সাদেক অধ্যায়ের অবসান, মাঠে ছগীর, নামেনি গাজী ও রাব্বী

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও পৌরসভা নির্বাচনের আরও বাকি রয়েছে প্রায় ১০ মাস। তবে নির্বাচনের দশ মাস পূর্বেই মেয়র পদে সম্ভাব্য প্রার্থী ছগীর আহম্মেদ স্থানীয় তরুণ যুবকদের মাঝে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন। এর আগে পৌর নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী বর্তমান মেয়র সাদেকুর রহমান আবারো নির্বাচনের ঘোষণা দিলেও তিনি নির্বাচনী কোন আমেজে এখনও নামেননি।

অন্যদিকে বিগত দুটি নির্বাচনে মেয়র পদে পরাজিত প্রার্থী গাজী মজিবুর রহমান ও অ্যাডভোকেট এটি ফজলে রাব্বী আলোচনায় থাকলেও তারা এখনও নির্বাচনে কোন প্রচার প্রচারণায় নামেননি। সর্বত্র এখন আলোচনায় ছগীর আহম্মেদ। এই সুযোগে স্থানীয় তরুণ ও যুবকদের মাঝে আকর্ষণ সৃষ্টি করেছেন ছগীর আহম্মেদ।

জানাগেছে, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের উপ-কমিটির সাবেক সহ-সম্পাদক ও ঢাকা কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ছগীর আহম্মেদ। তৃণমুল থেকে ওঠে এই আওয়ামীলীগ নেতা এবার সোনারগাঁও পৌরসভা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে ইচ্ছুক। দলীয় মনোনয়ন নিয়ে তিনি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চান। তবে দলের মনোনয়ন প্রত্যাশির পাশাপাশি তিনি নিয়মিত সোনারগাঁয়ের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে ওঠান বৈঠক করছেন।

২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ছিলেন অ্যাডভোকেট এটি ফজলে রাব্বী। ওই নির্বাচনে আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলেন বর্তমান মেয়র সাদেকুর রহমান। এর আগের নির্বাচনে দলীয় প্রতীক বরাদ্ধের নিয়ম না থাকলেও দলের সমর্থন নিয়ে মেয়র প্রার্থী ছিলেন গাজী মজিবুর রহমান। ওই নির্বাচনে বিএনপির সমর্থিত প্রার্থী ছিলেন সাদেকুর রহমান।

দুটি নির্বাচনেই আওয়ামীলীগের বিরোধের কারনে আওয়ামীলীগের দলীয় প্রার্থী পরাজিত হয়। যে কারনে স্থানীয় নেতাকর্মীদের মাঝে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে- গাজী ও রাব্বী দলীয় প্রতীকেও পারেনি, তাহলে ছগীর আহম্মেদ সেই দলীয় বিরোধ মিটিয়ে জয়ী হতে পারবেন কিনা। তবে স্থানীয় নেতাকর্মীরা ছগীর আহম্মেদের উপর আস্থা রাখতে চান।

ছগীর আহম্মেদ নির্বাচনের দশ মাস পূর্বেই পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় যাচ্ছেন। নিয়মিত ওঠান বৈঠক করছেন। পৌরবাসীর উন্নয়নে তার কর্মপরিকল্পনাও প্রকাশ করছেন। পুরোদস্তর তিনি ঘরে ঘরে যাচ্ছেন। এক্ষেত্রে নির্বাচনী আলোচনায় থাকলেও গাজী মজিবুর রহমান ও এটি ফজলে রাব্বী এখনও মাঠে নামেননি।

এদিকে নির্বাচনের আগাম ঘোষণা দিয়েছেন পৌর মেয়র সাদেকুর রহমান। মুলত দীর্ঘদিন যাবত তার প্রতি স্থানীয় নেতাকর্মীদের অনীহা রয়েছে। তরুণ বয়সে যখন তিনি আমিনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন, তখন তিনি বেশ নাম কুড়িয়েছিলেন। যে কারনে ভোটার সমর্থক তার রয়েছে বেশ। কিন্তু বিগত দুইবার তিনি মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন মুলত স্থানীয় রাজনৈতিক বিরোধের সুযোগে। রাজনৈতিক বিরোধীতার কারনে পৌর মেয়র হিসেবে নেতাকর্মীদের ঘারে সাদেকুর রহমানকে চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে বারবার। তবে এবার এর পরিবর্তন চান নেতাকর্মীরা। কারন তিনি শারীরিকভাবে বেশ অক্ষম। দুই ট্রাম ধরেই তিনি অনেকটা বয়বৃদ্ধ। যে সুযোগে তার অনুগামী ৪/৫ জন ব্যক্তি পৌরসভার সকল কিছুর নিয়ন্ত্রন করেন।

অন্যদিকে এখানে গত নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন। তিনি বর্তমানে নির্বাচন নিয়ে তেমন কোন আলোচনাতেও নাই। তিনি বর্তমানে উপজেলা বিএনপির সেক্রেটারি পদে আসীন হতে চেষ্টা করছেন। তবে ভিন্ন মোড় নিয়েছে পৌর বিএনপির সভাপতি এমএ জামান যখন জাতীয়পার্টিতে যোগদান করেছেন। সেক্ষেত্রে এবার জাতীয়পার্টি থেকে এমএ জামানকে লাঙ্গল প্রতীকে দেখা গেলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। বর্তমান এমএ জামান পৌর জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক পদে দায়িত্ব পালন করছেন। স্থানীয় এমপি লিয়াকত হোসেন খোকার সঙ্গে সার্বক্ষনিক উন্নয়নমুলক কাজে অংশগ্রহণ করছেন। যদিও তিনি এখনও নির্বাচনের কোন ঘোষণা দেননি।