সান নারায়ণগঞ্জ
নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁয়ে বিএনপির রাজনীতিতে নতুন মেরুকরণের চেষ্টায় নেমেছেন বিএনপির সাবেক সংস্কারপন্থী নেতা রেজাউল করিমের অনুগামীরা। রেজাউল করিম অনুগামীরা এতটাই হতাশ যে, তারা নিজেদের রাজনীতিতে নিজেরা স্থির থাকতে পারছেন না। কখনো দূর্বল কড়ই গাছের এ ঢালে, কখনো ওই ঢালে বসে পাখা মেলছেন। কিন্তু আজহারুল ইসলাম মান্নানকে ঠেকানোর মত নেতা পাচ্ছেন না। বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপির সভাপতি মান্নানের বিগত ১৭ বছর রাজপথের যে তার ভুমিকা, হামলা মামলা জেল জুলুম, তার দ্বারে কাছেও কেউ নেই।
এদিকে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর বার্ধক্যজনিত রোগে আক্রান্ত সাবেক প্রতিমন্ত্রী রেজাউল করিমকে নিয়ে রাজনীতির মাঠে নামার চেষ্টা করেছেন মান্নানবিরোধীরা। সেই রেজাউল করিমকে নিয়ে যখন কুলিয়ে ওঠতে পারছেনা তখন নতুন করে ফন্দি এটেছেন মান্নানবিরোধীরা। এবার সোনারগাঁয়ের বাহিরের নেতাকে হায়ার করে এনে মান্নানকে ঠেকানোর চেষ্টায় নামার পরিকল্পনা শুরু করেছেন তারা। যদিও এই চেষ্টা তাদের নতুন কিছু নয়। তারা ২০১৪ সালের নির্বাচনের পূর্বেও এই নাটক মঞ্চস্থ করেছিলেন সোনারগাঁয়ে।
২৪ মে শনিবার সোনারগাঁও পৌরসভার পানামনগরী এলাকায় উপজেলা বিএনপির অব্যাহতিপ্রাপ্ত সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শাহআলম মুকুলের সভাপতিত্বে একটি মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয় বিএনপির ব্যানারে। যেখানে প্রধান অতিথি ছিলেন সদ্য বিলুপ্ত জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও বিএনপির সাবেক এমপি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দীন। ওই সভায় গিয়াসউদ্দীনকে সোনারগাঁও থেকে নির্বাচন করার ভুয়া ধুয়া তুলেছেন আনাড়ি ধাচের কজন নেতা। যেনো মামার বাড়ির কলা, চাইলাম পাইলাম খাইলাম, নমিনেশন চাইলেই পাওয়া যাবে এমনটা নয়। যদিও ওই সভায় সোনারগাঁয়ের নেতা বলতে একমাত্র শাহআলম মুকুল ও সোনারগাঁও উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক শহিদুর রহমান স্বপন, যুগ্ম আহ্বায়ক আশরাফ প্রধান ছাড়া উপস্থিত বাকিরা ওয়ার্ডের কর্মীও নন। সোনারগাঁয়ে গিয়াসকে নিয়ে নির্বাচনের ধুয়া তুলে মান্নানকে ঠেকানোর বৃথা চেষ্টায় নেমেছেন মান্নানবিরোধী গুটিকয়েকজন নেতা।
ঘটনা সুত্রে, ২০০৯ সালের নির্বাচনে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা এলাকা ও সোনারগাঁও উপজেলা এলাকা নিয়ে গঠিত হয় নারায়ণগঞ্জ-৩ সংসদীয় আসন। ওই নির্বাচনে রেজাউল করিমকে পরাজিত করে এমপি নির্বাচিত হোন আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত। গিয়াসউদ্দীন সিদ্ধিরগঞ্জের বাসিন্দা হওয়ার সুবাধে সিদ্ধিরগঞ্জ ও সোনারগাঁও আসনের এমপি হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। ওই সময় উপজেলা বিএনপির তৎকালীন সভাপতি খন্দকার আবু জাফর, শাহআলম মুকুল ও শহিদুর রহমান স্বপন গংরা ২০১৪ সালের নির্বাচনের পূর্বে গিয়াসউদ্দীনকে নিয়ে সোনারগাঁয়ে শোডাউন করেন। সেই সময় থেকে কিছু উচ্ছিষ্টভোগী ব্যক্তি সোনারগাঁয়ে গিয়াসের কর্মী বনে যান।
যদিও পরবর্তীতে ২০১৪ সালে বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি এবং আবারো আসন পূণবন্টন করে শুধুমাত্র সোনারগাঁও উপজেলা নিয়ে নারায়ণগঞ্জ-৩ আসন গঠিত হলে সোনারগাঁও থেকে গিয়াস মুখ ফিরিয়ে নিয়ে ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জ নিয়ে গঠিত নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের দিকে যাতায়াত শুরু করেন। কিন্তু সোনারগাঁয়ে যেসব ব্যক্তিরা গিয়াসের চাটুকারিতায় ছিলেন তারা হালে পানি পাননি। সেই থেকে সোনারগাঁয়ে গিয়াসের দুচারজন কর্মী হতাশায় ভুগছিলেন। রাজনীতিতে কিংবা আন্দোলন সংগ্রামেও তেমন সরব ছিলেন না তারা। কিন্তু গত ৫ আগস্টের পর থেকে তারা অসুস্থ রেজাউল করিমকে নিয়ে মাঠে নামেন।
নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে যখন গিয়াসের মনোনয়ন পাওয়ার সকল রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে, ঠিক সেই সময় গিয়াসকে নিয়ে সোনারগাঁয়ের গুটিকয়েকজন দিবা স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন। গিয়াসউদ্দীন সোনারগাঁয়ে যাতায়াত বাড়ালেও সোনারগাঁও এলাকাটি সিদ্ধিরগঞ্জের সঙ্গে থাকছে না। ৫ আগস্টের পর শাহআলম মুকুল ও স্বপনরা রেজাউল করিমকে নিয়ে মাঠে নেমেছিলেন, কিন্তু এখন আবার মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দীনকে নিয়ে নতুন করে স্বপ্ন দেখছেন এবং মান্নানকে ঠেকানোর দিবা স্বপ্ন দেখছেন।