নোয়াখালীর ঘটনায় র‌্যাবের অভিযানে অভিযুক্ত বাদল ও দেলোয়ার গ্রেপ্তার

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নোয়াখালী বেগমগঞ্জের ন্যাক্কারজনক ঘটনায় র‌্যাব-১১ এর অভিযানে অভিযুক্ত দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রাজধানী ও নারায়ণগঞ্জে পৃথক অভিযানে বাদল ও দেলোয়ারকে গ্রেপ্তার করা হয়। একই সঙ্গে অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করা হয়। ৫ অক্টোবর সোমবার দুপুরে র‌্যাব-১১ এর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র‌্যাব-১১ এর অধিনায়ক লেঃ কর্নেল খন্দকার সাইফুল আলম।

তিনি জানান, গত ২ সেপ্টেম্বর শুক্রবার রাতে নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ থানার একলাসপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডে কতিপয় সন্ত্রাসী কর্তৃক মধ্যযুগীয় কায়দায় এক নারীকে বর্বরভাবে নির্যাতন করে ভিডিও ধারণ করা হয় এবং পরবর্তীতে গত ৪ অক্টোবর রবিবার উক্ত ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়লে দেশব্যাপী ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়। নির্যাতনের ঘটনার ৩৩ দিন পর ৯ জনকে আসামি করে রবিবার রাত ১টার দিকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে মামলা করেন নির্যাতিতা গৃহবধূ। পাশাপাশি ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে মামলা হয়। উক্ত ঘটনায় র‌্যাব ব্যাপকভাবে গোয়েন্দা নজরদারি শুরু করে।

র‌্যাব আরও জানায়, র‌্যাব কর্তৃক গোয়েন্দা নজরদারী ও গোপন অনুসন্ধানের মাধ্যমে র‌্যাব-১১ এর বিশেষ আভিযানিক দল ৫ অক্টোবর সোমবার দিবাগত রাত আড়াইটায় নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন চিটাগাংরোড এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে মোঃ দেলোয়ার হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় চাঞ্চল্যকর নারী নির্যাতনের ঘটনায় সম্পৃক্ত ‘দেলোয়ার বাহিনী’র প্রধান মোঃ দেলোয়ার হোসেনের কাছ থেকে ১টি পিস্তল, ১টি ম্যাগাজিন ও ২ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়।

তিনি জানান, পরবর্তীতে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে ভোর সাড়ে ৫টায় ঢাকা জেলার কামরাঙ্গীচর থানাধীন কামরাঙ্গীচর ফাঁড়ির গলি এলাকা হতে উক্ত চাঞ্চল্যকর নারী নির্যাতনের ঘটনার প্রধান আসামী মোঃ নুর হোসেন ওরফে বাদলকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গত ২ সেপ্টেম্বর শুক্রবার রাতে গ্রেপ্তারকৃত দেলোয়ার বাহিনীর কয়েকজন সদস্য ভুক্তভোগী গৃহবধুর ঘরে প্রবেশ করে তাকে বিবস্ত্র করে বিভিন্নভাবে মধ্যযুগীয় কায়দায় শারিরীকভাবে নির্যাতন করে ঘটনার ভিডিও ধারণ করে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও প্রকাশের ভয় দেখিয়ে পরবর্তীতে টাকা দাবী করে।

পরবর্তীতে গত ৪ অক্টোবর ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে সারাদেশে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। জানা যায়, “দেলোয়ার বাহিনী” উক্ত এলাকায় চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা এবং নানান সন্ত্রাসী কার্যকলাপের সাথে জড়িত এবং ‘দেলোয়ার’ এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী। তাদের ভয়ে এলাকার লোকজন ভীত সন্ত্রস্ত। দেলোয়ারের বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে দুটি হত্যা মামলা আছে।

উক্ত চাঞ্চল্যকর ঘটনায় ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি সামাজিক মাধ্যম থেকে সরিয়ে দেওয়ার আদেশ দিয়েছেন মহামান্য হাইকোর্ট। এই ঘটনায় জড়িত অন্যান্য অপরাধীদের গ্রেপ্তারে র‌্যাবের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।