‘জীবনের চেয়ে সময় অনেক মূল্যবান’

সান নারয়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

১৯৭৪-৭৫ ইং সনের কথা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্নাকোত্তর “ম্যানেজন্ট” ডিপার্টমেন্ট নতুন চালু করেছে। এল.এল.বি শেষ বর্ষ’র ছাত্র থাকাবস্থায় নতুন ডিপার্টমেন্টে টেষ্ট পরীক্ষায় কতৃকার্য হয়ে মাষ্টারর্স কোর্সে ভর্তির সূযোগ পেলাম। কলা ভবনের পূর্ব দিকের চতুর্থ তালায় ক্লাস রুম। ডিপার্টমেন্টের চেয়ারম্যান অধ্যাপক দূর্গাদাস ভট্টাচার্য (পরবর্তীতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপচার্য) প্রথম ক্লাসে এসে সিলেবাস বর্হিরভুত একটি ছোট সূচনা বক্তৃতা করেন। বক্তৃতাটি আমার মনপুত হয়েছিল এবং আমি এখনো তা মনে রেখেছি। তিনি বলেছিলেন “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়” একটি ফুলের মত, এখানে ‘মৌমাছি’ মধু আহরন করে, প্রজাপতি আরোহন করে “বিষ” এবং কিছু কিট পতঙ্গ বা পাখী আছে যারা শুধু আসে, আর ঘুরে ফিরে চলে যায়”। সে সময়ে তার পাতলা গড়ন শরীর ও বক্তব্যটি এখনো আমার চোখে ও মনে পরিষ্কারভাবে পরিষ্ফুটিত হয়। তিনি ছাত্রদের “আপনি” বলেই সম্বোধন করে উক্ত ছোট বক্তব্য রেখে অর্থনীতির ক্লাস শুরু করলেন।

অধ্যাপক মহোদয়ের প্রথম ক্লাসের সূচনালগ্নের বক্তব্যে তিনি যা বুঝাতে চেয়েছেন বলে আমি বুঝে নিয়ে ছিলাম, তা হলো, বিশ্ববিদ্যালয়ের বড় বড় ইমারত, বড় লাইব্রেরী, আভিজাত্যের সুনসান, ঠাটফাটের চাকচিক্য কোন ছাত্রকে কিছু দিতে পারে না, যদি না শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয় কালীন “সময়”কে কাজে লাগিয়ে নিজ জীবনকে গড়তে না পারে। এখনতো “আর্দশ লিপি” বইটি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে উঠে গেছে। প্রাথমিক স্কুল জীবনে আর্দশ লিপিতে বারং বার একটি কবিতা পড়ে ছিলাম, তা হুবুহু মনে নাই তবে মর্মার্থ এটুকু মনে পড়ে যে, সময় চলে গেলে আসবে না ফিরে, অতএব, হেলায় খেলায় সময় নষ্ট করিও না। প্রবাদ রয়েছে যে, “সময়” ও “নদীর স্রোত” কারো জন্য অপেক্ষা করে না।” ইংরেজীতে যা একটি প্রতিষ্ঠিত প্রবাদ ‘Time & Tide Wait For None”। প্রবাদটি অনেকে জেনেও তা কোন প্রকার মূল্যায়ন করে না। আমার নিকট “সময়ের” মূল্যায়নটি গোড়া থেকেই অনেক মহা মূল্যবান বিবেচিত হতো বলেই অধ্যাপক দূর্গাদাস মহোদয়ের ছোট বক্তৃতার ব্যাখ্যাটি অনুরূপভাবে বুঝে ছিলাম, যা অত্র “কলামটির” প্রারম্ভেই উল্লেখ করেছি।

যখন থেকেই আমি “জীবনের চেয়ে সময় অনেক মূল্যবান” বাক্যটি আমার ব্রত হিসাবে নিয়েছি, তখন থেকেই নিজের জীবনে বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছি, কিন্তু বাস্তবায়ন করতে পারি নাই, যার পিছনে অনেক কারণ, ঘটনা অঘটনা, অযোগ্যতা, পারিপার্ষিক অবস্থান প্রভৃতি। তবুও শত প্রতিকুলতার মধ্যে “জীবনের চেয়ে সময় অনেক মূল্যবান” বেদবাক্য হিসাবে গ্রহণ করেছি এবং প্রত্যাশা করি যে, ভবিষ্যত প্রজন্ম হয়তো আমার “বিশ্বাসের” উপর আস্থা জ্ঞাপন করে নিজ নিজ “সময়’কে যথাযথ মূল্যায়ন করে “সময়”কে সঠিকভাবে কাজে লাগাবে। মানুষের দেহ, সুনাম (Good will) অর্থ, জমি, সন্তান, ব্যবসা, বানিজ্য যেমন একটি সম্পদ, “সময়” (অর্থাৎ সময়ের সঠিক ব্যবহার) এর চেয়ে দামী সম্পদ বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।

বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সনদ প্রাপ্ত হয়ে ১৯৭৮ ইং সনের ২৮শে জানুয়ারী নারায়নগঞ্জ মহকুমা আইনজীবি সমিতির সদস্যপদ গ্রহণ করত: আমার পূর্বতম সংগঠন শ্রমিক, মানবাধিকার ও সামাজিক কর্মকান্ডের পাশাপাশি আইন পেশায় আতœনিয়োগ করি। তৎসময়ে নারায়নগঞ্জ পূরাতন কোর্ট মসজীদের উল্টো দিকে আমার একটি সুসজ্জিত মানসম্পন্ন আইন পেশার চেম্বার ছিল। আল্লাহর রহমতে উক্ত চেম্বারের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে নারায়নগঞ্জের অনেক আইনজীবি এখন প্রতিষ্ঠিত (উল্লেখ্য, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে তৎকালিন ক্ষমতাসীনেরা ১৯৯০ ইং সনে চেম্বারটি জ্বালিয়ে দেয়)।

“গণডাক” নামে একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা আমার সম্পাদনায় উক্ত সময়ে প্রকাশিত হতো। বিচারপতি কামালউদ্দিন হোসেন বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি পদে ৪ বৎসর দায়িত্ব পালন করে ১৯৮২ ইং সনে অবসর গ্রহণের পর একটি মানবাধিকার সংগঠনের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখার জন্য নারায়নগঞ্জ বার লাইব্রেরিতে আসলে, অনুষ্ঠান শেষে আপ্যায়নের জন্য আমার চেম্বারে আসার অনুরোধ করলে তিনি সদয় সম্মতি প্রদান করেন। সাথে আরো অনেকেই ছিলেন। তখন আমার চেম্বারে প্রবেশ পথে বড় করে লিখা ছিল “জীবনের চেয়ে সময় অনেক মূল্যবান”, কথাটি দেখে অনেকেই টিপন্নী কেটে বিভিন্নভাবে আলোচনা, সমালোচনা করতে থাকেন। কিন্তু আল্লাহর মেহেরবানী সাবেক প্রধান বিচারপতি বললেন যে, “কথাটি সঠিক এবং কোরানিক দৃর্ষ্টি ভঙ্গিতেও কথাটি দ্রুব সত্য।” জীবনের প্রারম্ভে অর্থাৎ ১৯৬৮ ইং সনে এস.এস.সি পরীক্ষা দেয়ার পূর্ব থেকেই যে কথাটি বেদবাক্য হিসাবে বিশ্বাস করতাম, শ্রদ্ধেয় অধ্যাপক দূর্গাদাসের পর প্রধান বিচারপতির (সাবেক) পক্ষ থেকে স্বীকৃত পেয়ে আস্বস্থ হয়েছিলাম।

কোথাও থেকে সমর্থন না পেলেও “জীবনের চেয়ে সময় অনেক মূল্যবান” কথাটি আমার পেশাগত প্যাড (রাইটিং লেটার হেড), ভিজিটিং কার্ড, আমার ব্যবহ্নত ইনভেলাপ, ছাপানো ফাইল এবং ব্যক্তিগত চেম্বারে লিখে রাখা অব্যাহত রাখি, এতে অনেক অনেক সমালোচনার সম্মূখীন হয়েছি, মনে হয়েছে পৃথিবীতে আমার এ বিশ্বাসকে একমাত্র আমিই বিশ্বাস করি, এমনকি নিকটস্থ লোকজন বিষয়টি নিয়ে এখনো প্রশ্ন করে বলে যে, জীবন না থাকলে “সময়” কোন উপকারে আসবে? জবাবে আমি বলি, নিজ জীবন যদি যথাযথ ভাবে ব্যবহ্নত না হয়, একটি “জীবন” যদি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির নিজ, পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র বা জাতির কোন উপকার বা কাজে না লাগে তবে সার্থকহীন জীবন নিয়ে বেচে থেকেই কি লাভ? জিজ্ঞাসা করতে চাই মানুষের “জীবন” বা “জীবন কাল” অর্থাৎ আয়ুষ্কাল বাড়ে না কমে? একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য একজন মানুষের পৃথিবীতে আগমন ও প্রস্তান, যার নিয়ন্ত্রণ সংশ্লিষ্ট কোন মানুষের হাতে নাই। ফলে গুরুত্বসহকারে বিবেচনায় নিতে হবে যে, বয়স বাড়ে না কমে? যে জিনিসটি স্বাভাবিক নিয়মে কমে যায় সে বিষয়টিই তো মূল্যবান? একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যদি জীবনকে সার্থক করে তুলতে হয় তবে অবসর বা আমোদ আল্লাদে, ফুর্তিতে “সময়” কাটানোর অবকাশ কোথায়? নিবিরভাবে আত্মদর্শন বা আত্মজিজ্ঞাসা থেকেই সার্বিক বিষয় আমাদের বোধদ্বয় হওয়ার কথা।

এ বিশ্বাসকে বেদবাক্য মনে করে দৃঢ়তার সাথে চলতে থাকি, কিন্তু আমার এ বেদবাক্য ও পেশার সাথে বৈপিরিত্ত দেখা দিল ২০০১ সনের ২০ই ডিসেম্বর বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ কর্পোরেশনের (বিআরটিসি) চেয়ারম্যান পদে বিএনপি সরকার যখন আমাকে চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগ দান করে, ২০০৬ ইং সনের ৫ই নভেম্বর পর্যন্ত একটানা এ দায়িত্বে ছিলাম। চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্বপালনকালে রাষ্ট্রীয় পরিবহণের অনেক বাস ট্রাক বহর তো বটেই, বিভিন্ন রুটে অনেক প্রাইভেট মালিকানাধীন বাস সার্ভিস আমাকে উদ্ভোধন করতে হয়েছে। ঢাকা-আগরতলা আন্তর্জাতিক বাস সার্ভিস আমার তত্বাবধানে, সক্রিয় প্রচেষ্ঠায় চালু হয়েছে। তখন দেখেছি যে, সরকারী ও বেসরকারী সকল পরিবহণের গায়ে লিখা ছিল “সময়ের চেয়ে জীবন অনেক মূল্যবান” যা ছিল আমার “বিশ্বাসের” অর্থাৎ “জীবনের চেয়ে সময় অনেক মূল্যবান” কথাটির ঠিক উল্টো। যা বিশ্বাস করি না, তা মেনে নিয়েই দীর্ঘ পাঁচ বৎসর রাষ্ট্রীয় পরিবহণের কর্নধারের দায়িত্ব পালন করাটা মহাত্মা গান্ধীর মাংস খাওয়ার কথা স্মরণ করিয়ে দিতো। ভারতের জাতির পিতা মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী তার আত্মকথায় লিখেছেন যে, পরম বৈষ্ণব হয়েও নিজ ইচ্ছার বিরুদ্ধে তিনি কয়েকবার মাংস খেয়েছেন (সূত্র: আত্মকথা অথবা সত্যোর সন্ধানে পৃষ্ঠা ৪৬-৪৯)। পরিবহন ব্যবস্থাকে কিভাবে ঢেলে সাজিয়ে যানযট ও দূর্ঘটনা মুক্ত করা যায়, এ মর্মে অধ্যাপক (প্রায়ত) ড. জামিলুর রেজা চৌধুরীকে প্রধান করে বিএনপি সরকার উচ্চ পর্যায়ের একটি কমিটি গঠন করে, যার একজন সদস্য হিসাবে বিশেষজ্ঞ কমিটির সভায় আমাকে উপস্থিত হতে হয়েছে। মিটিংয়ে যানযট ও সড়ক দূর্ঘটনার বিষয়টি খুবই গুরুত্বের সাথে আলোচনা হতো, রাষ্ট্রীয় পরিবহন সংস্থার প্রধান হিসাবে আলোচকের পরিবর্তে আসামীর কাঠগড়ায় (মানসিক) দাড়িয়ে আমাকে জবাব বা নিজের মতামত ব্যক্ত করতে হতো। সড়ক দূর্ঘটনার জন্য চালকদের পর্যাপ্ত ট্রেনিং এর অভাবে দূর্ঘটনা বেশী হয় মর্মে বিশেষজ্ঞরা সুপারিশ প্রদান করলে দেশব্যাপী ড্রাইভিং ট্রেনিং ইনষ্টিটিউট স্থাপন করার জন্য বিআরটিসি’র উপর দায়িত্ব অর্পন করা হয়। যেখানে বিআরটিসি’র ডিপো, কারখানা স্থাপনা প্রভৃতি ছিল, সে সব জেলায় উদ্দ্যেগ নিয়ে ১৮টি ড্রাইভিং ট্রেনিং স্কুল চালু করি। যারা কথিত“ওস্তাদ” ধরে ড্রাইভিং শিখেছে তাদের বিভিন্ন সেন্টারে ট্রেনিং দিয়ে পরীক্ষা নিয়ে সনদপত্র প্রদান করি, মহাব্যবস্থাপক (ট্রেনিং) সার্টিফিকেট স্বাক্ষর করতেন, যাতে চেয়ারম্যান হিসাবে আমি প্রতি স্বাক্ষর দিয়েছি, যাতে কোন ভূয়া সার্টিফিকেট ইস্যু না হয়।

উল্লেখ্য, আমাদের দেশে বিআরটিসি’র ড্রাইভিং ট্রেনিং ইন্সটিটিউট ছাড়া সরকারী অন্য কোন এ জাতীয় প্রতিষ্ঠান ছিল না যাহাতে পর্যাপ্ত ট্রেনিং নিয়ে কারিগরি প্রাথমিক জ্ঞান সম্পন্ন একজন দক্ষ ড্রাইভার, যার অটোমোবাইল জ্ঞান সহ রাস্তায় দায়িত্ব নিয়ে গাড়ী চালানোর সচেতনা ও অভিজ্ঞতা থাকতে পারে। উল্লেখ্য, ভাবতে অবাক লাগে যে, আমাদের দেশে মেক্সিমাম ড্রাইভিং লাইসেন্সই দুই নাম্বার। গাড়ী চালানোর অভিজ্ঞতা থাক বা না থাক টাকা দিলেই ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়া যায়। সরকারী উচ্চ পদস্থ অনেক কর্মকর্তার ড্রাইবারের লাইসেন্স দু’নম্বর, এমন অনেক তথ্য পেয়েছি। Colour Blind ব্যক্তির গাড়ী চালানো নিষেধ থাকা স্বত্বেও অনুরূপ অনেক ড্রাইভার পেয়েছি যারা “রাত কানা” রোগ থাকা স্বত্বেও ড্রাইভিং করে যাচ্ছে। প্রতি বৎসর গাড়ীর ফিটনেস পরীক্ষা করার বিধান চালু থাকলেও বাংলাদেশে ড্রাইভারদের শারিরীক ফিটনেস পরীক্ষার কোন ব্যবস্থা নাই। আই.এল.ও বিধান মতে এক টানা ৮ ঘন্টার বেশী পরিশ্রম করার বিধান নাই। অথচ লং রুটে একটানা ১০/১২ ঘন্টা, অধিকন্তু যানজট প্রভৃতির কারণে ড্রাইভারগণ মাত্রাতিরিক্ত পরিশ্রম করার কারণে চলন্ত অবস্থায় গাড়ীর ড্রাইভিং সীটেই ঘুমিয়ে পড়ে, ফলে সংগঠিত হয় মারাত্মক, মারাত্মক দূর্ঘটনা ও প্রাণহানী। মাদকাসক্ত হয়ে গাড়ী চালানো, চলন্তবস্থায় মোবাইলে কথা বলা দূর্ঘটনার অন্যতম কারণ। যা হউক, অভিজ্ঞতার আলোকে আমি একথাগুলি বললেও আমার মূল আলোচনা “সময়ের” মূল্যায়ন নিয়ে।

সড়ক দূর্ঘটনার জন্য বাংলাদেশ পৃথিবীর যে কোন রাষ্ট্রের চেয়ে পাল্লা দিয়ে এগিয়ে। কোন সরকারই এ মহামারীকে রোধ করতে পারে নাই, বরং দিন দিন জ্যামিতিক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এমতাবস্থায়, যাত্রী, পথচারীদের সচেতন রাখার জন্যই প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে উদ্দ্যোক্তারা “সময়ের চেয়ে জীবন অনেক মূল্যবান” কথাটি প্রতিটি পরিবহনের বডিতে লিখে রেখেছে, যা উদ্দোক্তাদের মতে যথার্থ। কিন্তু আমার বিচার বিশ্লেষণে আমার বিশ্বাস “জীবনের চেয়ে সময় অনেক মূল্যবান” সঠিক বলে পোষন করতে থাকলেও দূর্ঘটনা রোধে সচেতনা বৃদ্ধি করার জন্য কোন কথাটি প্রচার করা যায় এবং কোন কথাটি এপ্রোপ্রিয়েট হবে তা নিয়ে চিন্তা করতে থাকি এবং এ কথাও চিন্তা করি যে, আমার নিজস্ব মতবাদ “জীবনের চেয়ে সময় অনেক মূল্যবান” শ্লোগানটি পরিবহণের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নহে। মাঝে মধ্যে মনে হয়েছে যে, “দূর্ঘটনা রোধে সাবধানতা অবলম্বন করুন”, “তাড়াহুড়া করে মৃত্যুর ঝুকি নিবেন না” “গাড়ীতে উঠা নামায় নিজে সচেতন হউন, অপরকে সাবধান করুন”, “চলার পথে তাড়াহুড়া আপনার মৃত্যু ডেকে আনবে” প্রভৃতি বাসের বডিতে লেখার চিন্তা করেও নানা কারণে অগ্রসর হই নাই। ঢাকা’কে বায়ু দুষনমুক্ত করার জন্য বিএনপি সরকার ডিজেল চালিত বেবী ট্রেক্সীর পরিবর্তে সি.এন.জি চালিত বেবী ট্রেক্সি চালু করার সিদ্ধান্ত নিলে সেখানেও ব্যাপক ভূমিকা রাখতে হয়। ইতোমধ্যে ফেব্রুয়ারি/২০০৩ প্রথম সপ্তাহে কলম্বিয়ার রাজধানী বোগটা শহরে অন্যান্য উচ্চপদস্থ আমলাদের সাথে পরিবহণ ব্যবস্থার উন্নতি সাধনের জন্য আমাকে উচ্চতর ট্রেনিং এ পাঠানো হয়। ট্রেনিং থেকে যা বুঝলাম যে, দূর্ঘটনার জন্য শুধু ড্রাইভার, পথচারী বা যাত্রী দায়ী নহে। এর অন্যান্য কারণের মধ্যে রয়েছে সংশ্লিষ্ট গাড়ীর মেশিনারীজ ক্রটি, রাস্তা শাসন বা সড়ক নিয়ন্ত্রেণের জন্য একটি শক্ত ম্যানেজমেন্ট সড়ক দূর্ঘটনা রোধে অত্যান্ত জরুরী। আমাদের দেশে নদী শাসনের একটি সরকারী প্রতিষ্ঠান রয়েছে, কিন্তু রাস্তা শাসনের যে প্রতিষ্ঠান রয়েছে তারাই মাসোহারা গ্রহণ করে সড়কে শৃঙ্খলা আনার পরিবর্তে নিজেদের ভাগ্য গড়ে নিচ্ছে। এ ট্রেনিং থেকে একটি বিষয় আমার বদ্ধমুল ধারনা হলো যে সড়কে দ্রুত যান ও ধীরে চালিত যানবাহন এক সাথে চলে সে সড়কে দূর্ঘটনা ঘটনার অনেক কারণ রয়েছে। আমাদের দেশে বাস, ট্রাক, নছিমন, করিমন, ভটবটী, বেবী টেক্সী এমন কি রিক্সা ও ঠেলাগাড়ী পর্যন্ত একই রাস্তায় চলে। বোগটা ট্রেনিং এ মূল সুপারিশ নি¤œ রূপ ছিলঃ

(ক) প্রত্যেকটি শহরে ২/১টি রাস্তা সংরক্ষিত রাখতে হবে যাহা শুধু সাইকেল চলাচলের জন্য উম্মুক্ত থাকতে হবে।

(খ) সপ্তাহে অত্যান্ত একদিন শহরে যানবাহন চলাচল বন্ধ রেখে শুধুমাত্র সাইকেল আরোহী ও পথচারীদের জন্য উম্মুক্ত থাকতে হবে (জরুরী সার্ভিস ব্যতীত)।

(১) এতে একদিকে শহরের বায়ু দূষণ মুক্ত হতে সহায়ক হবে, অন্যদিকে নাগরিকদের শারীরিক ফিটনেস বাড়বে, (২) দ্রুত যান ও ধীরে চালিত যানবাহনের জন্য রাস্তায় আলাদা আলাদা লেইন থাকতে হবে, (৩) সড়ক শাসনের অর্থাৎ সড়কে যানবাহন নিয়ন্ত্রণের জন্য শক্তিশালী ম্যানেজমেন্ট এবং (৪) যানবাহন ও চালকদের শারীরিক ফিটনেস নিয়মিত পরীক্ষা করতে হবে। এমনিভাবে বিআরটিসি’র চেয়ারম্যান হিসাবে আমার ৫টি বৎসর কেটে গেলো, ১/১১ সরকার ক্ষমতায় এসে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের দুই নেত্রী সহ অনেক রাজনীতি নেতাদের সাথে আমাকে কারাগারে আবদ্ধ রাখে ২৬ মাস, ১/১১ সরকারের দৃষ্টিতে নারায়নগঞ্জের লোকজনকে বিআরটিসি’তে চাকুরী দেয়ার অপরাধ, কোন দূর্নীতি প্রমাণ না হওয়ায় ২০১৮ ইং সালে হাই কোর্ট থেকে নির্দোষ প্রমাণিত হই। তবে এটাই আমার প্রথম বা শেষ কারাবাস নহে, আগে পরে অনেক বার কারারুদ্ধ হতে হয়েছে, মিছিলে গুলি বিদ্ধ হয়েছি, একই ব্রাস ফায়ারে সাথী ইব্রাহিম নিহত হয়, বাড়ী ঘরে অগ্নি সংযোগ হয়েছে, আত্মগোপনে চলে যেতে হয়েছে বহুবার। এ নিয়ে পরবর্তীতে আর্টিকেলে হয়তো আলোচনা করা যাবে, এখন মূল আলোচনায় ফিরতে চাই।

আমি দীর্ঘ ৩৪/৪০ বৎসর যাবৎ প্রতিবন্ধী সংগঠন বাংলাদেশ জাতীয় বধির সংস্থা (সভাপতি), বাংলাদেশ জাতীয় অন্ধ কল্যাণ সমিতির (সহ-সভাপতি) দায়িত্বে ছিলাম ও আছি। জাতীয় অন্ধ কল্যাণ সমিতির মূল কাজ অন্ধত্ব প্রতিরোধ, অন্ধদের জীবন উন্নয়নে সহযোগীতা ও চক্ষু হাসপাতাল পরিচালনা করা। সমিতির আর্থিক সহযোগীতায় অনেক অন্ধ ছাত্র বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত পড়াশুনা করেছে এবং এখনও করছে। তাদের মধ্যে একজন মোশারফ হোসেন এখন হাই কোর্টের সনদ প্রাপ্ত আইনজীবি। আমি ১৪/৫/২০০৯ ইং তারিখে কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে সুপ্রীম কোর্টে পুনরায় আইন পেশায় যোগদান করি। এ্যাড: মোশারফ হোসেন আমার সুপ্রীম কোর্ট চেম্বারে একটি সমস্যা সমাধানের আইনগত পরামর্শ চাইলে সময় নিয়েই আমি পরামর্শ প্রদান করি। তখন সে আমাকে পরামর্শ বাবদ ফি দেয়ার জন্য উদ্যত হলে আমি বল্লাম, “লাগবে না, তোমার নিকট রাখ।” তখন সে আমাকে বলে Sir, Time is Money. তার অনুরোধে আমি ফিস না নিলেও অনেক সন্তোষ্ট এবং আত্মতৃপ্তি লাভ করি এই ভেবে যে, ‘সময়’কে মূল্য দেয়ার বিশ্বাস করার মত মানুষ পৃথিবীতে রয়েছে।

স্কুল জীবনেই পড়ে ছিলাম “Hit the iron when it is hot”। এ প্রবাদটিতে “সময়”কে মূল্যায়ন করা হয়েছে বলে মনে করি। “সময়”কে মূল্যদিয়ে অত্যাদিক পরিশ্রম করে আল্লাহর রহমতে Loosing Concern বিআরটিসি’কে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিনত করতে পেরেছিলাম। উল্লেখ্য, আমি বিআরটিসি’তে যোগদানের পূর্বে মীরপুর, যশোর ও চট্টগ্রামের সংস্থার নিজস্ব জমি বিক্রি করে কর্মচারী কর্মকর্তাদের Golden Handshake এর মাধ্যমে চাকুরী থেকে বিদায় করতে হয়েছে, কর্মচারীদের ৮ মাসের বেতন বাকী থাকা অবস্থায় চেয়ারম্যান পদে আমার যোগদান।

১/১১ সরকারের কারাগারে যখন ২৬ মাস ছিলাম তখন আমার বিশ্বাস আরও দৃঢ়মূল হয়েছে যে, “সময়েরই” মূল্য আছে, কিন্তু জীবনের মূল্য অর্থহীন, যদি সে “জীবন” ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ, জাতি ও রাষ্ট্রের কোন কাজে না আসে। জেলখানায় তিনবেলা খাওয়া ছাড়া কোন কাজ নাই, তাই অন্য কোন কাজ না পেয়ে কোরআন শরীফের বিভিন্ন আয়াত মুখস্ত করা শুরু করি, কিন্তু সমাপ্ত করতে পারি নাই, পরবর্তীতে ঢাকা পুরাতন জেলখানার ৭ সেল ও এরশাদ নগরে (এরশাদ যে সেলে কারাবন্দী ছিল) এবং কাশিমপুর-২ কারাগারের ডিভিশন সেলে নামাজে ইমামতি ও আযান দেয়ার দায়িত্ব নেই। তখন মনে হয়েছে আমার এ জেল জীবনটাও কিছুটা হলেও স্বার্থক। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বসে ১১/১১/২০০৮ ইং তারিখে আমার ব্যক্তিগত ডাইরীতে নি¤œলিখিত মন্তব্য লিপিবদ্ধ করি “আজ ১লা মরহুম, ১৪২৯ হিজরী। ১৮/৪/২০০৭ ইং তারিখ থেকে জেলখানায় বন্দী। জীবনের অনেক সময় চলে গেল, কিন্তু নিজ ও নিজ সৃষ্টি কর্তা সম্পর্কে কিছুই জানা চিনা হলো না। এ জন্য গভীর মনোনিবেশ করা দরকার। মনোনিবেশের জন্য জেলখানা উৎকৃষ্ট স্থান। তাই “সময়”কে কোন কারণেই অপচয় বা অপব্যবহার করা যাবে না। অনুশীলন আর অনুশীলনের মাধ্যমে বাকী জীবনের সফলতার প্রস্তুতি নিতে হবে। পরম করুনাময় আল্লাহ তৌফিক দিন।” উল্লেখ্য, ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে একজন মৎস্য অফিসার বন্দী হিসাবে এসেছেন শুনে তার নিকট মৎস্য চাষের অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য জেল কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করে ব্যর্থ হই। কারাগারকে বলা হয় সংশোধনাগার। কারা গেইটে লেখা রয়েছে “রাখবো নিরাপদ, দেখবো আলোর পথ।” অথচ টাকা হলে কারাগারে সকল প্রকার মাদকসহ বদ নেশার সকল সুবিধাই পাওয়া যায়। কারা কর্তৃপক্ষ টাকার জন্য বন্দীদের উপর নিয়মিত নির্যাতন করে। সাধারণ কয়েদী থেকে ১ম শ্রেণীর ডিভিশন সেলে বন্দী থাকায় আমার অভিজ্ঞতা হয়েছে, এ নিয়ে বিস্তারিত পরে লেখা হবে।

ফকির লালন শাহ বলেছেন যে, “সময় গেলে হবে না সাধন।” কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ বলেছেন যে, “ক্লান্তি আমার ক্ষমা করে হে প্রভু।” সৃষ্টি কর্তা প্রদত্ব প্রকৃতি থেকে প্রাপ্ত জ্ঞানের আধার দুই পন্ডিত ব্যক্তির বক্তব্যে এটাই প্রমানিত হয় যে সর্ব ক্ষেত্রে “সময়ই” একটি ফ্যাক্টর। অথচ সময়কে যথাযথ মূল্যায়ন করাই আমরা ভুলে গেছি।

জাতীয় পত্রিকায় ইতোপূর্বে নিয়মিত আমার লেখা আর্টিকেলগুলিতে রাষ্ট্র কর্তৃক সংবিধান লংঘন, বিচারবিভাগে রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপ, রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের বিষয়গুলি তুলে ধরার চেষ্টা করি। আমি এক সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেটরসহ গুরুত্বপূর্ণ কমিটির সদস্য ছিলাম, নারায়নগঞ্জ আইন কলেজের চেয়ারম্যান সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, স্কুল, প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসার পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেছি। কিন্তু আমার মনে কোন দিন কল্পনাও হয় নাই যে, কোন সময় আমি ছাত্র হিসাবে কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে পারি। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের উপর আমার একাডেমিক জ্ঞান বৃদ্ধির জন্য (জাতীয় পত্রিকায় তথ্যপূর্ণ আর্টিকেল লেখার স্বার্থে) ৬৭ বৎসর বয়সে ২০১৮ইং সনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রিমোলজী এন্ড ক্রিমিনাল জাষ্টিস বিভাগে ভর্তি হয়ে নিজ ছেলে মেয়ের বয়সী ছাত্র/ছাত্রীদের সাথে নিয়মিত ক্লাস করি, সেমিষ্টার ও ফাইনাল পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করি। একটি ক্লাসে লেকচার দেয়ার সময় অধ্যাপক মোহাম্মদ নাজমুল আরেফীন বলেন যে, “ইসলাম ধর্ম মতে জিনা (ধর্ষণ) করা যেমন মারাত্বক অপরাধ, খৃষ্টান ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে “প্রটেসটেন্ট” গ্রুপের মতে সময়ের অপচয় একটি মারাত্বক অপরাধ। তবে কি “সময়”কে মূল্যায়ন করেই প্রটেসটেন্ট খৃষ্টানরা বিশ্ব শাসন করছে? এ বিষয়গুলিও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনায় নেয়া দরকার।

সৃষ্টি কর্তা আল্লাহপাক বলেছেন যে, “মানুষকে আমি শ্রম নির্ভর করেই সৃষ্টি করেছি” (সূরা-বালাদ, আয়াত-৪), এর অর্থ কি দারায়? বিত্তবান বা রাজা বাদশা বা ক্ষমতাবান হলেই আরাম আয়াশে, আমোদ, ফুর্তিতে সময় অপচয় করার জন্য নির্দেশ আল্লাহপাক দেন নাই, বরং শ্রম নির্ভর হওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। “অবসর” সম্পর্কে বলেছেন যে, “যখনই তুমি অবসর পাবে, তখনই কঠোর ইবাদতে রত হও, আর তোমার রবের প্রতি আকৃষ্ঠ হও” (সূত্র: সূরা ইনশিরাহ, আয়াত-৭/৮)। “সময়ের” স্বদ ব্যবহারের জন্য আল কোরানে আরো অনেক নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

“জীবনের চেয়ে সময় অনেক মূল্যবান” কথাটি যারা বিশ্বাস করেন তাদের উদ্দেশ্যেই উৎসর্গ করেছি আমার লেখা “মীরজাফর যুগে যুগে” বইটিকে। “উৎসর্গে” আমার বক্তব্য পরিষ্কার করার জন্য লিখেছি যে, “জীবনের চেয়ে সময় অনেক মূল্যবান” এটা শুধু আমার বদ্ধমূল ধারণা নয় বরং দৃঢ় বিশ্বাস, এ বিশ্বাসকে লালন করার প্রয়াসে বারবার ব্যর্থ হয়ে কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছতে পারি নাই। যারা এ বিশ্বাসে বিশ্বাসী হয়ে নিজে (স্বয়ং), পরিবার, সমাজ, দেশ ও জাতির কল্যাণে নিজ সত্ত্বাকে নিয়োজিত রেখে মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ পাকের নিকট নিজ জবাবদিহিতার জন্য দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনে সকল ভয়, বাধা, সমালোচনা উপেক্ষা করে অবিচল থেকে প্রতিদানে কন্টকময় জীবনযাপন করছেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের উদ্দেশ্যে আমার এই সামান্য প্রচেষ্টা, তাদের জন্যই উৎসর্গকৃত।”

“এখন যৌবন যার যুদ্ধে যাওয়ার সময় তার” এ দেয়াল লিখনটি আমার চোখে পড়েছে। তবে আমি কোন বন্দুক যুদ্ধের (WAR) কথা বলছি না। যুদ্ধ করতে হবে নৈতিকতার জন্য, মানবতার জন্য, সম্পদের সুষম বন্টনের দাবীতে, যুদ্ধ করতে হবে ক্ষমতাসীনদের ক্ষমতার অপব্যবহারের বিরুদ্ধে, ভূমিদস্যু, ব্যাংক লুটেরা, কালো বাজারী, মজুদার, ত্রানের চাউল চোরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে প্রস্তুতি নিতে হবে, প্রতিদন্ধীতা বিহীন “নির্বাচিত” হওয়ার সে সংস্কৃতি বাংলাদেশে চালু হয়েগেল এ বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে হবে। কিন্তু আমাদের যুব সমাজের সে উপলব্দি কোথায়? তাদের এ মূল্যবান “সময়” জাতির জন্য কি কোন অবদান রাখবে না? কবি বলেছেন, “আমরা যদি না জাগি মা, তবে কেমনি সকাল হবে?” জাতির ভাগ্যাকাশে রক্ত লাল সূর্যের সোনালী আভাপূর্ণ একটি “সকালের” জন্য জাতিকে জাগতে হবে এবং এ জন্যই প্রয়োজন সময়ের মূল্যায়ন।

লেখক: তৈমূর আলম খন্দকার

রাজনীতিক, কলামিষ্ট ও আইনজীবি (এ্যাপিলেট ডিভিশন)