করোনার সংক্রমন ঠেকাতে যেকোন সিদ্ধান্ত মেনে নিবে সোনারগাঁবাসী: এমপি খোকা

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ-৩(সোনারগাঁও) আসনের জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনার আলোকে মহামারি রূপ নেয়া করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ প্রতিরোধে নারায়ণগঞ্জ-৩ (সোনারগাঁও) সংসদীয় এলাকা সহ পুরো নারায়ণগঞ্জ জেলাকে গত ৮ এপ্রিল থেকে অবরুদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, সোনারগাঁও উপজেলা জনপ্রতিনিধি ঐক্য ফোরামসহ বিভিন্ন সংগঠণের সমন্বয়ে করোনা মোকাবেলায় আমরা একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছি। কিন্তু পরিপূর্ণ লকডাউন নিশ্চিত করতে না পারলে করোনা মোকাবিলার সকল উদ্যোগই ভেস্তে যাবে। মানুষের জীবন বাঁচাতে কঠোরতম যে কোনো সিদ্ধান্তকেই সোনারগাঁবাসী স্বাগত জানাবে।

১৫ মে শুক্রবার নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও মোগরাপাড়া চৌরাস্তায় এমপি খোকার কার্যালয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য আবারও ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম (পিপিই) দেয়ার সময় উপজেলার বিভিন্ন কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি ঈদ কেনাকাটার নামে এলাকার বিপনী বিতানগুলো ছাড়াও হাট-বাজার ও পাড়া-মহল্লার চায়ের দোকানগুলোও করোনা মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। এরই মধ্যে গার্মেন্টস খোলা রাখায় অসেচতনভাবে শ্রমিকরা সোনারগাঁওয়ে ঢুকে পড়ায় করোনা ভাইরাসের ঝুঁকি আরও বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। যা আগামী দিনে নিয়ন্ত্রণে রাখা আমাদের জন্য খুবই কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। যেহেতু আমি মাঠে সরাসরি কাজ করছি, সেহেতু করোনা পরিস্থিতির বাস্তব চিত্রও আমি উপলব্ধি করছি। সেনাবাহিনী, প্রশাসন ও পুলিশের যৌথ অভিযান, সাংবাদিক এবং জনপ্রতিনিধিসহ সকলে ঐক্যবদ্ধভাবে সাধারণ মানুষদেরকে বুঝানোর পরও অনেকেই এখনো সচেতন হচ্ছেন না।

তিনি জানান, ‘সোনারগাঁও সেন্ট্রাল করোনা মনিটরিং সেল এবং “আমরা করোনা যোদ্ধা” নামে ওয়ার্ড ভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবক টীম গঠণ করে করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সোনারগাঁওয়ের প্রতিটি এলাকায় পরিকল্পনা অনুযায়ী ব্যাপক কাজ করছে। কিন্তু এলাকার সর্বস্তরের মানুষকে পুরোপুরি সচেতন করা যাচ্ছে না, তারা অনেকটাই অসেচতন। করোনা মহামারীতে সোনারগাঁও উপজেলার সকল মার্কেট, দোকানপাট খোলা এবং অবিরাম বাঁধাহীন চলাফেরায়, লকডাউন শিথিলতায় এক ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির দিকে আমরা ধাবিত হচ্ছি। এতে সচেতন সোনারগাঁওবাসী অনিশ্চিত ভবিষ্যতের আশঙ্কায় আতঙ্কিত ও গভীরভাবে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন।’

এ অবস্থায় সোনারগাঁওবাসীকে বাঁচাতে পরিপূর্ণ লকডাউনের বিষয়টি পর্যালোচনায় এনে দ্রুততার সাথে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণসহ প্রশাসন ও পুলিশের পক্ষথেকে আরও জোরালো ভূমিকা রেখে জনগণকে আইন মানাতে বাধ্য করার ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানিয়ে ইতিপূর্বে স্থানীয় এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও জেলা পুলিশ সুপারকে উপানুষ্ঠানিক পত্র দিয়েছিলেন।

এদিকে গত ১৪ মে বৃহস্পতিবার নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ভিডিও কনফারেন্সের পর নারায়ণগঞ্জ জেলার করোনা পরিস্থিতি নিয়ে জরুরী আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমান, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান, নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য মোঃ নজরুল ইসলাম বাবু এবং নারয়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপার, র‌্যাব-১১ এর অধিনায়ক (সিও), সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা, জেলা সিভিল সার্জন ও নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের উপস্থিতিতে নারায়ণগঞ্জ জেলায় করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় বিস্তারিত আলোচনা হয়।

পরবর্তীতে সোনারগাঁওয়ের সকল বিপনী বিতানসমূহ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা দেন এবং উপস্থিত জেলা পুলিশ সুপার তাৎক্ষণিকভাবে ফোন করে সোনারগাঁও থানার অফিসার ইনচার্জকে সোনারগাঁওয়ে লকডাউন নিশ্চিত করণে আরও কঠোর হওয়ার নির্দেশনা দেন বলেও জানা গেছে।

তৎপ্রেক্ষিতে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ১৫ মে, ২০২০ শুক্রবার হতে সোনারগাঁও উপজেলার সকল বিপনী বিতানসমূহ বন্ধ ঘোষণা করে সোনারগাঁও উপজেলা প্রশাসন গণবিজ্ঞপ্তি জারী করেছে। তবে ঔষধের ফার্মেসী, কৃষি পণ্য, সার ও বীজ দোকান, পশুখাদ্য, মুদি দোকান, কাঁচা বাজার ও মৌসুমী ফলের বাজারসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির দোকানসমূহ এর আওতামুক্ত থাকবে।