খুন, গুম, ধর্ষণ, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজিতে সরকার সমালোচিত হচ্ছে: জিএম কাদের

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি বলেছেন, আমদানীর সাথে জড়িত হাতে গোনা কয়েকজন ব্যবসায়ী বাজার মূল্য নিয়ন্ত্রণ করছে। আর বাড়তি মূল্যের জন্য মন্ত্রনালয়ের রোষানলে পড়ছে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা।

তিনি বলেন, টিসিবি মাধ্যমে খাদ্যপণ্য বিক্রি করে বাজার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে নির্দিষ্ট সময়ে পরিকল্পিতভাবেই নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানী করতে হবে। বলেন, বাজার এখন নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়েছে।
তিনি ক্ষোভের সাথে বলেন, মৌসুমে কৃষকরা কৃষি পণ্যের ন্যায্য মূল্য পায়না কিন্তু সরকারের অব্যবস্থাপনায় সেই পণ্য কয়েক গুণ বেশি দামে বিক্রি হয়। এতে হাহাকার ওঠে সাধারণ মানুষের মাঝে।

৩অক্টোবর শনিবার দুপুরে জাতীয় পার্টি বনানী কার্যালয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কয়েকশো নেতা-কর্মী জাতীয় সেচ্ছাসেবক পার্টিতে যোগদান উপলক্ষ্যে এবং ঢাকা বিভাগীয় জেলা সমূহের নেতাদের সঙ্গে আয়োজিত সভায় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান এ কথা বলেন।

জাতীয় সেচ্ছাসেবক পার্টির সভাপতি ও জাতীয় পার্টি প্রেসিডিয়াম সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা এমপির সভাপতিত্বে ও জাতীয় স্বেচ্ছাসেবক পার্টির কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি আবু সাঈদ স্বপন-এর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত যোগদান সভায়- জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের আরো বলেন, কয়েক বছর ধরে কোরবানীর চামড়া পানির মূল্যে বিক্রি হয়েছে। অনেকেই বিক্রি করতে না পেরে মাটিতে পুতে ফেলেছে চামড়া। চামড়ার ক্রেতা বাড়াতে পারেনি সরকার তাই জাতীয় সম্পদ চামড়া নষ্ট হয়ে গেছে। আর বঞ্চিত হয়েছে এতিম ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। সরকার জেনে-বুঝেই চামড়া শিল্পকে নষ্ট করেছে।

তিনি বলেন, করোনার কারণে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা সহসাই স্বাভাবিক হবে বলে মনে হচ্ছেনা। তাই ১৮ কোটি মানুষকে বাঁচাতে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। বলেন, জাতীয় পার্টি সব সময় দেশ ও মানুষের স্বার্থে সরকারকে সব ধরনের সহায়তা করতে প্রস্তুত আছে।

জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান বলেন, দেশের প্রধান তিনটি রাজনৈতিক দলের মধ্যে জাতীয় পার্টি অত্যান্ত সম্ভাবনাময় রাজনৈতিক শক্তি। তিনি বলেন, দীর্ঘ দিন রাষ্ট্র ক্ষমতায় থেকে আওয়ামী লীগ যেমন পদ্মাসেতু, মেট্রো রেলের মত বড় বড় উন্নয়নমূলক প্রকল্প বাস্তবায়ন করে প্রশংসিত হয়েছে। আবার খুন, গুম, ধর্ষণ, চাঁদাবাজী ও টেন্ডারবাজীর কারণে তেমনি সমালোচিত হচ্ছে। আর বিএনপি নানা কারণে অনিশ্চিত রাজনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যে আছে। বিএনপির ভবিষ্যত নিয়ে অনেকেই সন্দিহান। অন্যদিকে পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টির শাসনামলে খুন, গুম, ধর্ষণ, চাঁদাবাজী ও টেন্ডারবাজী ছিলোনা। জাতীয় পার্টির শাসনামলে বিচার বর্হিভূত হত্যাকান্ড ছিলোনা। তাই নতুন প্রজন্মের সামনে জাতীয় পার্টি একটি আদর্শ রাজনৈতিক শক্তি। বলেন, জাতীয় পার্টিই পরিবর্তনের জন্য একমাত্র রাজনৈতিক শক্তি। দেশের মানুষ জাতীয় পার্টির দিকে উন্মুখ হয়ে তাকিয়ে আছে। জাতীয় পার্টি গণমানুষের সমর্থন নিয়ে ক্ষুধা, দুর্নীতি ও বেকারত্ব মুক্ত বাংলাদেশ উপহার দেবে। জাতীয় পার্টিকে আমরা একটা ব্র্যান্ডে পরিণত করে সামনে এগিয়ে নিতে চাই। ন্যায় বিচার ভিত্তিক রাষ্ট্র গঠনেই জাতীয় পার্টির রাজনীতি।

এসময় জাতীয় পার্টির মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বলেন, রাষ্ট্র ক্ষমতার পালাবদলে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে দেশের মানুষ আর দেখতে চায়না। দেশের মানুষ জাতীয় পার্টিকে রাষ্ট্র ক্ষমতায় দেখতে চায়। তাই দলকে আরো শক্তিশালী করতে নেতা-কর্মীদের আহবান জানান জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান।

এসময় তিনি বলেন, পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের স্বপ্নের নতুন বাংলাদেশ গড়তে জাতীয় পার্টি দূর্বার বেগে এগিয়ে যাচ্ছে। জাতীয় পার্টি দেশের মানুষের আশা-আকাংখা পূরণে একমাত্র আস্থার শক্তি। আগামী দিনের রাজনীতির মাঠে দুর্ভেদ্য রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হবে জাতীয় পার্টি।

যোগদান অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন- কো-চেয়ারম্যান মুজিবুল হক চুন্নু, যুগ্ম মহাসচিব ও জাতীয় স্বেচ্ছাসেবক পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোঃ বেলাল হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক এনাম জয়নাল আবেদীন, দফতর সম্পাদক সুলতান মাহমুদ, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক আল জুবায়ের, সমাজ কল্যাণ সম্পাদক এম.এ. রাজ্জাক খান, যুগ্ম দফতর সম্পাদক মাহমুদ আলম, সমরেশ মন্ডল মানিক, যুগ্ম স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডাঃ মোঃ আব্দুল্লাহ আল ফাত্তাহ, জাতীয় স্বেচ্ছাসেবক নেতৃবৃন্দের উপস্থিত ছিলেন, মনিরুজ্জামান টিটু, গোলাম মোস্তফা, হুমায়ুন খান, সৈয়দ মনিরুজ্জামান, আক্তারুজ্জামান খান, মাহমুদুর রহমান, আমিনুল হক সাইদুল, মোঃ শাহজাহান মিয়া, শেখ আবুল কালাম আজাদ কিবরিয়া, মোঃ নুরুজ্জামান, আহমদ চৌধুরী শাহীন, আব্দুস সাত্তার গালিব, মাওলানা খলিলুর রহমান, বিভিন্ন সংগঠনের যোগদানকারী নেতৃবৃন্দের নাম- মোঃ মিল্লাত হোসেন, মোস্তাকিন বিল্লাহ, আশরাফুল ইসলাম মিলন, মোঃ তহিদুল ইসলাম, ডাঃ শাখাওয়াত হোসেন দিদার, মোঃ মাসুদ ইসলাম আকাশ, মোঃ আবুল কাশেম, মোঃ জাহিদ হাসান, মোঃ হাসান, মোঃ ইয়াসিন হাসান সানী, ডাঃ তাহমিনা বেবী প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।

পরে একই মিলনায়তনে জাতীয় পার্টি ঢাকা বিভাগীয় অতিরিক্ত মহাসচিব ও প্রেসিডিয়াম সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা এমপির সভাপতিতে জাতীয় পার্টি ঢাকা বিভাগীয় প্রতিনিধি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় ঢাকা বিভাগের ১৩ জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের ও মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু’র সামনে সংগঠনকে আরো শক্তিশালী করতে বিভিন্ন দিক তুলে ধরে আলোচনা করেন।

ঢাকা বিভাগীয় প্রতিনিধি সভায় উপস্থিত ছিলেন- প্রেসিডিয়াম সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আব্দুস সাত্তার মিয়া, জহিরুল ইসলাম জহির, উপদেষ্টা- খান মোঃ ই¯্রাফিল খোকন, ভাইস চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান খান, ইয়াহ্ইয়া চৌধুরী, গোলাম মোহাম্মদ রাজু। ঢাকা বিভাগের বিভিন্ন জেলা নেতৃবৃন্দের নামÑ মোঃ সানাউল্লাহ সানু, আকরাম আলী শাহীন, এ্যাড. খন্দকার হাবিবুর রহমান বাচ্চু, এস.এম. ইয়াহিয়া, আলহাজ্ব আব্দুল বাতেন, মোঃ জয়নাল আবেদিন, শফিকুল ইসলাম শফিক, হাবিবুর রহমান ভূঁইয়া, আব্দুস সালাম চাকলাদার, হুমায়ুন খান, মিজানুর রহমান মিরু, আজহারুল ইসলাম সরকার, জহিরুল ইসলাম মিন্টু, মোঃ আবু তাহের, শরিফুল ইসলাম শরিফ, ফররুখ আহমেদ, মোঃ মজনু মিয়া, ইসমাইল হোসেন, ফকির শাহ আলম, গাজী শফিকুর রহমান, হাসিনা ইমরান চৌধুরী, মহিদুল ইসলাম হাওলাদার, খন্দকার নাজিম উদ্দিন, ইঞ্জিনিয়ার এম.এ. সাত্তার।