সুমনকে সভাপতি পদে চান সেক্রেটারি প্রত্যাশিরা, অনুর কমিটি জমা

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার উপজেলা বিএনপির কমিটি গঠন নিয়ে নেতাকর্মীদের মাঝে জোড় আলোচনা শুরু হয়েছে। যেখানে সভাপতি পদে মাহমুদুর রহমান সুমনকেই দেখতে চান অধিকাংশ সাধারণ সম্পাদক পদ প্রত্যাশি নেতারা।

তবে সুমনের আগেই আড়াইহাজার উপজেলা বিএনপির একটি খসড়া কমিটি জেলা বিএনপির কাছে জমা দিয়েছেন বিএনপি নেতা আনোয়ার হোসেন অনু। অনু নিজেকে সভাপতি পদে রেখে কমিটি জমা দিলেও তিনি কৌশলে সুমনের পক্ষে মত দিয়ে বলেছেন, আমাকে সভাপতি পদে দায়িত্ব না দিলে দল যদি সুমন কিংবা অন্য কাউকে যোগ্য মনে করে দায়িত্ব দেয় তাহলে আমি দলের সিদ্ধান্ত মেনে নিব।

এ বিষয়ে বিআরডিপির সাবেক চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা আনোয়ার হোসেন অনু জানান, তিনি নিজেকে সভাপতি ও অ্যাডভোকেট আজিজুল হক হান্টুকে সেক্রেটারি করে মোট ১০১ সদস্য বিশিষ্ট একটি প্রস্তাবিত কমিটি জেলা বিএনপির কাছে জমা দিয়েছেন।

তবে তার এই কমিটিতে নেই আড়াইহাজার বিএনপির শীর্ষ নেতারা। আজিজুল হক হান্টু আড়াইহাজারের সক্রিয় রাজনীতিতে নেই অনেক আগে থেকেই।

অনু এ বিষয়ে বলেন, বেশ কয়েকদিন হয়েছে আমি নিজে সভাপতি প্রার্থী ও অ্যাডভোকেট আজিজুল হক হান্টুকে সেক্রেটারি করে ১০১ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি নারায়ণগঞ্জ জেলা সাধারণ সম্পাদক মামুন মাহমুদের কাছে জমা দিয়েছি। তবে দলের স্বার্থে যদি সুমন বা অন্য কোন যোগ্য লোককে সভাপতি করা হয় তাহলে আমি সহ সকল নেতাকর্মী তার পাশে থাকবো।

অপর সভাপতি প্রত্যাশি মাহমুদুর রহমান সুমন প্রসঙ্গে বিএনপি নেতা অনু বলেন, প্রয়াত বিএনপি নেতা এএম বদরুজ্জামান খান খসরু একজন নি:সন্দেহে বড় মাপের নেতা ছিলেন। তিনি আতাউর রহমান খান আঙ্গুরকে এমপি বানিয়েছেন। প্রয়াত খসরুর সন্তান মাহমুদুর রহমান সুমন একজন ক্লিন ইমেজধারী লোক। দল তাকে সভাপতি করা হলে আমরা বিরোধীতা করব না।

এদিকে আনোয়ার হোসেন অনুর কমিটি জমা দেয়ার বিষয়টি সত্যতা নিশ্চিত করে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মামুন মাহামুদ সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আমরা প্রতিটি থানা/উপজেলায় কমিটি গঠন প্রক্রিয়া শুরু করেছি। এখন যে যার মত করে কমিটি তৈরি করে আমাদের কাছে দিচ্ছে। আমরা সেগুলো রাখছি। যাচাই বাছাই হবে। তারপর কমিটি গঠন করা হবে। আড়াইহাজার থেকেও জমা দিয়েছে আমরা রেখেছি। তবে বিষয়টি অফিসিয়ালি নয়। সবাই যে যার মত করে কেউ নাম জমা দিচ্ছে, কেউবা কমিটি জমা দিচ্ছে। প্রতিটি এলাকা থেকে এসব নাম আমরা পাচ্ছি। আমরা যোগ্য ব্যক্তিদের হাতেই নেতৃত্ব তুলে দিব সেই লক্ষ্যেই আমরা কাজ করছি।

অন্যদিকে আড়াইহাজার বিএনপির সাধারণ সম্পাদক পদ প্রত্যাশি বেশকজন নেতা সভাপতি পদে মাহমুদুর রহমান সুমনকেই যোগ্য মনে করছেন। তাদের একজন আড়াইহাজার উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম ফকির বলেন, বিএনপির অতীত নেতৃত্বের মত নেতৃত্ব আসলে এই উপজেলায় বিএনপি ঘুরে দাঁড়াতে পারবে। তাছাড়া অতীতে প্রয়াত খসরু আড়াইহাজার বিএনপির অভিভাবক হিসেবে দীর্ঘদিন শক্ত হাতে নেতৃত্ব দিয়েছেন। আর তারই ছেলে মাহমুদুর রহমান সুমন। আমরা চাই আড়াইহাজার বিএনপির দায়িত্ব সুমনকে দেয়া হোক। নতুবা এখানে বিএনপি নেতাকর্মীরা অন্য কাউকে দায়িত্ব দিলে মেনে নেবে না।

অপর সাধারণ সম্পাদক প্রত্যাশি মীরজুল হাসান নয়ন মোল্লা বলেন, আড়াইহাজার বিএনপির বর্তমান ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহমুদুর রহমান সুমন। তিনি একজন ক্লিনম্যান হিসেবে পরিচিত। তার দীর্ঘ রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে নেই তার কোন প্রকার বদনাম। তাছাড়া তিনি আড়াইহাজারে শীর্ষ নেতা থেকে শুরু করে তৃণমুল নেতাকর্মীদের কাছেও একজন প্রিয় ব্যক্তিত্ব। তাই আমি মনে করি তাকে সভাপতি দিলে দল সাংগঠনিকভাবে এগিয়ে যাবে। তার প্রতি আমার পূর্ণ সমর্থন আছে।

সাধারণ সম্পাদক প্রত্যাশি নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি সালাউদ্দিন চৌধুরী সালামত বলেন, মাহমুদুর রহমান সুমন একজন শিক্ষিত, সাহসী ও সাংগঠনিক ব্যক্তি। তিনি তৃণমুল নেতাকর্মীদের সর্বদা পাশে থাকেন। বিপদে আপদে আমরা তাকেই পাই। তার হাতে বিএনপির দায়িত্ব দেয়াটা এখন সময়ের দাবী।

বিএনপির এসব শীর্ষ নেতারা ছাড়াও বিএনপির অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা মাহমুদুর রহমান সুমনকে যোগ্য দাবি করে তাকেই সভাপতি পদে দেখতে চান বলে মনে করেন। যেখানে নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি জহিরুল ইসলাম বলেন, উপজেলা বিএনপির সভাপতি বদরুজ্জামান খসরুর মৃত্যুর পর কিছু দুষ্ট লোক আড়াইহাজার বিএনপিকে বিভক্ত করতে চেষ্টা করে। বিগত আন্দোলন সংগ্রামে তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ গা বাঁচিয়ে চলেছেন। উপজেলায় পর্যায়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন মাহমুদুর রহমান সুমন। অন্যরা দলের দুর্দিনে চোরা বালির ওপর নেতাকর্মীদের ফেলে চলে গেছেন। সেই সময় সুমন নেতাকর্মীদের পাশে ছিলেন। তিনি দলের জন্য অনেক ত্যাগ শিকার করেছেন। তাকে দলের দায়িত্ব দেয়া হলে নেতাকর্মীরা উৎসাহের মধ্যে দিয়ে দলের জন্য কাজ করবেন। আমরা চাই তাকে দলের সভাপতি করা হোক।

সুমনের বিষয়ে জেলা যুবদলের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক জাকির হোসেন মেম্বার বলেন, আড়াইহাজার বিএনপিকে এক সূতায় বাঁধতে মাহমুদুর রহমান সুমনের কোনো বিকল্প আলোচনায় মাহমুদুর রহমান সুমন। তাকেই আমরা নেতাকর্মীরা যোগ্য মনে করি।

আড়াইহাজার ছাত্রদল নেতা মোহাম্মদ ফারুক বলেন, আড়াইহাজার বিএনপিকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করতে সক্ষম এমন ব্যক্তি যিনি সকল নেতা কর্মীদের একত্রিত করে দলীয় কার্যক্রমকে বেগবান করতে পারেন। এমন কাউকে দলের সভাপতি নির্বাচিত করা হোক। আর এদিক থেকে বিবেচনা করলে মাহমুদুর রহমান সুমনের নামই আসবে সবার আগে। কারন তিনি দলের দু:সময়ে দলকে সাংগঠনিকভাবে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।

ছাত্রদলের এই নেতা আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, জেলার শীর্ষ নেতৃবৃন্দ অবশ্যই সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিবেন। ভুল সিদ্ধান্ত নিলে অবশ্যই দলকে এর ক্ষতি ভোগ করতে হবে। তাই আমরা সুমনকেই সভাপতি পদে দেখতে চাই।