সোনারগাঁয়ে চৈতী কম্পোজিটের বিষাক্ত বর্জ্যে মাটি হলো ২০ যুবকের স্বপ্ন

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ পৌরসভার চৈতী কম্পোজিটের একটি কারখানার বিষাক্ত বর্জ্য পানিতে মিশে কয়েকটি বিলের প্রায় কোটি টাকার মাছ মরে ভেসে উঠেছে।

বর্জের পানিতে মাছ মরার ঘটনায় পৌরসভা বাঘনাজিরপুর ও সনমান্দী ইউনিয়নের নাজিরপুর এলাকার ভুক্তভোগীরা সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

এলাকাবাসী জানান, পৌর গোয়ালদী গ্রামের করিম মাওলানার ছেলে আল আমিন যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে প্রশিক্ষণ শেষে আত্মকর্মসংস্থানের লক্ষে গ্রামের ২০জন যুবক ১.৮০ একর জমি ভাড়া নিয়ে একটি মৎস্য প্রকল্প শুরু করেন। তাদের প্রকল্পে বর্তমানে বিভিন্ন প্রজাতের প্রায় ৫০ লাখ টাকার রয়েছে। এ ছাড়া সনমান্দী ও পৌর এলাকার রিপন, বদরুজ্জামান, কামাল সহ প্রায় ৩০ জন মৎস্য চাষী মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন।

ভুক্তভোগী আল আমিন জানান, মাছ চাষ করতে বিলের চারিদিকে নেট, খুটি, বাঁশ ও মাছের খাবারসহ এ পর্যন্ত ২৫ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। মৌসুম শেষে এ প্রকল্পের মাছ প্রায় দেড় কোটি টাকা বিক্রি করতে পারতেন। ২৭ জুলাই রবিবার রাত ২টার সময় চৈতী কারখানার বিষাক্ত বর্জ্য নিষ্কাশনের কারণে বিলের সমস্ত মাছ মরতে শুরু করে। বিলে রুই, কাতলা, চিতল, বোয়াল, কই, মাগুর ও সিলভারকার্প জাতীয় মাছসহ প্রায় ৩০ প্রজাতির মাছ ছিল। সব মাছ মরে ভেসে ওঠায় বিনিয়োগকারীরা এখন পথে বসেছেন।

স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, চৈতী কম্পোজিট প্রকাশ্যে প্রতিঘণ্টায় ৭০ হাজার গ্যালন বর্জ্য বিভিন্ন খাল, বিল ও নদে অবৈধভাবে নিষ্কাশন করছে। ইটিপির মাধ্যমে বর্জ্য শোধন ব্যয়বহুল বলে তা ব্যবহার করছে না। প্রশাসন, পরিবেশ অধিদপ্তর কিংবা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপকক্ষ কারখানা পর্যবেক্ষণ করতে আসলে অল্প সময়ের জন্য ইটিপি চালু করে। পরে আবার বন্ধ করে দেয়।

এ ব্যাপারে চৈতী কম্পোজিটের জিএম মিজানুর রহমান মোবাইল ফোনে দাবি করেন, আমরা ইটিপি ব্যবহার করে শোধনকৃত পানি আমাদের নিজস্ব জমিতে ফেলছি।

সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আতিকুল ইসলাম বলেন, আমি সোনারগাঁয়ে যোগদান করার পরপরই বিষাক্ত বর্জ্যে বিলের মাছ মারা যাওয়ার লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে সরেজমিন তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।