সোনারগাঁয়ে আওয়ামীলীগ নেতার ফটোসেশন শেষ, খাদ্যসামগ্রী বিতরণও শেষ!

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার সাদিনপুর ইউনিয়ন এলাকায় প্রায় আড়াই ঘন্টা কয়েকশত গরীব অসহায় রিক্সাচালকদের রোদে দাঁড় করিয়ে রেখে খাদ্য সামগ্রী বিতরণের ঘটনা ঘটেছে। তবে প্রধান অতিথি আসার পর হাতে গোনা কয়েক জনের হাতে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেই তাদের খাদ্য সামগ্রী বিতরণ শেষ করেন। যতক্ষণ পর্যন্ত ফটোসেশন চলে ততক্ষণই খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়। এরপর অনেক রিক্সাচালক অসহায় গরীব ও ভিক্ষুক খাদ্য সামগ্রী না পেয়ে অশ্রুসিক্ত চোখে ফেরত যান। এমনি ঘটনা ঘটেছে সাদিপুর ইউনিয়নের প্রতিবন্ধি ও দুঃস্থ-অসহায়দের মাঝে ত্রাণ বিতরণে। সেই সঙ্গে একসঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে ফটোসেশন করেছেন তারা। যেখানে একজন থেকে আরেকজনে করোনাভাইরাস ছড়াতে পারে যদি কারো শরীরে ভাইরাসটি থেকে থাকে।

জানাগেছে, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবকলীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাক মোঃ জাকির হোসাইনের সার্বিক সহযোগীতায় নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগরে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. আবু জাফর চৌধুরী বীরুর উদ্যোগে ৪ এপ্রিল শনিবার বিকেলে নয়াপুর মাঠে গরীব অসহায় পরিবারের মাঝে এ ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়। তার আগে ওই মাঠে শত শত গরীব অসহায় মানুষ খাদ্য সামগ্রী পাওয়ার আশায় কয়েক ঘন্টা আগেই রোদে দাড়িয়েছিলেন। সেখানে মিডিয়া কর্মীরা এসে ছবি তোলা শেষ করার পর তাদের খাদ্য সামগ্রী বিতরণ শেষ হয়ে যায়। খাদ্য সামগ্রী না পেয়ে অনেক ভিক্ষুক ও রিক্সাচালক অশ্রুজলে ফেরত যান।

এসময় উপস্থিত ছিলেন ব্যবসায়ী মোঃ আলী হোসাইন আলী, সোনারগাঁ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নেকবর হোসেন নাহিদ, সোনারগাঁ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি মাসুদ রানা মানিক, জামপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হুমায়ুন কবির ভূইয়া, সোনারগাঁ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হাসান রাশেদ, সাদিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানিজিং কমিটির সদস্য সুধষন সরকার, সাদিপুর ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ কামরুল হাসান, আওয়ামীলীগ নেতা আক্তার হোসেন, ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা মিজানুর রহমান মিজান, ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ নেতা মোকবুল হোসেন, মামুন শিকদার ও আমির হোসেন প্রমূখ।

এদিকে করোনাভাইরাসের কারণে সারা পৃথিবী হয়ে পড়েছে জনবিছিন্ন। মহামারি এ ভাইরাসটি কারণে ঘরবন্দি হয়ে পড়েছে একের পর এক দেশ। লকডাউন করা হয়েছে বিভিন্ন দেশের অঞ্চল ও শহর। এতে ব্যতিক্রম হয়নি বাংলাদেশে। গত ৮ মার্চ প্রথম করোনা ভাইরাসের রোগী সনাক্ত হওয়ার পর গত ২৫ মার্চ থেকে সকল অফিস আদালত ও গণপরিবহন বন্ধ করে দেয়া হয়। সরকারের পক্ষ থেকে গণজমায়েত থেকে শুরু করে সকল রাজনৈতিক সামাজিক ও ব্যক্তিগত অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়।

এমন সময় অফিস আদালত ব্যবসা বানিজ্য বন্ধ হয়ে যাওয়ায় খাদ্য অভাবে পড়েছে সাধারণ নিম্ন আয়ের মানুষ। এসকল মানুষের খাবার নিশ্চিত করতে সরকারী বেসরকারী পর্যায় থেকে দেয়া হচ্ছে ত্রাণ সামগ্রী, সাথে দেয়া হচ্ছে করোনা সচেতনা সুরক্ষা সামগ্রীও। এসব সামগ্রী দিতে গিয়ে করোনাভাইরাস মুক্ত হওয়ার চেয়ে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুকি বাড়ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

অনেক সময় দেখা যায় যারা খাবার সামগ্রীগুলো বিতরণ করছেন তারা সামাজিক দুরত্ব না মেনে গাধাগাধি করে একজন আরেকজনকে ঠেলে হাতে সাথে হাত মিলিয়ে একটি ছোট খাবার সামগ্রীর প্যাকেট কয়েকজন মিলে ধরছেন। এতে করে সহজেই করোনা ভাইরাসটি একজন থেকে আরেকজন সংক্রমন হতে পারে।