আমার কর্মকান্ড দলের জন্য করে থাকি, ভুমিকা রেখে থাকি, জ্ঞান মেধা শ্রম দিয়ে থাকি, তাহলে কোরজোড় মিনতি করছি আমাকে ভোট দিয়েন দয়া করে, এই প্যানেলকে দয়া করে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন। আমি কোন ভুলত্রুটি করে থাকলে সকলের কাছে ক্ষমা চাই, আমি আপনাদের সেবা করতে চাই, সকলের ছোট ভাই হিসেবে থাকতে চাই।