‘ইউপি চেয়ারম্যান রাজাকারপুত্র মাকসুদ’র হাজারো বিতর্কিত কর্মকান্ডের লোমহর্ষক বর্ণনা

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ বন্দরের মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেন। তার বিরুদ্ধে হাজারো অভিযোগ তুলে বন্দরবাসী এক সংবাদ সম্মেলন করেছেন। একই সঙ্গে তার পিতা রাজাকার ছিলেন বলেও তথ্য জানানো হয়। সেই সঙ্গে মাকসুদের লোমহর্ষক নির্যাতনের চিত্রও তুলে ধরা হয়।

৩ অক্টোবর শনিবার সকালে নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাব ভবনের তৃতীয় তলায় একটি রেস্তোরায় এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। বন্দর নিপীড়িত জনগণের ব্যানারে এই সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জেলা আওয়ামী যুব আইনজীবী পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ও বন্দর থানা আওয়ামীলীগ নেতা অ্যাডভোকেট মামুন সিরাজুল মজিদ।

ওই সময় উপস্থিত ছিলেন- জেলা পরিষদ সদস্য আলাউদ্দীন আহমেদ, জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য আব্দুল কাদির ডিলার সহ আওয়ামীলীগের বেশকজন নেতা।

লিখিত বক্তব্য হুবহু তুলে ধরা হলাঃ

ইতিহাসবিদ মুনতাসির মামুনের বই ‘শান্তি কমিটি ১৯৭১’ রাজাকারের তালিকায় মাকসুদের পরিবারের ৪ জনের নাম উল্লেখ রয়েছে তারা হলো তার বাবা রফিক, দাদা মাইনুদ্দীন, চাচা আব্দুল মালেক ও সামাদ।

‘রাজাকার রফিকের জীবদ্দশায় পূর্ব পাকিস্তান থেকে স্বাধীনতার দিন পর্যন্ত খুনের তালিকা’

(১) বন্দর থানার রামনগর গ্রামের মগা প্রধান (দুঃইখ্যার বাবা) নামক এক লোককে সোনাচরাড় ডকইয়ার্ডে তার বাপ-ভাই মিলে লোহা দিয়ে পিটিয়ে নির্মমভাবে খুন করে।

(২) একই থানার ধামগড়ের আইছাইল্লা মুন্সি নামক এক বিশিষ্ট সমাজ সেবককে, শনিবার, দিন -দুপুরে বেলা বারোটায় কুড়িপাড়া বাজার হইতে শত শত মানুষের উপস্থিতিতে, রফিক তার বাবা ও ভাইয়েরা মিলে জোড়পূর্বক তাদের বাড়িতে উঠাইয়া নিয়া যায়। সেখানে তারা নির্মমভাবে দা-ছেনা দিয়ে কুপিয়ে এবং লোহার রড দিয়ে পিটাইয়া হত্যা করে, বাড়ির সামনের কলই খেতে লাশ ফেলে রাখে। এ ব্যাপারে বন্দর থানায় কামরুজ্জামান বাবুল কাউন্সিলারের পিতা মৃত: জামালউদ্দীন সহ রফিক গংদের বিরুদ্ধে খুনের মামলা হয়। বিচারে রফিকের বাবা-ভাই দের যাবজ্জীবন সাজা হয়। আইয়ুব খান ১৯৫৮ সালে প্রেসিডেন্ট হয়ে, সকল কারাবন্দীদের মুক্তি ঘোষনা করলে, রফিক গংরা অল্পদিন সাজা ভোগ করে মুক্তি পায়। মুক্তি পেয়ে আগের মত খুনের নেশায় মেতে উঠে।

(৩) স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন ধামগড় ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের সভাপতি নাসির মাষ্টার সাহেবের বাড়িতে তাকে খুন করার জন্য ধরতে যায় রফিক গ্রুপ, তাকে বাড়িতে না পেয়ে, তার বড় ভাই গিয়াসউদ্দীন, নিকট আত্বীয় আমিনুদ্দীন, পিতা: ছিটু মুন্সী, মতিউর রহমান, পিতা: কালু এবং আবদুল হামিদ, সর্ব সাং: ধামগড়। বেলা বারোটার সময় শত শত লোকদের উপস্থিতিতে, রফিক তার রাজাকার বাহিনী নিয়ে তাদের জোড়পূর্বক কুড়িপাড়াস্থ রফিকের বাড়িতে ধরে নিয়া আসে। রাত্রিতে তাদের জবাই করে লাশ টুকরা টুকরা করে শীতলক্ষ্যা নদীতে ফেলে দেয়। জীবনের ভয়ে বাদী হয়ে কেউ তখন রফিকদের বিরুদ্ধে মামলা করতে সাহস পায়নি।

(৪) স্বাধীনতাযুদ্ধ চলাকালীন মাঝামাঝি দিকে রফিক তার ভাইদের এবং দুই ছেলে ওমর, আমীর এবং তার রাজাকার বাহিনীদের নিয়ে আঠারটি গ্রাম জ্বালিয়ে দেয় এবং বারো জন আওয়ামী লীগের সাধারন কর্মীকে গুলি করে হত্যা করে। গ্রামগুলি হচ্ছে, (১) কুড়িপাড়া (২) লালখারবাগ (৩) চাপাতলী (৪) গোকুলদাসের বাগ (৫) ধামগড় (৬) নয়ামাটি (৭) আমৈর (৮) বটতলা (৯) বঙ্গশাসন (১০) হরিপুর (১১) আনন্দ নগর (১২) সরাইল (১৩) কুতুবপুর (১৪) খোসের ছড়া (১৫) সেনের বাড়ি (১৬) জোলাবাড়ি ইত্যাদি।

‘রাজাকার রফিক গংদের হাতে অগ্নিসংযোগের দিন যারা খুন হয়েছে তাদের নামের তালিকা’

(১) কুড়িপাড়া গ্রামের মোঃ মুন্তু, পিতাঃ লালু মিয়া, (২) লালখারবাগের ছিটু মুন্সি ওরফে (খাইট্টা ছিডা), (নাজির মেম্বারের পিতা), (৩) খালেক কুড়িপাড়া (আব্দুল হকের পিতা) (৪) বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল আজিজ (পিতা ছলিমুদ্দীন প্রধান, সাং-হরিপুর), (৫) ছব্দর আলী, (৬) বছরুদ্দীন (পিতা: আব্দুল হাকিম), (৭) সাহাদুল্লা ( পিতা: আব্দুল জব্বার), (৮) ছোট নাবালিকা কন্যা – শাহিদা (পিতা: শহীদুল্লাহ) সর্ব সাং- বঙ্গশাসন। (৯) আব্দুল রব (পিতা: অজ্ঞাত) সাং-বঙ্গশাসন, সর্ব থানা- বন্দর। (১০) আইয়ুব আলী (১১) আব্দুল জাব্বার (বাবা ও ছেলে) সর্ব সাং- কুতুবপুর, থানা, সোনারগাঁও। (১২) লালখারবাগ গ্রামের আরো একজন যার নাম আমার মনে নেই।

‘যুদ্ধচলাকালীন রাজাকার রফিকের তান্ডব’

(১) বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে রফিক মিয়া, লক্ষণখোলার আরেক রাজাকার আজিজ সরদারের নেতৃত্বে, বন্দর শিল্প এলাকা শান্তি কমিটির সেক্রেটারী পদ গ্রহন করে গড়ে তোলে বিরাট রাজাকার বাহিনী। সে প্রথমে ধামগড়, মুসাপুর, মদনপুর এবং কাঁচপুর ইউনিয়নে তার ফরমান জারি করে যে, অত্র এলাকার কোন লোক স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের প্রদত্ত ‘ চরমপত্র’ সহ কোন প্রকার সংবাদ শুনিতে পারিবে না। বিভিন্ন যায়গায় তার বাহিনী পাঠিয়ে ঐ কাজের জন্য পাহারা বসায়। যার ফলে কয়েকশত রেডিও তার লোকেরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভেঙ্গে ফেলে।

(২) স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন রফিক তার সন্তান, রাজাকার ভাই-ব্রাদার ও অন্যান্য বাহিনীর রাজাকারদের নিয়ে ১৫ জন আওয়ামীলীগের নেতা কর্মীদের গুলি করে হত্যা করে এবং ১৮ টি গ্রাম জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে ছাড়খার করে দেয়। এর প্রতিশোধ হিসাবে মুক্তিযোদ্ধারা রফিকের ভাই ছাত্তার, মুস্তফা, কাবিল, তার জামাতা নান্নু (কিলার বিল্লালের বাবা) সঙ্গীয় সেলামত (চাঁদাবাজ ইছহাকের পিতা) কে হত্যা করে। কিন্তু অনেক চেষ্টা করেও মূল হোতা রফিক কে এবং তার রাজাকার সন্তান এবং ভাই-ব্রাদার কে তেমন কোন ক্ষতি করিতে পারে নাই। তাই দেশ স্বাধীন হওয়ার পর যখন বঙ্গবন্ধু দালালি আইন পাস করেন, তখন রফিক গংদের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত লোকেরা তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ঢাকা জেলা জজ কোর্ট রফিককে সহ তার পুত্র আত্বীয় স্বজন, রাজাকারদের মধ্যে ১৮ জনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রদান করেন। কিন্তু খুনি মোস্তাক আহম্মদ যখন বেআইনিভাবে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় বসেন সে সময় এই দালালদের তিন ভাগের দুই ভাগ সাজা মাফ করে দিলে, আবার এই রাজাকার গ্রুপ অল্প দিনে কারামুক্ত হয়ে তাদের খুনের তান্ডব শুরু করে।

‘হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতি রাজাকার রফিক গংদের অত্যাচার’

(১) রাজাকার রফিক জীবিত অবস্থায় ১৯৬৪ সনে হিন্দু মুসলমান রায়টের সময়, প্রায় দেড়শ বিঘা হিন্দুদের জমি জবর দখল করে নেয়। রফিক ও তার আত্বীয় স্বজনরা, লাঙ্গলবন্দ, চিড়ইপাড়া, চাপাতলী গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের উপড় চরম নির্যাতন চালায়। তারা হিন্দু নারীদের উপর পাশবিক অত্যাচার করে। যার ফলে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকেরা, ভিটাবাড়ি ছেড়ে ভারতে চলে যায়। হিন্দুদের ফেলে যাওয়া সয়-সম্পত্তি রফিক গংয়েরা আত্মসাত করে। লাঙ্গলবন্দ এবং কুড়িপাড়ায় রাম রাজত্ব কায়েম করেন।

‘রফিকের সন্তান, ভাই-ব্রাদার, ভাগিনা এবং আত্বীয় স্বজনদের খুন-খারাপি সহ নির্মম নিষ্ঠুরতার কার্যকলাপ নিম্নে বর্নিত হলো’

(১) রাজাকার রফিক, ও তার ছেলে খুনী আনোয়ার, মাকসুদ, মুন্সি, মোয়াজ্জেম হোসেন কালু, ভাগিনা বিল্লাল সম্মেলিতভাবে ২৫/০২/১৯৯৪ ইং তারিখে লাঙ্গলবন্দ চিড়ইপাড়া ৫০/৬০ বৎসরের প্যারালাইজড রোগী রোজাদার বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিক ভূইয়াকে (বালার ছেলে) দিন দুপুরে কুপিয়ে খুন করে। এ ব্যাপারে বন্দর থানায় মামলা হয় মামলা নং ১১(২)৯৪ ধারা ৩০২/৩৪দঃবিঃ

(২) রফিকের ছেলে মাকসুদের বড় ভাই কালু সামান্য গরুর মাংস কেনার কথা কাটাকাটির ছলে, নিরহ কসাই নবী হোসেন কে ২২/০৮/১৯৯২ ইং তারিখে কেটে টুকরো টুকরো করে বস্তায় বন্দি করে নদীতে ফেলে দেয়। এ ব্যাপারে বন্দর থানায় মামলা হয়।

(৩) যোগী পাড়ার আওয়ামী লীগ নেতা কাজী নুর মোহাম্মদের ছেলে মহসিনকে (মাকসুদের চাচাত শ্যালককে), রাজাকার পুত্র মাকসুদের নেতৃত্বে তার বড় ভাই আনোয়ার, ভাগিনা বিল্লাল, ভাগ্নি জামাই সেভেন মার্ডারের আসামী সেলিম (কাউন্সিলার বাবুলে ছোট ভাই) বেলা ৫ টায় নির্মমভাবে কুপিয়ে মাথা কেটে, উপস্থিত লোকদের সামনে কাটা মাথা দিয়ে কুড়িপাড়া স্কুলে ফুটবল খেলেছে। এ ব্যাপারেও মামলা হয় যাহার নং ০৭(১০)০৩ ধারা ৩৬৪/৩০২/৩৪ দঃবিঃ

(৪) রাজাকার পুত্র মাকসুদের পিতা রফিক রাজাকার, বড় ভাই আনোয়ার, মোঃ ওমর, ভাগ্নি জামাই সেভন মার্ডারের আসামী সেলিম (কাউন্সিলার বাবুলে ছোট ভাই) নিজে মিলে খুন করে মুক্তিযোদ্ধা আলাউদ্দীনকে। যার বাড়ি ছিল লালখারবাগ। এ ব্যাপারেও বন্দর থানায় মামলা হয় যাহার নং ১২(০৪)৮৬ ধারা ৩০২/৩৪দঃবিঃ

(৫) রাজাকার পুত্র মাকসুদের চাচা মতিন, রাজাকার মালেক, সামাদ রাজাকারের ছেলে ইকবাল ( বর্তমানে মাকসুদের পি,এস), মাকসুদের প্ররোচনায় হত্যা করে চাপাতলী গ্রামের নান্নু কাঠমিস্ত্রির ছেলে, মনির হোসেন কে। নান্নুু ছিল মতিনেরই ফার্নিচার হাউজের কাঠ মিস্ত্রি। এ ব্যাপারে তাদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়।

(৬) রাজাকার পুত্র মাকসুদের ভাই আনোয়ার, ফুপাতো ভাই সালাউদ্দীন, ভাগিনা বিল্লাল, ভাগ্নি জামাই সেভন মার্ডারের আসামী সেলিম (কাউন্সিলার বাবুলের ভাই), ভাতিজা স¤্রাট, তুহিন গংরা হত্যা করে মুরাদপুর গ্রামের দেলোয়ার কে। যার বন্দর থানার মামলা নং ২৪(৫)০৪ ধারা ৩০২/৩৪ দঃবিঃ

(৭) রাজাকার পুত্র মাকসুদের ভাই আনোয়ার, ভাগিনা বিল্লাল, ফুপাতো ভাই সালাউদ্দীন মিলে খুন করে পাঠানটুলী নিবাসী এক বাস মালিক মোশারফকে। শুধু মাত্র সামান্য বাস ভাড়া নিয়ে কথা কাটকাটির কারনে। এ ব্যাপারে তাদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়।

(৮) রাজাকার পুত্র মাকসুদের ভাই আনোয়ার, মাকসুদের ভাগ্নি জামাই সেলিম (কাউন্সিলার বাবুলের ভাই) হত্যা করে চাঁনপুর দেওয়ানবাগের জুলহাসকে। বন্দর থানায় এ ব্যাপরেও মামলা হয়। যার মামলা নং ১৯(৬)৯৮ ধারা ৩০২/৩৪ দঃবিঃ

(৯) রাজাকার পুত্র মাকসুদের ফুপাত ভাই সালাউদ্দিন মুরাদপুর নিবাসী নূরা ও বাবুল দুই ভাইকে হত্যা করে যাহা বন্দর থানা মামলা নং-৩৪(৩)০৩ ধারা ৩০২/৩৪ দঃবিঃ

(১০) রাজাকার পুত্র মাকসুদের ফুপাত ভাই সালাউদ্দিন মুরাদপুর নিবাসী নিলুফাকে হত্যা করে যাহা বন্দর থানা মামলা নং- ০৪(১০)০৩ ধারা ৩০২/৩৪ দঃবিঃ

(১১ সেলিম, আনোয়ার, বিল্লাল তিন জন মিলে কুতুবপুরের একজন আদমজীর শ্রমিক, সুরু মিয়াকে চাঁদার জন্য আদমজী মিল ঘাট থেকে দিনের বেলায় ৫ টার সময় কুড়িপাড়া ধরে নিয়ে আসে, নদীর পাড়ে নৌকায় রেখে তার দুই হাত বগল পর্যন্ত কেটে নেয়। যাহা সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মামলা নং ০৯(০৪)৯৮ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট প্রথমে ১৭ বছর সাজা প্রদান করেন

(১২) রাজাকার রফিক ও তার পরিবারে সদস্যরা পাকিস্তান সময় থেকে এ পর্যন্ত ৩০/৩৫ টি খুনের রেকর্ডকৃত আসামী । যারা এখনো অস্র , মাদক ভ’মিদস্যুতা , চাঁদাবাজির মতো মারাতœক অপরাধ করে যাচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে বন্দর , সোনারগাঁ, সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় বহু মামলা আছে।

‘মাকসুদের ভূমিদস্যুতা ও অর্থ আত্মসাতের বর্ণনা’

(১) গত ৩০/০৬/২০১০ ইং তারিখ হইতে এ পর্যন্ত, আলাউদ্দীন সাহেবের নামে বাংলাদেশ রেলওয়ের কমার্শিয়াল লীজকৃত প্রায় ১৪২৫০ বর্গ ফুট এবং সরকারি রেলওয়ের ৬৯,৫০০ বর্গ ফুট জায়গা (যাহা গোকুলদাসেরবাগ চৌড়াস্তার মোড়ে অবস্থিত ) জবরদখল করে এলাকার লোকদের দোকান করে দেওয়ার অজুহাতে, প্রত্যেক দোকানের জন্য প্রায় ২/৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত অগ্রীম গ্রহন করেছেন, প্রায় ২৭৫ জন লোকের কাছ থেকে। যেখানে উন্নত মানের টিনশেড করে দেওয়ার কথা ছিল, সেখানে তা না করে ২/৩ নম্বর ইটা দিয়ে কোন রকম টিনশেড করে মাত্র ১০০/১৫০ জন লোককে দোকান বুঝিয়ে দিয়েছেন। এখনো ১০০/১২৫ জন লোককে দোকান বুঝিয়ে দিতে পারেন নি। প্রায় ৮/৯ বৎসর যাবৎ কোন প্রকার দোকানঘর না দিয়ে প্রায় ২ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে বসে আছে। দোকান না পাওয়া লোকেরা, জীবনের ভয়ে মাকসুদের কাছ থেকে টাকা পর্যন্ত ফেরত চাওয়ার সাহস পাচ্ছে না। যদি কেহ টাকা চাইতে যায় তবে তার পেটুয়া বাহিনীদের লেলিয়ে দিয়ে, সেই লোকদের জীবনে মারিয়া ফেলার হুমকি দেয়। এতে করে নিরীহ এলাকা বাসীর জীবন দুর্বিসহ করে তুলেছে। ২ জন লোক জীবনের মায়া ত্যাগ করে বন্দর থানার ওসির বরাবরে, টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য মাকসুদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে। ইহাতে কোন ফল হচ্ছে না। বরং অভিযোগ উঠিয়ে আনার জন্য, তাদেরকে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে। তাছাড়া সে রেলওয়ের ভূমিতে সরকারি নিয়ম ভঙ্গ করে এক তলা একটি নিজস্ব মার্কেট তৈরি করে। যার পজিশন বাবদ দোকানদারদের কাছ থেকে ৫/৬ লক্ষ টাকা করে নিয়েছে। এবং আরেকটি এক তলা ভবন সে নিজস্ব অফিস হিসাবে ব্যাবহার করে, যার পুরটাই রেলওয়ের জায়গা। জনগনের কাছ থেকে নেওয়া অবৈধ অর্থ দিয়ে সে জাঙ্গাল গ্রামে ২ঝই এবং শাসনেরবাগে ঋঘঋ নামক দুইটি পরিবেশ দূষনকারী ইটভাটা তৈরি করে। যার ফলে এলাকাবাসী চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।

(২) মাসদাইর এনায়েতনগর নিবাসী নিয়াজুল হক রানা নামের এক লোক এবং তার কয়েকজন বন্ধু মিলে খরিদ করা জায়গা, যাহা বন্দর থানায় বার পাড়া মৌজায় অবস্থিত। আর এস দাগ নম্বর ২০৫, এস এ দাগ নম্বর ৮৪২, মোট জমির পরিমাণ ৩৭ শতাংশ। বিগত ছয় বৎসর আগে ক্রয় করিয়া চারপাশে ইটের দেয়াল নির্মান করিয়া ভোগ দখল করিয়া আসিতেছিলো। বিগত কিছুদিন আগে, ঐ লোক চিকিৎসার জন্য ভারতের পুনায় যায়। এ সুযোগে গভীর রাত্রিতে এক্সেভেটর মেশিন ডুকিয়ে, ট্রাক যোগে উক্ত জমির মাটি কাটিয়া তার ইটভাটায় নিয়া আসে। সম্পূর্ন জমিটি এখন পুকুরে পরিনত হয়েছে। জমির মালিক বাংলাদেশে আসিয়া এ পরিস্থিতি দেখার পর, মাকসুদের কাছে গেলে সে, মাটি ভরাট করিয়া দিবে বলে আশ্বাস দেয়। কিন্তু বছর পার হয়ে যাওয়ার পরেও মাটি ভরাট ত দুরের কথা, এখন তাদের কে জীবনে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে।

(৩) তাছাড়া মাকসুদ সোনালী পেপার মিল্স কর্তৃপক্ষের লঙ্গলবন্দ মৌজার প্রায় ৬ বিঘা জমি ও ৬ বিঘা পুকুর দখল করে রেখেছে। যার মালিকরা প্রাণ ভয়ে জায়গার আশেপাশে ও আসতে পারছেনা।

(৪) সেই ভূমিদস্যু মাকসুদ চাপাতলীস্থ নামিরা মসজিদের নামে জোরপূর্বক লালখারবাগ নিবাসী ছিটু মুন্সির ছেলের কাছ থেকে ৪ শতাংশ জায়গা জোরপূর্বক ক্রয় করিয়া ১৬ শতাংশ জায়গা দখল করিয়া নেয়। যাহা মালিকরা দীর্ঘসময় দরে মাথা ঠুকিয়ে ও কোন প্রতিকার পায়নি। বর্তমানে কি অবস্থা আছে তা একমাত্র আল্লাহ ই ভাল জানে।

(৫) গত ১৩/০৯/২০২০ ইং তারিখে ”বাংলাদেশ প্রতিদিন” পত্রিকায় প্রকাশিত খবর হচ্ছে ”গত দশ বৎসর যাবৎ এই অবৈধ গ্যাস সংযোগ। বন্দর উপজেলার মাকসুদ নামক একজন প্রতিনিধির মাধ্যমে উপজেলার প্রায় ছয়টি গ্রামে চলছে ২ লাখ গ্যাস সংযোগের অভিযোগ” আমার জানামতে এই অর্থ আতœসাৎ কারী মাকসুদ ধামগর, মুসাপুর ইউনিয়ন এবং নাসিক ২৭ নং ওয়ার্ডের লোকদের কাছ থেকে প্রায় ১২ হাজার বৈধ গ্যাস লাইন দিবে বলে প্রতি লাইনের জন্য বাড়ির দলিল, আইডি কার্ড এবং ৬০ হাজার টাকা করে প্রায় ৭২ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এ পর্যন্ত একটি গ্যাস লাইন বৈধ করে দিতে পরে নাই। যাহার ফলে, জনগন অত্যন্ত ভীত সস্ত্রস্ত অবস্থায় আছে। এ ব্যাপারে জনগনের কোন দোষ ত্রুটি ছিল না। কারন অর্থ লোভী মাকসুদ বৈধ গ্যাস লাইন দিবে বলে ধোকা দিয়ে জনগনের কাছ থেকে কাগজ পত্র এবং টাকা নিয়েছে। এমতবস্থায়, সরকারের কাছে জনগনের আবেদন, তাদের গ্যাস লাইন কোন ভাবে কর্তন না করে, আইনগত ভাবে বৈধ করে দিয়ে, গ্যাস চোর মাকসুদ গংদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হোক। অন্যথায় এলাকাবাসীর দুঃখের আর সীমা থাকবেনা। উক্ত অবৈধ গ্যাস সংযোগের পুরোধা সহযোগী হিসাবে মাকসুদের সাথে জড়িত হল-
মূলহোতা-

(১) মাকসুদ হোসেন, পিতা: মৃত: আব্দুর রফিক, সাং- চাপাতলী।
(২) কামরুজ্জামান বাবুল, পিতা: মৃত: জামালউদ্দীন, সাং- কুড়িপাড়া।
(৩) জামান, পিতা: মৃত: আঃ মোতালিব (কান্দ্রা), সাং – কুড়িপাড়া।
সহযোগী
(৪) জামাল, পিতা: মৃত: সুবেদ আলী, সাং- কুড়িপাড়া।
(৫) আলতাফ হোসেন, পিতা: মৃত: খলিল, সাং- কুড়িপাড়া।
(৬) ফিরোজ, পিতা: মৃত: কাবিল মিয়া, সাং-চাপাতলী।
(৭) তাওলাদ হোসেন, পিতা: মৃত: আমিন মিয়া, সাং- কুড়িপাড়া।

‘মসজিদ-মাদ্রাসা নিয়ে মাকসুদ এবং বাবুল গংদের কু-কর্ম’

(১) বর্তমানে ভূমিদস্যু, অর্থ আত্মসাতকরী মাকসুদ, বাবুল ইদানিং মসজিদ-মাদ্রাসার কমিটি নিয়ে নতুন খেলায় মেতেছে। নিজের অপকর্মকে চাপা দেওয়ার জন্য মসজিদ কমিটিতে নিজের নাম লেখানোর চেষ্টা করছে। কয়েকদিন আগে কুড়িপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সবচেয়ে বড় ডোনার স্টার পার্টিকেল বোর্ড মিলের ম্যানেজারকে বাদ দিয়ে, সেই ভূমিদস্যু মাকসুদ জোরপূর্বক স্কুলের স্বঘোষিত সভাপতি সেজেছে। যাহার কোন বৈধ বা আইনগত বিধান নাই। তা ছাড়া সে নাসিক ২৭ নং ওয়ার্ডের কুড়িপাড়া এলাকার ভোটার ও নয়।

(২) গত কয়েকদিন আগে আত্মসাতকারী মাকসুদ মুসাপুর ইউনিয়নের ভোটার হয়ে কুড়িপাড়া বাজার মসজিদের বৈধ কমিটিকে বাদ দিয়ে, তার মনগড়া কমিটিকে প্রতিষ্টা করার জন্য চেষ্টা করলে, মুসল্লিরা বিরোধিতা করে, মসজিদের মুতোয়াল্লির কাছে মাকসুদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে। জমিদাতা ও মসজিদ নির্মাণ প্রতিষ্টাকারী আজিমউদ্দীন ভূইয়া ট্রাস্টের চেয়ারম্যান হাজী মোহাম্মদ শাহজাহান সাহেব, গত ২৫-০৯-২০২০ ইং তারিখ, রোজ শুক্রবার, কুড়িপাড়া মসজিদে আসেন এবং মাকসুদের পকেট কমিটি এবং মনগড়া এডহগ কমিটিকে অবৈধ ঘোষনা করে, আগামী দুই মাসের মধ্যে স্থায়ী মুসল্লিদের সাথে আলোচনা করে নতুন কমিটি ঘোষনা দিবেন বলে জানান। ইহাতে সাধারন মুসল্লিরা সন্তুষ্ট হলেও মাকসুদ সহ তার বাহিনীর খুনি, সন্ত্রাসী মামলার আসামী যথা- বাবুল, পিতাঃ মৃতঃ জমাল উদ্দীন, জামাল, পিতাঃ মৃতঃ সুবেদ আলী, সালাউদ্দীন, পিতাঃ মৃতঃ কাশেম, জামান, পিতাঃ মৃতঃ মোতালিব কান্দ্রা, এছহাক, পিতাঃ মৃতঃ ছালামত, বিল্লাল, পিতাঃ মৃতঃ নান্নু, সম্রাট, মোহন,উভয় পিতাঃ ওমর, মোস্তফা, পিতাঃ অজ্ঞাত আলতাফ হোসেন, পিতাঃ মৃতঃ খলিল মহিন পিতাঃ মৃতঃ লতিফ এবং আরো কয়েকজন সন্ত্রাসী মিলে, ওসি বন্দরের উপস্থিতিতে মুসল্লিদের সাথে গন্ডোগোল করতে চেষ্টা করে, কিন্তু ওসি সাহেবের হস্তক্ষেপের পরে সন্ত্রাসীরা চলে যায়।

(৩) মাকসুদের পকেট কমিটির নমুনা ঃ- ইতি পূবের্ সে মোতোয়াল্লীদের সাথে আলোচনা ছাড়াই ১৩ সদস্য বিশিষ্ঠ সে কুড়িপাড়া কাদিরিয়া কবরস্থান কমিটি গঠন করে । যার মধ্যে সে সহ তার পরিবারের ৮ জন সদস্য ও তার ৩ সহোযোগী রয়েছে। কমিটির আয় ব্যায়ে হিসাবে যতেষ্ঠ গড়মিল রয়েছে।

(৩) মাকসুদের সহযোগী বাবুল গত ১২-০৫-২০১৯ ইং তারিখে কুড়িপাড়া জান্নাতুল বানাত মহিলা মাদ্রাসা নিয়ে, প্রাক্তন কাউন্সিলার সিরাজুল ইসলামের সাথে অহেতুক তার নেতৃত্ব বহালের জন্য তার দলবল নিয়ে, সিরাজ কাউন্সিলারের বাড়িঘর আক্রমন করে,ভাংচুর করে এবং কিছু লোককে দাড়ালো অস্ত্রপাতি দিয়ে মারাত্বকভাবে কাটা জখম করে। এ ব্যাপারে বন্দর থানায় ৩২৬/৩০৭ ধারায় মামলা হয়, যাহার মামলা নম্বর ৪৭, তারিখ: ১৩-০৫-২০১৯।

(৪) এই সন্ত্রাসী বাবুল একজন বিএনপি পন্থী দূর্ধর্ষ সন্ত্রাসী চক্রের গডফাদার। বিগত দিনে সে নাশকতা ও রাষ্ট্রদ্রোহী বহু মামলার জেলখাটা দাগী আসামী, যাহা এখনো চলমান রয়েছে।

(৫) মাকসুদের আরো দুই-তিনজন প্রতারক ভূমিদস্যুদের মধ্যে, আলতাফ হোসেন প্রতারনার মাধ্যমে এলাকার নিরহ সরল কৃষক মুনসুর আলীর ১২ শতাংশ জায়গা আত্মসাত করে তাকে পথে বসিয়েছে। যার শোকে তিনি কিছুদিন আগে মারা যান।

(৬) ভূমিদস্যু জামাল প্রতারনার মাধ্যমে ভূমিহীন কুড়িপাড়ার নুরুউদ্দীনের সরকার প্রদত্ত ১৭ শতাংশ জমি, জালিয়াতির মাধ্যমে আত্মসাত করেছে।

(৭) প্রতারক, ভূমিদস্যু মহিন সারা জীবন কোন চাকরি-বাকরি না করে, কুড়িপাড়া ভূমি অফিসে দালালি করে, বহু মানুষের ভোগান্তি সৃষ্টি করেছে। যাহা বর্ণনাতীত।

‘২৭নং নাসিক ওয়ার্ডের জনগণের বক্তব্য ও চাওয়া’

* অপরদিকে কুড়িপাড়া নিবাসী উচ্চ শিক্ষিত, দানবীর, সমাজসেবক, এলাকায় অত্যন্ত সুবিচারী, এবং প্রতিষ্ঠিত ব্যাবসায়ী, নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের ৩ নং ওয়ার্ডের সদস্য হাজী মো: আলাউদ্দীন। বন্দর থানার প্রায় মসজিদ, মাদ্রাসা, স্কুল, কবরস্থান উন্নয়নে এবং রাস্তাঘাট নির্মানে লক্ষ লক্ষ টাকা অনুদান দিয়েছেন। বিগত দিনে করোনায় ক্ষতিগ্রস্থ বন্দর, সোনারগাঁও, সিদ্ধিরগঞ্জ এবং ফতুল্লা থানার অনেক জায়গায় দুস্থ মানুষের মধ্যে সরকারি খাদ্য সামগ্রী বিতরণ ছাড়াও, নিজস্ব তহবিল হতে প্রচুর পরিমাণ নগদ অর্থসহ খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করিয়াছেন। উপরোক্ত সন্ত্রাসী গ্রুপের অনৈতিক কার্যকলাপকে কোন দিনই সমর্থন দেন নাই বরং তাদের জোর জুলুমের বিরুদ্ধে সব সময় ই প্রতিবাদী ছিলেন। গত ২৫-০৯-২০২০ ইং তারিখেও তিনি মোতোয়াল্লী সাহেবদের সাথে একমত পোষন করে, স্থানীয় মুসল্লিদের মতামতের ভিত্তিতে মসজিদ কমিটি গঠন করার মত প্রকাশ করেন। যার কারনে, মাকসুদ তার দোসর বাবুলের নেতৃত্বে, আরেক সন্ত্রাসী জামালের সঞ্চালনায় গত ২৭-০৯-২০২০ ইং তারিখে এক ঘরোয়া ষড়যন্ত্রমূলক সংবাদ সম্মেলন করে। যাহার সমস্ত বক্তব্যই ছিলো সম্পূর্ন মিথ্যা, বানোয়াট এবং চক্রান্তমূলক। আমরা তাদের মিথ্যা সংবাদ সম্মেলনকে নিন্দাজ্ঞাপন সহ প্রত্যাখ্যান করছি। আর সরকারের প্রতি সকল প্রশাসনিক মহলকে উক্ত রাজাকার, নাশকতাকারী, রাষ্ট্রদ্রোহী, খুনি, ভূমিদস্যু, অর্থ আত্মসাতকারী রাজাকার পুত্র মাকসুদ এবং বাবুল গংদের বিরুদ্ধে সঠিক তদন্তের মাধ্যমে আইনের আওতায় এনে সুবিচার করিতে নির্দেশ দানে অনুরোধ জানাচ্ছি।