জেলা বিএনপির কমিটিতে আলোচনায় আবারো তহরি ও হাদিয়া সংগ্রহকারী নেতা!

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

আবারো নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা তহরি ও হাদিয়ার বাক্সের দিকে ফিরে যেতে চান না। জেলা বিএনপির কমিটি বিলুপ্তির পর নতুন কমিটি গঠন নিয়ে বেশ জোড়ালো আলোচনা চলছে। এর মধ্যে অতীতে জেলা বিএনপির নেতৃত্বে ছিলেন এমন নেতাদের নামও আসছে। যাদের মধ্যে জেলা বিএনপির সাবেক একজন নেতা যিনি দীর্ঘদিন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির নেতৃত্ব দিয়েছেন এমন নেতার নামও শোনা যাচ্ছে। তবে যে নেতা ওই সময় জেরায় তহরি ও হাদিয়া বাক্সের নেতা হিসেবে সমালোচিত হয়েছিলেন।

বিলুপ্ত জেলা বিএনপির একজন নেতা বলছেন- এর আগে যারা জেলা বিএনপির নেতৃত্বে ছিলেন তাদের অনেকেই কর্মীদের ব্যবহার করে ব্যবসায়ী শিল্পপতির কাছ থেকে তহরি হাদিয়ার নামে কোটি কোটি টাকা চাঁদাবাজি করেছিলেন। বিএনপির যেসব ডোনার ছিলেন তাদের কাছে টাকা এনে নিজের পকেট ভারি করেছেন। দলীয় কর্মকান্ডে খরচের জন্য এসব অর্থ বিভিন্ন স্থান থেকে আসলেও তা নিজের পকেটে ভরেছেন। জেলার আওতাধীন বিভিন্ন থানায় নেতৃত্ব দেয়া নেতাদের কাছে মাসে মাসে হাদিয়া ও তহরি আদায় করেছিলেন এমন নেতাদের আমরা আবারো জেলা বিএনপির নেতৃত্বে দেখতে চাইনা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সোনারগাঁও বিএনপির একজন নেতা বলেছেন- বিলুপ্ত কমিটির আগে যারা জেলা বিএনপির নেতৃত্বে ছিলেন ওই সময় থানা পর্যায়ের কোন মিটিংয়ে দাওয়াত করলে তারা হাদিয়া ও তহরির নামে লাখ লাখ টাকা নিতেন। টাকা ছাড়া কারো মিটিংয়ে আসতেন না। টাকা না দিলে বিপরীত নেতাকে নিয়ে রাজনীতিতে নেমে যেতেন। সোনারগাঁয়ের আজহারুল ইসলাম মান্নানের কাছ থেকে এক নেতা কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তাকে সোনারগাঁয়ে প্রতিষ্ঠিত করার নামে।

ফতুল্লা থানা বিএনপির এক নেতা বলেছেন- এক সময় শাহআলমকে ফতুল্লায় প্রতিষ্ঠিত করতে তহরি আদায়কারী নেতা শাহআলমের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়া নিতেন নানা অজুহাতে। নানা কর্মসূচি পালনের নামে শাহআলমের কাছ থেকে সুবিধা নিয়ে তা নিজের পকেটে ভরে রাখতেন। কিন্তু দলীয় কর্মকান্ডে তা ব্যয় করতেন না। আবার শাহআলম যখন টাকা দেয়া বন্ধ করে দিল তখন শাহআলমের প্রতিদ্বন্ধি নেতা মনিরুল আলম সেন্টুকে নিয়ে রাজনীতিতে নেমে যায়। অতীতে যারা এসব কর্মকান্ড করে দল ব্যবহার করে কোটি কোটি টাকা কামিয়েছেন এমন নেতাকে জেলা বিএনপির নেতৃত্বে আর দেখতে চাইনা।

একইভাবে আড়াইহাজার বিএনপির নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন- এখানকার প্রয়াত বিএনপি নেতা এএম বদরুজ্জামান খান খসুরুর কাছ থেকে সুবিধা নিতেন জেলা বিএনপির সাবেক এক নেতা। বিভিন্ন সময় নামে বেনামে খসরুর কাছ থেকে দলীয় কর্মকান্ডের অজুহাতে টাকা নিতেন। কিন্তু তা দলে খরচ না করে তিনি নিজের পকেটে রাখতেন। আবার খসরু যখন টাকা দেয়া বন্ধ করে দিলেন তখন নজরুল ইসলাম আজাদকে আড়াইহাজারে প্রতিষ্ঠিত করতে মাঠে নামেন।

জেলা বিএনপির প্রতিটা থানায় তহরি ও হাদিয়ার বাক্স মার্কা নেতা ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের পূর্বে কোটি কোটি টাকা চাঁদাবাজি করেছিলেন। বিভিন্ন থানা পর্যায়ের শীর্ষ নেতাদের কাছ থেকেই নয় শুধু, তিনি রূপগঞ্জর, ফতুল্লার, কাঁচপুরের বিভিন্ন শিল্পপতি প্রতিষ্ঠানের মালিকদের কাছ থেকে মাসিক টাকা আদায় করতেন। যারা মুলত বিএনপির সমর্থক সেইসব শিল্পপতি ব্যবসায়ীরা ২০১৪সালের নির্বাচনের আগে তৎকালীন জেলা বিএনপির নেতাদের টাকা দিতেন। কারন ওই সময় অনেকের ধারণা ছিল ৫বছর পর আবারো বিএনপি ক্ষমতায় এসে পড়তেছে। এই সুযোগে তহরি ও হাদিয়া আদায় চলতো হরদম।

নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা বলছেন-অতীতে যারা দলের নাম ব্যবহার করে দলকে বিক্রি করে দিয়ে নিজেদের পকেট ভারি করেছেন এমন নেতাকে যেনো জেলা বিএনপির নেতৃত্বে আবারো ফেরানো না হয়। তাহলে এবার তিনি বিএনপিকে পুরোপুরি বিক্রি করে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির কফিনে শেষ পেরেক ঠুকবেন। ফলে ধ্বংস হবে বিএনপি পকেট ভারি হবে তার। যেসব নেতা নেতাকর্মীদের পাশে বিপদে দাড়ায় না। এক টাকা দিয়ে সহযোগীতা করতে নারাজ এমন নেতাকে নেতৃত্বে দেখতে চায়না। আবার যেসব নেতা রয়েছেন পেশায় আইনজীবী, তাদের মধ্যে যারা কর্মীদের মামলা পরিচালনার ক্ষেত্রে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন তাদেরকেও নেতৃত্বে দেখতে চায়না। ফলে তহরি কালেকশন ও হাদিয়া কালেকশন বাক্স চালু হোক এমনটা চায়না জেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা।