সোনারগাঁয়ের ডাকাত সর্দার হাবুর ৫ সহযোগী রিমান্ডে

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের যুবলীগ নেতা আমিনুল ইসলাম ভূঁইয়াকে হত্যার উদ্দেশ্যে কুপিয়ে জখম করার মামলায় বারদী ইউনিয়নের মেম্বার চিহ্নিত ডাকাত সর্দার হাবিবুর রহমান ওরফে হাবু ডাকাতের ৫ সহযোগীর ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

২৭ জুলাই সোমবার দুপুরে ভার্চ্যুয়াল কোর্টে শুনানি শেষে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল মোহসীনের আদালত এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ৫ আসামির ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে আবেদন করেন।

ভার্চুয়াল কোর্টে বাদী পক্ষের আইনজীবী হিসেবে শুনানিতে অংশগ্রহণ করেন জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান দিপু।

বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান দিপু আসামিদের রিমান্ডের জন্য জোড়ালোভাবে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। আসামি পক্ষের আইনজীবীরাও আসামিদের রিমান্ড আবেদন বাতিল ও জামিনের আবেদন করেন।

রিমান্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলো- সোনারগাঁও উপজেলাধীন বারদী ইউনিয়নের মান্দারপাড়া গ্রামের নুরা ডাকাত ওরফে নুরা পাগলার ছেলে ফাহিম, একই এলাকার শাফির ছেলে সোলেমান, মছলন্দপুর গ্রামের আবু সিদ্দিকের ছেলে আমান উল্লাহ, খলিলের ছেলে আলম, চেঙ্গাকান্দি গ্রামের তাহের আলীর ছেলে ইকবাল।

এছাড়াও গত ২২ জুলাই বুধবার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নুরুন্নাহার ইয়াসমিনের আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের জন্য আবেদন করলে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে প্রেরণ করেন।

ঘটনা সূত্রে জানাগেছে, নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার বারদী ইউনিয়নের শান্তিরবাজার এলাকায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে ডাকাত সর্দার হাবিবুর রহমান হাবু ও তার ছেলে আশিক সহ একটি সন্ত্রাসী বাহিনী বারদি ইউনিয়ন যুবলীগের সহ-সভাপতি আমিনুল ইসলামকে কুপিয়ে জখম করে। স্থানীয়রা জানিয়েছিল- এলাকায় দুটি গ্রুপই ভূমিদস্যূতায় জড়িত। এসব ভূমিদস্যূদের কারনে শান্তিরবাজারে এখন অশান্তি।

গত ১২ জুলাই রবিবার দুপুরে শান্তিরবাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহত যুবলীগ নেতাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

স্থানীযদের সূত্রে, উপজেলার শান্তিরবাজার এলাকায় একটি জমি নিয়ে ডাকাত সর্দার হাবিবুর রহমান হাবু, ফারুক মেম্বার, সানু মেম্বার, আমজাদ হোসেন ও সানাউল্লাহ সিন্ডিকেট ও আব্দুল মতিনের সাথে জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছে।

এ নিয়ে আগের দিন শনিবার সকালে সোনারগাঁও থানায় একটি বিচার শালিস বসে। শালিসে সোনারগাঁও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন সহ ওই এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

শালিসী বৈঠকে আব্দুল মতিনের পক্ষে সকল কাগজপত্র সঠিক পায় বলে দাবি করে সালিশকারীরা। তবে শালিসকারীরা দুই পক্ষের লোকজনদের কাছ থেকে বিশেষ সুবিধা নিয়ে এসব শালিসি বৈঠক করেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন সরেজমিনে তদন্ত করে শালিসি বিচারের রায় দেবেন বলে বৈঠকে জানানো হয়।

এদিকে রবিবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন সরেজমিনে ওই জমির দেখতে যান। ওই জমির মালিক আব্দুল মতিনের পক্ষে যুবলীগ নেতা আমিনুল ইসলাম কথা বলার কারনে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন জমির স্থান ত্যাগ করার পর যুবলীগ নেতা আমিনুল ইসলামকে একা পেয়ে ডাকাত সর্দার হাবু ও তার ছেলে আশিক সহযোগী শাহজালাল ও ডালিম সহ ১০-১২ জনের একটি দল দেশীয় অস্ত্র রামদা, ছোরা, চাপাতি, চাইনিজ কোড়াল ও লোহার রড দিয়ে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যার চেষ্টা চালায়।

ঘটনাস্থল থেকে এলাকাবাসী মারাত্মক আহত অবস্থায় আমিনুলকে উদ্ধার করে সোনারগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার পর তার অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে।