‘পুুলিশ আমাকে এরেস্ট করে, আর সুমন পালিয়ে যায়’

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

একটি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত ছিলেন আড়াইহাজার বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবু। জামিনে বের হয়ে তিনি রাজনীতিতে ফিরেছেন। তবে এলাকায় ফিরেই তিনি বিএনপিতে বিতর্ক সৃষ্টি করেছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তিনি একটি স্ট্যাটাজ পোস্ট করেছেন যেখানে তিনি আড়াইহাজারে বিএনপির দুই নেতা মাহমুদুর রহমান সুমন ও নজরুল ইসলাম আজাদকে ইঙ্গিত করেছেন। বর্তমান সময়ে আড়াইহাজারে আলোচিত মাহমুদুর রহমান সুমনের নেতৃত্ব নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপি নেতা হাবু। সেই সঙ্গে করোনা প্রাদুর্ভাবে জনগণের পক্ষে মাহমুদুর রহমান সুমনের অবদানের বিষয়টিকে তিরস্কার করে তুলে হাবু লিখেছেন, কিছু হেক্সিসল ও ওয়াশিং পাউডারের পানি ছিটিয়ে জনগণের সেবক সাঁজতে চায়।’

স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীদের সূত্রে, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন এএম বদরুজ্জামান খান খসরু। খসরুর হাত ধরেই বিএনপির রাজনীতিতে আসেন হাবু। পরবর্তীতে তাকে আড়াইহাজার বিএনপির সাধারণ সম্পাদক পদে অধিষ্ট করেন খসরু। আড়াইহাজারে যখন কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদের রাজনীতি শুরু হয় তার আগে থেকেই হাবু রাজনীতিতে খসরুর বিরোধীতা শুরু করেন। ২০১২ সালের দিকে হাবুকে শোকজ করেছিলেন তৎকালীন জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমূর আলম খন্দকার। শোকজের জবাব না দেয়ায় হাবুকে সেক্রেটারি পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে আবুল কাশেম ফকিরকে ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি করা হয়। এর পর থেকে হাবু আজাদের সঙ্গে রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হোন।

এদিকে বছর দেড়েক আগে পরলোক গমন করেন এএম বদরুজ্জামান খান খসরু। তার মৃত্যুর পর উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা এক বৈঠকে বিএনপির দায়িত্ব নিয়ে আলোচনা হয়। বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি মীরজুল হাসান নয়ন মোল্লা ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নিতে অনাগ্রহ দেখালে দ্বিতীয় সহ-সভাপতি মাহমুদুর রহমান সুমনকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি করা হয়।

গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রাথমিকভাবে মনোনয়ন পান মাহমুদুর রহমান সুমন, সাবেক এমপি আতাউর রহমান আঙ্গুর ও নজরুল ইসলাম আজাদ। চুড়ান্তভাবে মনোনয়ন পান আজাদ। নির্বাচনে আঙ্গুরকে দেখা না গেলেও আজাদের পক্ষে কাজ করেন সুমন। ওই নির্বাচনের আগে হাবিবুর রহমান হাবুর সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে পড়েন নজরুল ইসলাম আজাদ। উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক জুয়েল আহমেদকে নারায়ণগঞ্জ কোর্টের সামনে মারধরের ইস্যূকে কেন্দ্র করে হাবুকে দোষারোপ করেন আজাদ। এ নিয়ে হাবু আজাদের বিরুদ্ধে থানায় জিডি দায়ের করেন। ওই ঘটনার পরেই হাবুকে একটি সাজাপ্রাপ্ত মামলায় গ্রেপ্তার করে। এমন পরিস্থিতিতে এক সময় আজাদের বলয়ে রাজনীতি করে আসা বিআরডিবির সাবেক চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা আনোয়ার হোসেন অনু ও কেন্দ্রীয় মহিলা দলের সাংগঠনিক সম্পাদক আজাদকে পল্টি দিয়ে সুমন বলয়ে ফিরেছেন। সুমন বলয়ে ফিরে সুমনের গুণকীর্তনে ব্যস্ত রয়েছেন তারা দুজন।

অন্যদিকে ১৪ এপ্রিল হাবিবুর রহমান হাবু তার ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাজ পোস্ট করেন। তিনি লিখেছেন, বাংলাদেশের এই মহামারি দুর্দিনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল গণতন্ত্র ও মানুষের সেবায় বদ্ধ পরিকর। দেশের বিভিন্ন স্থানের মত আড়াইহাজার বিএনপি নিরবিচ্ছিন্নভাবে মানুষের পাশে এসে দাড়িয়েছে। অতীতের সকল দুঃসময়ের মত এবারও নজরুল ইসলাম আজাদের নেতৃত্বে আমি ও আমরা আড়াইহাজারের সকল নেতাকর্মী মানুষের সেবায় মানুষের পাশে এসে দাড়িয়েছি।

আজাদের অবদান তুলে ধরে হাবু আরও লিখেন, করোনা পরিস্থিতিতে মানুষকে সচেতনতাকরণ, উপকরণ সহ ত্রাণ সামগ্রী চাল, ডাল, তেল, সাবান, হেক্সিসল ইত্যাদি সামগ্রী প্রত্যেক ইউনিয়ন -ওয়ার্ডে বিতরণ করেন মা-মাটি ও মানুষের নেতা জননেতা নজরুল ইসলাম আজাদ। বিগত দিনে বিএনপি সকল আন্দোলন সংগ্রামে আড়াইহাজারের মানুষ আজাদকে পাশে পেয়েছে।

তিনি মাহমুদুর রহমান সুমনকে ইঙ্গিত করে লিখেছেন, কতিপয় কিছু অসাধু বিএনপি নামদারী নেতা আছে, যারা বিগত ১১বছর দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ডাকে কোন আন্দোলন সংগ্রামের সারা দেয়নি এবং যারা আন্দোলন সংগ্রামের ডজনের বেশি মামলা খেয়ে জেল জুলুমে দিশেহারা তাদের পাশে কোনদিন এসে তারা দাড়াঁয়নি। তারা জনসেবার নামে কিছু হেক্সিসল, আর ওয়াশিং পাউডারের পানি ছিটিয়ে মানুষে কাছে জনসেবক সাঁজতে চায়। আমি সাবেক থানা সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ভাতিজা সুমন, মরহুম থানা বিএনপির সভাপতি সাহেবের ছেলের সাথে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করতে গেলে পুলিশ আমাকে এরেস্ট করে, আর সুমন পালিয়ে যায়। একদিনের জন্য সে আমাকে জেলে দেখতে যায়নি। এটা কোন নেতার বৈশিষ্ট্য হতে পারে কি?