মান্নানকে মাইনাস চেষ্টা, সোনারগাঁ বিএনপির নেতৃত্বে জাফর ও মোশারফ!

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপির নেতৃত্ব থেকে আজহারুল ইসলাম মান্নানকে মাইনাসের চেষ্টায় নেমেছেন বিএনপিরই বেশকজন নেতা। জোর চেষ্টা চলছে সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপির সভাপতি পদে খন্দকার আবু জাফরকে বহাল রেখে সোনারগাঁও উপজেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি মোশারফ হোসেনকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি গঠন করা। ইতিমধ্যে খন্দকার আবু জাফর ও মোশারফ হোসেন জেলা বিএনপির শীর্ষ এক নেতাকে ম্যানেজ করে নিয়েছেন।

ছবি-ঢাকায় বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে শ্লোগান দিচ্ছেন আজহারুল ইসলাম মান্নান।

তবে বিএনপির গত জাতীয় সম্মেলনে এক নেতার এক পদ নিয়ম মানতে হলে এই তিনজনেরই উপজেলা বিএনপির নেতৃত্বে থাকার সুযোগ নেই। কারন খন্দকার আবু জাফর ও আজহারুল ইসলাম মান্নান জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি পদে রয়েছেন। মোশারফ হোসেন জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে রয়েছেন। আজহারুল ইসলাম মান্নান কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য পদেও রয়েছেন। যদিও সোনারগাঁয়ের বিএনপি নেতাকর্মীদের পাশে কেবল মান্নানকেই বেশি সক্রিয় দেখা যায়।

খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মামুন মাহামুদের সঙ্গে দলের বিভিন্ন কর্মকান্ডে খন্দকার আবু জাফর ও মোশারফ হোসেনকে দেখা যাচ্ছে। এমনকি কেন্দ্রীয় নেতা রুহুল কবির রিজভীকে দেখতে গেলেও সেখানেও জাফর ও মোশারফ হোসেন ছিলেন। আরও জানাগেল, মোশারফ হোসেনের সঙ্গে মামুন মাহামুদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক।

খন্দকার আবু জাফর গত জাতীয় নির্বাচনেও দলের প্রাথমিক মনোনয়ন পেয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেননি। তিনি মান্নানের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছিলেন, যে ব্যক্তি নমিনেশন শব্দ উচ্চারণ করতে জানেনা সেই ব্যক্তির ড্যামী প্রার্থী হয়ে মনোনয়ন দাখিলের কোন প্রশ্নই ওঠেনা। মাঝখানে মোশারফ হোসেন মান্নানের সঙ্গে রাজনীতিতে থাকলেও মুলত তিনি সাবেক প্রতিমন্ত্রী রেজাউল করিমের ঘনিষ্ঠজন। এবার সোনারগাঁয়ে বিএনপির নেতৃত্ব থেকে মান্নানকে সরাতে একজোট হয়েছেন খন্দকার আবু জাফর ও মোশারফ হোসেন। মুলত যেসব নেতারা মান্নানের নেতৃত্ব মানতে নারাজ তারা ভেতরে ভেতরে জাফর ও মোশারফকে সমর্থন করছেন। ইতিমধ্যে সোনারগাঁ পৌর বিএনপির কমিটি পুরোপুরি মান্নানের অনুগতরা ঠাঁই পায়নি। যেখানে বেশির ভাগ নেতা জাফরের অনুগামী।

ছবি- কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতা রিজভীকে দেখতে গেলেন মামুন মাহামুদ, সঙ্গে মোশারফ হোসেনও।

খোঁজ নিয়ে আরো জানাগেছে, আজহারুল ইসলাম মান্নান ব্যবসায়িকভাবে বেশ বেকায়দায় রয়েছেন। আওয়ামীলীগ সরকার আমলে মামলার শিকার নেতাকর্মীদের আইনি লড়াইয়ের খরচাদি সহ নেতাকর্মীদের বিপদে আপদে ছিলেন আজহারুল ইসলাম মান্নান। বর্তমানে অর্থনৈতিকভাবেও বেকায়দায় রয়েছেন মান্নান। আগের মত নেতাকর্মীদের দেখভাল করতেও পারছেন না তিনি। ফলে অনেক নেতারাই তার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। মান্নানের বলয়ে থেকে রাজনীতি করে আসা বেশকজন নেতা এখন জাফর ও মোশারফের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তুলেছেন। তবে মান্নানকে সভাপতি ও কাচপুরের সেলিম হককে সেক্রেটারি করে সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপির কমিটি প্রত্যাশা করেন মান্নান অনুগামীরা। যদিও সেলিম হকের বেশকজন নেতাকর্মী নিয়ে সেলিম হকের আপন ভাই জাতীয় পার্টিতে যোগদান করেছেন। যে কারনে সেলিম হকের প্রতি নেতাকর্মীদের আস্থা নেই।

ছবি- পৌর বিএনপির কমিটির কাগজ তুলে দেয়ার সময়ও মামুন মাহামুদের সঙ্গে মোশারফ হোসেন।

তবে নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন-খন্দকার আবু জাফর ও মোশারফ হোসেনের নেতৃত্বে সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপির কমিটি গঠনের চেষ্টায় আছেন তারা। তারা চেষ্টা করছেন সরাসরি মুল কমিটি নিয়ে আসতে। কিন্তু জেলা বিএনপির শীর্ষ নেতারা আহ্বায়ক কমিটি গঠনের মাধ্যমে খন্দকার আবু জাফর ও মোশারফ হোসেনকে নেতৃত্বে আসতে পরিকল্পনা তৈরি করেছেন। মান্নানের সঙ্গে জেলা বিএনপির শীর্ষ দুই নেতার সঙ্গে আগের মত সখ্যতা নেই। ফলে এই সুযোগটি কাজে লাগাতে চাচ্ছেন জাফর ও মোশারফ হোসেন। এখন দেখার বিষয় শেষ পর্যন্ত জেলা বিএনপি কি সিদ্ধান্তে উপনীত হয়।