মহানগর বিএনপির কমিটিতে ১৮আইনজীবী: মামলায় জর্জরিত নেতাকর্মীদের পাশে ভুমিকা?

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে আইনজীবীদের অগ্রাধিকার দেখা যায়। কমিটিতে ১৮জন আইনজীবীকে বিভিন্ন পদে রাখা হয়েছে। অতীতের কোন কমিটিতে এত আইনজীবী নেতাকে ঠাঁই দেয়া হয়নি। গত ২১ ফেব্রুয়ারি নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। এরও আগে মহানগর বিএনপির কমিটির সাংগঠনিক কার্যক্রমে স্থিতিবস্থার আদেশ দেন আদালত। নারায়ণগঞ্জে শত শত মামলায় কয়েক হাজার নেতাকর্মী মামলায় জর্জরিত। করোনা পরিস্থিতির আগেও প্রতিদিন আদালতে হাজিরা দিয়েছেন নেতাকর্মীরা। পূর্ণাঙ্গ কোর্ট চালু হওয়ার পর আবারো আদালতে হাজিরায় নিয়মিত আসছেন নেতাকর্মীরা।

বিএনপির নেতাকর্মীরা বলছেন- মুলত মামলায় জর্জরিত নেতাকর্মী আদালতে নিয়মিত আসা যাওয়ার কারনে এবং তাদের পক্ষে আইনজীবীদের জোরালো ভুমিকার কারনে বিএনপির রাজনীতিতে আইনজীবীদের গুরুত্ব বেড়েছে। আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর মামলায় আসামি হওয়া নেতাকর্মীদের একমাত্র ভরসা আইনজীবীদের সহযোগীতা ও আইনি লড়াই। সেই সঙ্গে আদালতপাড়ার রাজনীতিও নিয়মিত সরগরম রাখছেন আইনজীবীরা।

মামলায় জর্জরিত নেতাকর্মীরা বলছেন- বিএনপির সকল আইনজীবীরা একসঙ্গে সহযোগীতা না করলেও বলয়ভিত্তিক রাজনীতির কারনে নিজেদের বলয়ের নেতাকর্মীদের পক্ষে আইনি লড়াইয়ে রয়েছেন নিয়মিত। আদালতপাড়ায় বিএনপির নেতাকর্মীদের সবচেয়ে বড় ভরসা অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান। যিনি মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি হলেও পুরো জেলার নেতাকর্মীরা তার কাছ থেকে আইনি সহায়তা পাচ্ছেন। সেই সঙ্গে বিএনপি ও বিএনপির মামলায় জর্জরিত নেতাকর্মীদের পক্ষে এসব আইনজীবীদের ভুমিকা দেখছেন।

নেতাকর্মীদের কেউ কেউ বলেছেন-একমাত্র সভাপতি আবুল কালাম ছাড়াও প্রায় সকলের কাছ থেকেই আইনি সহায়তা পাচ্ছেন নেতাকর্মীরা। তবে মাঠের কিংবা রাজপথের রাজনীতিতে অনেক আইনজীবীদের কমই দেখা যায়। দলীয় মিটিং মিছিলে তাদের অংশগ্রহণ একটু কমই থাকে।

জানাগেছে, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির ২৩ সদস্য বিশিষ্ট আংশিক কমিটি গঠনের পর ১৫১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় বিএনপি। ২০১৯ সালের ৩০ অক্টোবর এই পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। এই কমিটিতে অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে নারায়ণগঞ্জের আইনজীবীদের। যেখানে কমিটিতে ১৮ জন আইনজীবীকে বিভিন্ন পদে রাখা হয়েছে।

কমিটিতে সভাপতি পদে রয়েছেন অ্যাডভোকেট আবুল কালাম, সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান, সহ-সভাপতি পদে অ্যাডভোকেট জাকির হোসেন, অ্যাডভোকেট সরকার হুমায়ুন কবির, অ্যাডভোকেট রিয়াজুুল ইসলাম আজাদ, অ্যাডভোকেট রফিক আহমেদ ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু।

এদের ছাড়াও কমিটিতে সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক পদে রয়েছেন অ্যাডভোকেট কাজী রুবায়েত হাসান সায়েম, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সামাদ মোল্লা, আইন বিষয়ক সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান মোল্লা, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট মোস্তাক আহমেদ, মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান মতিন, মৎস্যজীবী বিষয়ক সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট এইচএম আনোয়ার প্রধান, সহ-আইন বিষয়ক সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট তরিকুল ইসলাম বুলবুল, অ্যাডভোকেট সুমন মিয়া, অ্যাডভোকেট শরীফুল ইসলাম শিপলু, সদস্য পদে অ্যাডভোকেট সুলতান মাহামুদ ও অ্যাডভোকেট মাহামুদা আক্তার।

এর আগে ২০১৭ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি ২৩ সদস্য বিশিষ্ট আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। সেই আংশিক কমিটির কিছু নেতাদের পদ পদবী রদবদল করে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির ১৫১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। মহানগর বিএনপির সভাপতি হিসেবে সাবেক সাংসদ আবুল কালাম ও সাধারণ সম্পাদক এটিএম কামালকে বহাল রেখেই ৩০ অক্টোবর এই পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।