সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
সারাদেশে যখন বিএনপি নাজেহাল অবস্থা তখন নারায়ণগঞ্জে বিএনপিরও একই অবস্থা। তবে আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পরেও নারায়ণগঞ্জের বিএনপির আইনজীবীরা ছিলেন দাপটে প্রতিবাদী। কিন্তু সেই দাপট যেনো হারিয়ে ফেলেছেন এখানকার বিএনপির আইনজীবীরাও। নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে এবার বিএনপির আইনজীবীরা ছিলেন কোণঠাসা। কিন্তু বিএনপির উপর নির্বাচনে চাপ থাকলেও প্রতিবাদ করার সাহসটুকু দেখাতে পারেননি এখানকার বিএনপির আইনজীবীরা। যার ফলে সরকারি দলের কাছে চরম পরাজয় বহন করতে হয়। বিপর্যস্ত এখন বিএনপির আইনজীবীরা।
জানাগেছে, গত ২৪ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে ১৭টি পদের মধ্যে শুধুমাত্র একজন কার্যকরী সদস্য পদে অ্যাডভোকেট আহসান হাবিব ভূঞা গোপাল নির্বাচিত হন। বাকী ১৬টি পদেই জয় হয় আওয়ামীলীগ। যা ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসলে সমিতির নির্বাচনে সদস্য পদে জয়ী হয়েছিলেন অ্যাডভোকেট গোলাম হোসেন। যার পূর্নরাবৃত্তি দেখা গেল এবারের নির্বাচনে।
তবে নির্বাচনের দিন সকালে বিএনপির আইনজীবী অ্যাডভোকেট এইচএম আনোয়ার প্রধানকে কোর্ট থেকে সরকারি দলের লোকজন বের করে দিয়ে সন্ধা বেলায় ছেড়ে দিলেও বিএনপি টু শব্দও করতে পারেননি। একই দিন অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানের ছেলেকে আটক করেছিলেন ডিবি পুলিশ। যা নির্বাচন কেন্দ্রীক বলে দাবি করলেও প্রকাশ্যে কোন প্রতিবাদ করার সাহস পায়নি। নির্বাচনের দিন ভোট গ্রহণের সময় মধ্য রাতে সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে বিএনপির প্রার্থী অ্যাডভোকেট রাসেল প্রধান অমানসিক নির্যাতনের শিকার হলেও বিএনপি মুখ খুলতে সাহস করেনি। যদিও নির্বাচনের দিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত এসব অভিযোগ বিএনপির সভাপতি প্রার্থী অ্যাডভোকেট সরকার হুমায়ুন কবির মিডিয়াতে করে আসছিলেন। কিন্তু দলীয়ভাবে কোন জোড়ালো প্রতিবাদ করেনি বিএনপি।
এদিকে নির্বাচনের এক সপ্তাহ পেরিয়ে যাওয়ার পর ৪ ফেব্রুয়ারি সোমবার দুপুরে টেক্সেস বার এসোসিয়েশন কার্যালয়ে বিএনপির আইনজীবীরা নির্বাচন পরবর্তী সভা করেছেন। ঘরোয়া এই সভায় বিএনপির আইনজীবীরা কোন সিদ্ধান্তে আসতে পারেননি। সভা সূত্রে জানাগেছে, সিনিয়র আইনজীবীরা বলেছেন সমিতির নির্বাচনে নানা অভিযোগ তুলে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রত্যাখানের ঘোষণা করবেন।
তবে নির্বাচনের শুরুতেই বিএনপির হেভিওয়েট আইনজীবীরা নির্বাচনে দাড়াতে চাননি। অনেকটা আইনজীবীরা ধরে টেনে হেছড়ে প্রার্থী করেছেন বিএনপির শীর্ষ আইনজীবীরা। নির্বাচনে অনেক টানাপোড়ানের পর পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ঘোষণা করা হলেও সদস্য পদে অ্যাডভোকেট নাসরিন আক্তার প্রত্যাহার করে নেয়। ফলে অপূর্ণাঙ্গ প্যানেল নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে বিএনপি। তবে বিএনপির শীর্ষ আইনজীবীদের দাবি- গত ৩০ ডিসেম্বর জাতীয় নির্বাচনে বিএনপির নাজেহাল অবস্থার পর আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে প্যানেল দেয়াটাকেই সফলতা মনে করছেন। নির্বাচনের ফলাফল পর্যন্ত বিএনপি এখানে টিকে ছিল এটাকেই তারা বড় করে দেখছেন এবং এবারের নির্বাচনে বিএনপির আইনজীবীরা ছিলেন ঐক্যবদ্ধ। ফলে এ নির্বাচনে তাদের পরাজয়ের কিছু নাই বলে দাবি করেছেন।