আইনজীবীকে গুলিবর্ষণ মামলায় আত্মসমর্পন করেও আসামিদের জামিন আবেদন প্রত্যাহার!

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে আইনজীবীকে প্রকাশ্যে গুলিবর্ষণ করেছিলেন সন্ত্রাসীরা। ওই ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় আদালতে আত্মসমর্পন করে জামিনের আবেদন করলেও জামিন আবেদন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন আসামিরা।
২৩ মার্চ নারায়ণগঞ্জ জুডিশিয়াল ম্যাটিস্ট্রেট মিল্টন খন্দকারের আদালতে আসামী মোঃ রিয়েল মোল্লা, ফয়সাল, সালাউদ্দিন ও ফারুক আত্মসমর্পন করে জামিনের আবেদন করেন। এ সময় বাদী পক্ষের আইনজীবী আসামিদের জামিনের বিরোধীতা করে আসামিদের কারাগারে পাঠানোর আদেশের জন্য যথাযথভাবে শুনানিতে ঘটনা তুলে ধরেন।

কিন্তু এমন সময় আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সামসুল ইসলাম ভূঁইয়া মামলার বিষয়টি আপোষ মীমাংমার প্রতিশ্রতি দিয়ে জামিন আবেদনটি আদালত থেকে প্রত্যাহার করে নেন। ওই সময় আসামি পক্ষের আইনজীবীকে আদালত বলেন, আসামিদের আপোষ-মীমাংসা করে পুণরায় জামিন আবেদন করার জন্য।

এ বিষয়ে বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ কামাল হোসেন বলেন, আসামিরা জামিনের আবেদন করলে আমরা জামিনের বিরোধিতা করি এবং যথাযথভাবে বিষয় উপস্থাপন করি। আসামী পক্ষের আইনজীবী মামলাটি মীমাংশার প্রতিশ্রুতি দিলে বিজ্ঞ আদালত মামলার গুণাগুণ বিবেচনা করে জামিন আবেদনটি ফেরত দেন এবং মীমাংসা শেষে জামিনের আবেদন করতে বলেন। এ বিষয়ে আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সামসুল ইসলাম ভূঁইয়ার সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি কিছুটা বিব্রত হয়ে বলেন, আমরা জামিন আবেদন টেক ব্যাক করেছি।’

ঘটনা সূত্রে জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার জামপুর ইউনিয়নের পেরাবো এলাকায় পুকুরের মাটি ব্রিক ফিল্ডে (ইটভাটা) বিক্রি না করায় বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীর উপর হামলা ও গুলিবর্ষণ করেছিল কথিত ছাত্রলীগ নামধারী সন্ত্রাসীরা। গত ৭ মার্চ শনিবার দুপুরে এই ঘটনা ঘটনায় সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় আইনজীবী বাদী হয়ে ওই রাতে তালতলা তদন্ত কেন্দ্রে ও সোনারগাঁও থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

সোনারগাঁও থানায় করা আইনজীবীর অভিযোগ থেকে জানা যায়, উপজেলার জামপুর ইউনিয়নের পেরাব এলাকায় সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী খন্দকার মোহাম্মদ মিকাইল তার ১২ বিঘা পুকুরে র্দীঘদিন ধরে মাছ চাষ করে আসছিলেন। আরো অধিক পরিমানে মাছ চাষের জন্য নিজ পুকুর খনন কাজ শুরু করেন।

চলতি মাসের ৭ মার্চ শনিবার দুপুরে জামপুর ইউনিয়নের পেরাব এলাকার কথিত ছাত্রলীগ নেতা পরিচয়দানকারী সন্ত্রাসী মোঃ রিয়েল মোল্লা, ফয়সাল, সালাউদ্দিন, ফারুক ও মোহাম্মদ আলী সহ ৮-১০ জনের একটি দল পুকুরের মাটি খনন কাজে বাধা দিয়ে ওই পুকুরের মাটি জোড়পূর্বক ইট ভাটায় নেওয়ার চেষ্টা করে।

এতে আইনজীবী বাঁধা দিলে সন্ত্রাসীরা মাটির বদলে আইনজীবীর কাছে ৫ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে। তাদের দাবিকৃত চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় মোঃ রিয়েল মোল্লা, ফয়সাল আইনজীবীকে মারধর করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে আইনজীবীকে লক্ষ্য করে ২ রাউন্ড গুলিবর্ষণ করে।

আইনজীবী খন্দকার মোহাম্মদ মিকাঈল বলেন, আমি অভিযোগ দিলে মামলা নিতে তালবাহানা করে সোনারগাঁও থানা পুলিশ। পরবর্তীতে সোনারগাঁও থানা পুলিশ মামলা নিলেও এজাহারে অনেক কাটছাট করা হয়। তবে, মামলা হওয়ার পর পুলিশ অদ্যাবদি একজন আসামিকেও গ্রেপ্তার ও অস্ত্র উদ্ধার করতে পারেনি। আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমি আদালতের কাছে ন্যায্য বিচার দাবি করি।