না’গঞ্জের ৫টি আসনে ব্যাপক আলোচনায় বিএনপির ১০ নেতা

সান নারায়ণগঞ্জ

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ জেলার ৫টি আসনের মধ্যেই আসন বিদ্যমান থাকছে। নতুন করে কোনো আসন বাড়ানো হচ্ছে না। ফলে আগামী নির্বাচনে ৫টি আসন থেকেই বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকে প্রায় অর্ধশতাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশি থাকলেও ৫টি আসনে ১০জন নেতার মধ্যে হবে ধানের শীষ প্রতীক পাওয়ার চূড়ান্ত লড়াই, যারা আলোচনার শীর্ষে আছেন। গুরুত্ব পেতে পারে গত ২০১৮ সালের নির্বাচনে প্রাথমিকভাবে পাওয়া মনোনিত বিএনপি নেতারাও।

স্থানীয়রা মনে করছেন- নারায়ণগঞ্জ-১(রূপগঞ্জ) আসনে ধানের শীষ প্রতীকে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান মনির ও জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান দিপু ভুঁইয়ার মাঝে তুমুল লড়াই হবে। যদিও সেই লড়াইয়ের উত্তাপ বর্তমানে রাজনীতির মাঝেও ছড়িয়ে গেছে। তবে এই লড়াইয়ে কাজী মনিরকেই এগিয়ে রাখছেন নেতাকর্মীরা। কারন গত ২০০৯ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে এই আসন থেকে কাজী মনিরুজ্জামান ধানের শীষ প্রতীকে মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলেন। যদিও ২০১৮ সালে দিপু ভুঁইয়া দলের প্রাথমিকভাবে মনোনয়ন পেয়েছিলেন।

নারায়ণগঞ্জ-২(আড়াইহাজার) আসনে বিএনপির কেন্দ্রীয় ঢাকা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ ও কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক মাহামুদুর রহমান সুমনের মধ্যেই হবে মনোনয়ন লড়াই। যদিও এ আসনে সাবেক এমপি এম আতাউর রহমান আঙ্গুর মনোনয়ন চাইবেন। গত ২০১৮ সালের নির্বাচনে এ আসনে দলের মনোনয়ন পান নজরুল ইসলাম আজাদ। যদিও সুমন ও আঙ্গুর দলের প্রাথমিকভাবে মনোনয়ন পেয়েছিলেন। স্থানীয় নেতাকর্মীরা মনোনয়নের ক্ষেত্রে আজাদকেই এগিয়ে রাখছেন।

নারায়ণগঞ্জ-৩(সোনারগাঁ) আসনে মনোনয়ন লড়াইয়ে এগিয়ে আছেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নান। যদিও সামনের নির্বাচনে মান্নানের সামনে একমাত্র কিছুটা বাধার কারন হতে পারেন যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক এসএম ওয়ালিউর রহমান আপেল। যদিও এখানে সাবেক প্রতিমন্ত্রী রেজাউল করিম নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তাকে নিয়ে নেতাকর্মীদের কোনো আগ্রহ দেখা যাচ্ছেনা। রেজাউল করিমকে যারা নির্বাচনের মাঠে নামিয়েছিলেন তারা এখন নারায়ণগঞ্জ-৪(ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনের সাবেক এমপি মুহাম্মদ ‍গিয়াসউদ্দীনকে নিয়ে মাঠে নামার চেষ্টা করছেন। কিন্তু সোনারগাঁয়ের নেতাকর্মীরা গিয়াসকে নিয়েও আগ্রহ দেখাচ্ছেনা। গত ২০১৮ সালের নির্বাচনে এখানে প্রাথমিকভাবে মনোনয়ন পান উপজেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু জাফর। তবে চূড়ান্তভাবে দলের মনোনয়ন পান মান্নান। সোনারগাঁয়ে একমাত্র মান্নানের অবস্থান সবচেয়ে শক্তিশালী।

নারায়ণগঞ্জ-৪(ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) মনোনয়ন লড়াইয়ে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য শিল্পপতি মুহাম্মদ শাহআলমকে এগিয়ে রাখছেন নেতাকর্মীরা। ২০১৮ সালে এই আসনে প্রাথমিকভাবে মনোনয়ন পান শাহআলম ও জেলা বিএনপির বর্তমান আহ্বায়ক মামুন মাহামুদ। এ আসনে ধানের শীষ প্রতীকে মুল লড়াইটাও হবে এই দুই নেতার মাঝে। এ আসনের সাবেক এমপি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দীনের জেলা বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণার পর তিনি মনোনয়নের যোজন যোজন দুরে চলে গেছেন বলে মনে করছেন নেতাকর্মীরা। যে কারনে সোনারগাঁয়ে তিনি যাতায়াত বাড়ানোর চেষ্টা করছেন। ওই নির্বাচনে জোটগত কারনে জমিয়েত উলামায়ে ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব মুফতি মনির হোসাইন কাসেমী বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকে চূড়ান্ত প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেন।

নারায়ণগঞ্জ-৫(সদর-বন্দর) আসনে আগামী জাতীয় নির্বাচনে মনোনয়ন লড়াইয়ে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে থাকছেন মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি ও নাসিকের ৪বারের নির্বাচিত কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদকে। গত ২০১৮ সালের নির্বাচনে খোরশেদ ও সাবেক এমপি আবুল কালাম এই আসনে বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকে প্রাথমিকভাবে মনোনয়ন পেয়েছিলেন। জোটগত কারনে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে নাগরিক ঐক্যের উপদেষ্টা প্রয়াত নেতা এসএম আকরামকে ধানের শীষ প্রতীকে মনোনিত করা হয় চূড়ান্তভাবে। আবুল কালাম বয়সের কারনে রাজনীতিতে অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছেন। ব্যবসায়ী মাসুদুজ্জামান প্রার্থী হওয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করলেও তিনি ধানের শীষ প্রতীকে মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা কম। ফলে এখানে খোরশেদকেই এগিয়ে রাখছেন স্থানীয় নেতাকর্মীরা।