কালাম কামালের কালো থাবায় তৈমূর বলয়!

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

এক সময় নারায়ণগঞ্জ শহরে দাপটের সঙ্গে রাজনীতি করেছেন অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার। এখানকার সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট আবুল কালাম কোনভাবেই পেরে ওঠতে পাড়ছিলেন না তৈমূর আলমের সঙ্গে। সদর-বন্দর আসনে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়ে মাঠেও নেমেছিলেন তৈমূর আলম। বেশ কোণঠাসাই ছিলেন কালাম। বর্তমান পরিস্থিতিতে উপরে উপরে তৈমূর আলমের সঙ্গে কালামের সোহার্দপূর্ণ্য সম্পর্ক দেখা গেলেও তৈমূর বলয় এখন বিলুপ্তির পথে।

মুলত মহানগর বিএনপির সভাপতি আবুল কালাম ও সেক্রেটারি এটিএম কামালের হাতেই ধ্বংসের দিকে ছিন্নবিন্ন হয়ে যাচ্ছে তৈমূর আলমের বিশাল বলয়। নেতাকর্মীরা বলছেন- কালাম কামালের কালো থাবায় পড়েছে তৈমূর বলয়। অনেকেই আবার তৈমূর আলমের কাধে হাত রেখে কালামের তরীতে পা দিয়েছেন। ফলে শহর কেন্দ্রীক রাজনীতিতে তৈমূর আলমের সঙ্গে রাজপথে পোড় খাওয়া নেতাদের কেউ কেউ রাজনীতি থেকে পিছিয়ে যাচ্ছেন আবার কেউ কেউ কালামের বলয়ে ভীড়ছেন।

নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন, ২০১২সালে সদর-বন্দর আসন থেকে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়ে প্রায় প্রতিদিনই বিভিন্ন এলাকায় কর্মসূচি পালন করেন তৈমূর আলম। একইভাবে তৈমূর আলম খন্দকার রূপগঞ্জেও যাতায়াত শুরু করেন। তৈমূর আলমের অবস্থান নিয়ে দোটানায় পড়ে যান নেতাকর্মীরা। জেলা বিএনপির সভাপতি পদ হারানোর পর জেলা ও মহানগর বিএনপির কমিটিতে স্থান পায়নি তৈমূর আলম অনুসারী নেতারা, মলত যারা দীর্ঘদিন রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম ঘাম জড়িয়েছিলেন। দুু’চারজনকে কমিটিতে রাখা হলেও কারোই যোগ্যতম পদে রাখা হয়নি। এবার মহানগর বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটিতেও একই অবস্থা হয়েছে তৈমূর বলয়ের। যারা তৈমূরের অস্তিত্বে অস্তিত্ব তারা কালাম ও কামালের সঙ্গে ম্যানেজ হয়ে পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে পদ ভাগিয়ে নিয়েছেন। অনেকেই আবার পদ পদবীর লোভে রাতের আধারে কালাম কামালের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন। মুলত তৈমূরকে ঘুমের মধ্যে রেখে তৈমূর বলয় থেকে ছিটকে পড়ছেন তার অনুগামীরা।

গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জের দুটি আসন থেকে প্রাথমিকভাবে মনোনয়ন পান চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তৈমূর আলম খন্দকার ও তার ভাই মহানগর যুবদলের সভাপতি মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ। সদর আসনে খোরশেদ ও রূপগঞ্জ আসনে মনোনয়ন পান তৈমূর। কিন্তু তৈমূর আলমের রাজপথের নেতাকর্মীদের সংখ্যা বেশি শহর কেন্দ্রীক। তৈমূর আলমের পদ চলে যাওয়ার পর তার নেতাকর্মীরা ধরে নিয়েছেন তাদের হাল ধরছেন খোরশেদ। কিন্তু খোরশেদ যুবদলের রাজনীতি ছাড়তে নারাজ। তাকে মহানগর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক করা হলেও তিনি সেই পদে থাকেননি। ফলে অভিভাবকহীন হয়ে পড়ে তৈমূর আলমের লোকজন। তৈমূর আলমের বলয়ের দিশেহারা নেতাকর্মীরা হয়ে পড়েন আরও ছন্নছাড়া। কেউ কেউ তৈমূর আলমের নাম জপে টিকে রইলেও অনেকেই তার বলয় ছেড়েছেন। আবার অনেকেই দু’দিকেই পা রেখেছেন। তারা খোরশেদের উপরেও আস্থা রাখতে পারছেন না। কারন খোরশেদ এখনও মুলদলে ফিরেননি।

তৈমূর আলমের গোছানো মাঠটি নিজেও ধরে রাখতে পারছেন না। আবার খোরশেদও তাদের দায়িত্ব নিতে পারছেন না। যার ফলে ধীরে ধীরে খন্দকার পরিবারের আস্থাভাজন নেতারা ছিটকে পড়ছেন। এক সময় যারা খন্দকার পরিবারের মাধ্যমেই উত্থান তারাও এখন বলয় ছেড়েছেন। আবার অনেকেই বলছেন, মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানকে ঠেকাতে গিয়ে তৈমূর আলম হাত মিলিয়েছেন কালামের সঙ্গে। কেউ কেউ বলছেন- নিজের বলয়ের নেতাকর্মীদের কর্জ দিয়েছেন কালামের কাছে। অনেকটা শিয়ালের কাছে মুরগী বর্গা দেয়ার মত। কিন্তু সেই সুযোগে কালাম এখন তৈমূর বলয়কে গ্রীপ করে নিচ্ছেন। ভবিষৎে খন্দকার পরিবারের বিশ^স্থদের খোরশেদ ফিরে পাবেন কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। অভিজ্ঞ রাজনীতিক নেতাদের ভাষ্য- তৈমূর আলম আবারো ভুল করলেন!