গায়েবী মামলার জন্য জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে: তৈমূর আলম

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

বিএনপির চেয়ারপাসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার বলেছেন, ক্ষমতা ব্যবহার করে মিথ্যা সাজানো গায়েবী মামলা দিয়ে বিএনপির লাখ লাখ নেতাকর্মীকে হয়রানি করা হচ্ছে। এইসব গায়েবী মামলা ইতিহাস হয়ে থাকবে। জাতি কখনও ক্ষমা করবে না। একদিন এসব গায়েবী মামলার জবাব জনগণকে দিতে হবে এবং জনগণের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।

১৪ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আনিসুর রহমানের আদালত থেকে রূপগঞ্জ থানার দুটি নাশকতার মামলায় জামিন পাওয়ার পর সাংবাদিকদের কাছে এসব কথা বলেন তৈমূর আলম খন্দকার।

তৈমূর আলম খন্দকার বলেন, ইসা নবীকে ক্রুসবিদ্ধ করে হত্যা করা হয়েছিল। ফ্রান্স রেভুলেশনের সময় ২০ হাজার মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল। জার্মানিতে নাজি গ্রুপ ক্ষমতায় থাকার জন্য সেখানে গণহত্যা করেছিল। এসব কিন্তু ইতিহাসের পাতায় কাউকে ক্ষমা করেনি। এখন স্বাধীনতার ৪৭ বছর পরেও ওই সময় কে কি করেছিল তার প্রশ্ন ওঠে। কার কি ভুমিকা ছিল এ নিয়ে আলোচনা হয়।

তিনি সরকারি দলের বিষয়ে বলেন, যারা এখন ক্ষমতায় আছে তারা কিভাবে ক্ষমতায় আছে সেটা ইতিহাসের পাতায় থাকবে। আমরা হয়তো তখন থাকবো কিন্তু ইতিহাস
তাদের ক্ষমা করবে না এবং গায়েবী এসব মামলার জন্য জাতির কাছে তাদের ক্ষমা চাইতে হবে।

তিনি বলেন, আজকে গায়েবী মামলা রুজু করার জন্য সরকারের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে পুলিশ, ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা জজ। তারা জেনে শুনে গায়েবী মামলা থেকে জামিন দেয়না। ঢাকা মেট্রোপলিটন সেশন জজ জামিন দিবেনা কিন্তু তিনি তারপরেও দেড় দুই মাস পর শুনানির তারিখ ধার্য্য করেন। দুই মাস পরেও জামিন দেয়না। এর অর্থ হলো দুই মাসের মধ্যে যেনো হাইকোর্টে যেতে না পারে। এভাবে গায়েবী মোকদ্দমাকে জায়েজ করা হয়েছে। বাংলাদেশে যারা গায়েবী মামলার পক্ষে বলেন, যারা বলেন গায়েবী মামলা বুঝেন না তাদেরকেও ইতিহাসের পাতা কখনও ক্ষমা করবে না। তারা বুদ্ধিজীবী নামের কলংক। কে ক্ষমতায় থাকবে আর কে ক্ষমতায় থাকবেনা এটা বুদ্ধিজীবীর কাজ নয়। বুদ্ধিজীবীদের কাজ হলো স্বাধীনতার চেতনাকে রক্ষা করা। স্বাধীনতার চেতনা হলো মানুষের অধিকার, গণতন্ত্র, ন্যায় বিচার। এটাই হলো স্বাধীনতার অঙ্গীকার। সেই অঙ্গীকারের সাথে আমাদের সমাজের বুদ্ধিজীবীরা বৈঈমানী করেছে এইসব গায়েবী মামলাকে সমর্থন করে।

তিনি আরও বলেন, আমি তৈমূর আলম খন্দকার হয়তো বাঁচবোনা কিন্তু এসব গায়েবী মামলার জন্য এই সরকারকে ক্ষমা চাইতে হবে। অনেক সৈরশাসককে অনেক ঘটনার জন্য ক্ষমা চাইতে হয়েছিল।

এর আগে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থানার দুটি নাশকতার মামলায় জামিন পান বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার। ১৪ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আনিসুর রহমানের আদালতে আত্মসমর্পন করে জামিনের আবেদন করলে এ জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন আদালত।

তৈমূর আলম খন্দকারের পক্ষে জামিন শুনানিতে অংশগ্রহণ করেন অ্যাডভোকেট সরকার হুমায়ুন কবির, অ্যাডভোকেট জাকির হোসেন, অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ খান ভাষানী ভুইয়া, অ্যাডভোকেট বোরহান উদ্দীন সরকার, অ্যাডভোকেট সামসুজ্জামান খান খোকা, অ্যাডভোকেট শরীফুল ইসলাম শিপলু সহ বিএনপির অর্ধশতাধিক আইনজীবী।
মামলা সূত্রে জানাগেছে, গত বছরের নভেম্বর মাসে রূপগঞ্জ থানার দুটি নাশকতার মামলায় তৈমুর আলম খন্দকারকে আসামী করা হয়। যার মামলা নং ২৪(৯)১৮ ও ৮(৯)১৮। এ দুটি মামলায় উচ্চ আদালত থেকে চার্জশিট দাখিল পর্যন্ত জামিন পান তিনি এবং শর্ত ছিল চার্জশিট দাখিলের ৩০ দিনের মধ্যে নিম্ম আদালতে আত্মসমর্পন করতে হবে। তাই বৃহস্পতিবার তৈমূর আলম খন্দকার আত্মসমর্পন করে জামিনের আবেদন করলে আদালত জামিন দেন।