শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে স্বজনদের আহাজারি ও আর্তনাদে পরিবেশ ভারী

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জের পশ্চিম তল্লা এলাকার বাইতুস সালাত জামে মসজিদে এসি বিস্ফোরণে দগ্ধদের আর্তনাদ আর হতাহত স্বজনদের আহাজারিতে পরিবেশ ভারী হয়ে উঠেছে বার্ন ইউস্টিটিউটের।

৪সেপ্টেম্বর শুক্রবার রাতের ওই ঘটনায় দগ্ধদের মধ্যে ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এখনো দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন ২৬ জন। তাদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। তাদের সবার শ্বাসনালী পুড়ে গেছে।

শনিবার সকালে জাতীয় শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সামনে ভিড় করছিলেন দগ্ধদের স্বজনরা। স্বজন হারানোর খবরে তাদের কেউ চিৎকার করে কাঁদছিলেন। কেউ আবার নীরবে অশ্রু বিসর্জন দিচ্ছিলেন। আর ভেতরে বাঁচার জন্য আকুতি জানাচ্ছিলেন দগ্ধরা। তাদের চিৎকার আর কান্নায় ওই এলাকার আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে।

দগ্ধদের এক স্বজন জানায়, মসজিদে এশার নামাজ পড়তে গিয়ে তার দুই জামাতা ইমাম হোসেন ও আমজাদ হোসেন দগ্ধ হয়েছেন। তারা পোশাক কারখানায় কাজ করেন। নারায়ণগঞ্জের খানপুর সরদারপাড়া এলাকায় তাদের বাসা।

আরেকজন জানান, তার ভাই ভ্যানচালক মিজানুর রহমানকে দগ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে শুনে ছুটে এসেছেন। তিনি আরও জানান, বিস্ফোরণে দগ্ধদের চেহারা দেখে কাউকে চেনা যাচ্ছে না। পুরো শরীরের চামড়া পুড়ে গেছে। বের হয়ে গেছে লাল মাংস। স্বাভাবিক যে চেহারাটি আগে ছিল পুড়ে যাওয়ার পর পুরোই পরিবর্তন হয়েছে।

শুক্রবার রাতে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার পশ্চিমতল্লা এলাকার বাইতুস সালাত জামে মসজিদের এয়ার কন্ডিশনার (এসি) বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। মুহূর্তের মধ্যে মসজিদের ভেতরে থাকা প্রায় ৪০ জন আহত হন।

বিস্ফোরণের পর হুড়োহুড়ি করে বের হওয়ার সময় অনেককেই বস্ত্রহীন এবং শরীর ঝলছে যাওয়া অবস্থায় দেখা গেছে। অনেককেই কান্নাকাটি করতে করতে বের হতে দেখা যায়। মসজিদের ফ্লোর রক্তাক্ত অবস্থায় দেখা যায়।

তাদের মধ্যে দগ্ধ অবস্থায় ৩৭ জনকে জাতীয় শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। তাদের মধ্যে এখন পর্যন্ত ১১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

বার্ন ইন্সটিটিউটের আবাসিক মেডিকেল অফিসার পার্থ শংকর পাল জানান, দগ্ধদের মধ্যে মোট ১১ জনের মৃত্য হয়েছে। তাদের বয়স ৭ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে। দগ্ধ অন্যদের সবার অবস্থাও শঙ্কাজনক। তাদের শরীরের ৯০ শতাংশের বেশি পুড়ে গেছে। কারও শরীরের ১০০ শতাংশই পুড়ে গেছে। তাদের ব্যাপারে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না।

সূত্র: ঢাকা টাইমস