আলোচনায় জেলা বিএনপিতে তৈমূর-মান্নান, মহানগরীতে সাখাওয়াত-মামুন

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

করোনা পরিস্থিতির কারনে দীর্ঘ প্রায় ৪ মাসের বেশি সময় ধরে বিএনপির সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে। আগামী ১৫ তারিখ পর্যন্ত এই স্থগিতের নির্দেশনা রয়েছে। তবে করোনা পরিস্থিতি যত শিথিল হচ্ছে বিএনপির রাজনীতি চাঙ্গা হতে শুরু করেছে। বিএনপি এর অঙ্গ সহযোগী সংগঠনগুলোর কমিটি গঠন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে পুুরোদমে। নারায়ণগঞ্জে জেলা বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত, মহানগর কমিটির কার্যক্রমে আদালতের স্থিতিবস্থা জারি। যার ফলে দুটি কমিটি গঠন নিয়ে মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মাঝে জোর আলোচনা। কারা আসছে দুটি কমিটির নেতৃত্বে এমন আলোচনা রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের মুখে মুখে।

নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির কমিটি গঠনের বিষয়ে নেতাকর্মীদের আলোচনায় ওঠে আসছে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকারের নাম। এ ছাড়াও নেতাকর্মীরা জেলা বিএনপির নেতৃত্ব দেয়ার মত নেতা দেখছেন না। ফলে ভিন্ন কিছু না হলে তৈমূর আলম খন্দকারকেই সভাপতি কিংবা আহ্বায়ক পদে অধিষ্ট করা হতে পারে বলে নেতাকর্মীদের ধারণা।

এরপরই আলোচনায় আসছে তৈমূর আলম খন্দকারের সঙ্গে সাধারণ সম্পাদক কিংবা সদস্য সচিব হিসেবে কে বেশি যোগ্য সেই বিষয়টি। যেখানে সর্বপ্রথম আলোচনায় আসছেন সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আজহারুল ইসলাম মান্নান ও জেলা বিএনপির সাবেক সেক্রেটারি অধ্যাপক মামুন মাহামুদের নাম।

তবে অধ্যাপক মামুন মাহামুদ সিদ্ধিরগঞ্জের বাসিন্দা হওয়ায় এবং মামলা সংক্রান্ত জটিলতা থাকায় সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকাটি মহানগরীতে বহাল রাখা হলে মামুন মাহামুদকে ফিরতে হবে মহানগর কমিটিতে। সেক্ষেত্রে জেলা বিএনপির সেক্রেটারি কিংবা সদস্য সচিব পদে দেখা যেতে পারে আজহারুল ইসলাম মান্নানকেই। ফলে জেলা বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে স্থানীয় নেতাকর্মীদের নানা বিশ্লেষনে সবচেয়ে আলোচনায় অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার ও আজহারুল ইসলাম মান্নান।

কেউ কেউ বলছেন অধ্যাপক মামুন মাহামুদ বিগত রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন এবং বেশকবার জেল খেটেছেন। যে কারনে তাকে এখনই বাদ দেয়া নাও হতে পারে। যদি সিদ্ধিরগঞ্জ থানা এলাকাটি আবারো জেলাতেই রাখা হয় তাহলে তৈমূর আলম খন্দকারের সঙ্গে থাকবেন মামুন মাহামুদ। কিন্তু মামলা সংক্রান্ত জটিলতা নিরসন করতে হলে সিদ্ধিরগঞ্জকে মহানগরীতেই রাখতে হবে এবং এক্ষেত্রে মামুন মাহামুদকে রাখা হতে পারে মহানগরীতে। হয়তো মামুন মাহামুদ হবেন মহানগর বিএনপির সেক্রেটারি।

এমন পরিস্থিতিতে মহানগর বিএনপির সভাপতি পদে কে আসতে পারেন সেই বিষয়টি নিয়েই জোর আলোচনা নেতাকর্মীদের মাঝে। মহানগর বিএনপির সভাপতি আবুল কালাম রাজনীতি থেকে একেবারেই নিষ্ক্রিয়। সেক্রেটারি এটিএম কামাল চলে গেছেন আমেরিকায়। মহানগরীতে একমাত্র নেতা এখন অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান যিনি মহানগর বিএনপির বর্তমান সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে রয়েছেন। মহানগর বিএনপির কমিটি গঠনের পর থেকেই সাখাওয়াত হোসেন খান একাই মহানগর বিএনপির রাজনীতিকে সচল রেখেছেন।

নেতাকর্মীরা বলছেন- মহামারি করোনা পরিস্থিতিতেও মহানগর বিএনপির রাজনীতি ধরে রেখেছেন সাখাওয়াত হোসেন খান। মহানগর বিএনপির রাজনীতি এখন পুরোপুরি অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানের উপর নির্ভরশীল। রাজনীতির শুরু থেকেই টেবিল রাজনীতিবিদ হিসেবে পরিচিত সাবেক এমপি আবুল কালাম মহানগর বিএনপির সভাপতির পদ নিয়ে বরাবরের মতই বর্তমান রাজনীতিতেও উধাও। সেক্রেটারি এটিএম কামাল রয়েছেন আমেরিকায়। গত মার্চ থেকে করোনা পরিস্থিতিতে মহানগর বিএনপির পক্ষ থেকে অসহায় দিনমজুর খেটে খাওয়া পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়াতে দেখা যায়নি। কিন্তু সাখাওয়াত খাদ্য সামগ্রী ও ঈদ সামগ্রী নিয়ে ঘরে ঘরে পৌছে দিয়েছেন।

মহানগর বিএনপির সম্মান রক্ষা করেছেন সিনিয়র সহ-সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন খান। যিনি মহানগরী ও এর বাহিরেও কয়েক হাজার গরীব অসহায় দিনমজুর খেটে খাওয়া পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন খাদ্য সামগ্রী, ঈদ সামগ্রী বিতরণের মাধ্যমে। সেই সঙ্গে সমস্যায় জর্জরিত নেতাকর্মীদের পাশেও দাড়িয়েছিলেন সাখাওয়াত। ফলে মহানগরীর রাজনীতিতে এককবাবে সাখাওয়াত হোসেন খান বিএনপির রাজনীতি করছেন। যে কারনে সভাপতি পদে সাখাওয়াত হোসেন খানকেই যোগ্য এবং যথা সময়ে পারফেক্ট মনে করছেন নেতাকর্মীরা। যদি সিদ্ধিরগঞ্জ থানা এলাকা নিয়ে মহানগর বিএনপির কমিটি হয় সেক্ষেত্রে হয়তো সাখাওয়াত হোসেন খানের সঙ্গে সেক্রেটারি পদে দেখা যেতে পারে অধ্যাপক মামুন মাহামুদ।